কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আপনারা কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। কিডনি আমাদের শরীরে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। যেটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম সম্পাদন করে থাকে। আজকে আপনাদের জানাবো কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে এ বিষয়ে।

আপনি যদি আপনার কিডনির সমস্যা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে সে বিষয়ে জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্রঃ কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা

কিডনি কি | কিডনির কাজ কি?

কিডনি মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যা দেহের রেচন তন্ত্রের প্রধান অংশ। কিডনির প্রধান কাজ হল রক্ত ছেঁকে বজ্র পদার্থ যেমন ইউরিয়া আলাদা করণ ও মূত্র উৎপাদন করা। মানবদেহের সমুদয় রক্ত দিনে প্রায় ৪০ বার কিডনির মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া দেহের পানি ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ ইলেক্ট্রোলাইট যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার 9 টি উপায়

কিডনি হচ্ছে মানব দেহের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মানবদেহে দুইটি কিডনি থাকে। যে গুলো নষ্ট হয়ে গেলে মানুষ অচল হয়ে পড়ে। আজকের এই পোস্টে আমরা কিডনির সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে সেগুলো এই পোস্টে জানাবো। তাই আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে তা জানার জন্য শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।

কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা

কিডনি হল দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কিডনির রোগ খুব আস্তে আস্তে শরীরের সমস্যা করে থাকে। কিডনির খুব জটিল সমস্যা না হলে সাধারণত লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় না। তাই কিডনি ভালো রাখতে কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো আগে থেকে জেনে রাখা ভালো। তাহলে চলুন আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে তা জেনে নিন।

প্রস্রাবে পরিবর্তনঃ প্রস্রাবের পরিবর্তন হওয়া এটি কিডনি সমস্যা এর সব থেকে বড় লক্ষণ। আপনার কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব বেশি হয় অথবা কম হবে। বিশেষ করে রাতে এ সমস্যাটি বেশি দেখা দেয়। পেশাবের চাপ আসবে কিন্তু পেশাব হবে না।

প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হওয়াঃ কিডনির সমস্যার আরেকটি সবথেকে বড় লক্ষণ হলো প্রসাবের সাথে রক্ত বের হওয়া। যদি এমনটা হয় তাহলে অবশ্যই দেরি না করে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

প্রস্রাবের সময় ব্যথা হওয়াঃ আপনার কিডনির সমস্যা হয়েছে বুঝবেন যখন প্রস্রাব করবেন তখন যদি ব্যথা করে তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে।

দেহ ফুলে যাওয়াঃ কিডনি শরীরের বর্জ্য পদার্থ গুলো বাইরে বের করে দেয়। যদি কিডনি রোগ হয় তাহলে এ বর্জ্য পদার্থ গুলো বাইরে বের হতে পারে না তাই শরীর ফোলা ফোলা ভাব হয়। এমনটা হলে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ শিশুদের জ্বর কমানোর কার্যকরী উপায়

সবসময় শীত লাগাঃ আপনার যদি কিডনি সমস্যা হয় তাহলে অনেক গরমেও আপনার শীত অনুভূত হবে। অনেক সময় জ্বর আসতে পারে।

কোনো কাজে মনোযোগ দিতে না পারাঃ কিডনির সমস্যা হলে লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়ার ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। এতে করে যেকোনো কাজে বা পড়াশোনায় মনোযোগ আসে না। এমনটা হলে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে।

বমি বমি ভাব হওয়াঃ রক্তে বর্জ্য পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনির কোন সমস্যা হলে বমি বমি ভাব এ সমস্যাটি দেখা দেয়। তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে।

ত্বকে র‍্যাশ হওয়াঃ কিডনি শরীরের ভেতরকার বর্জ্য পদার্থ গুলো বের করে দেয় কিন্তু কোন সমস্যা হলে তা রক্তে বর্জ্য পদার্থ গুলো পরিমাণ বেড়ে যায়। এর ফলে ত্বকের চুলকানি এবং র‍্যাশ তৈরি হয়।

পেটে ব্যথা হওয়াঃ আপনার যদি কিডনিতে সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে শরীরে ব্যথা হতে পারে। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যথা হতে পারে এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে বুঝবেন আপনার কিডনিতে সমস্যা হয়েছে।

কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি ভালো আছে

কিডনির কোন সমস্যা হলো কিনা এটি বুঝার আগাম কোন বড় ধরনের লক্ষণ থাকেনা। তাই কিডনি রোগ ধরতে অনেক সময় লেগে যায় এতে করে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যদি আপনার মনে হয় আপনার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে তাহলে আপনি দুইটি পরীক্ষা করে কিডনি ভালো আছে কিনা বুঝতে পারবেন। তাহলে চলুন আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি ভালো আছে সেই গুলো জেনে নেই।

মূত্র পরীক্ষাঃ

শরীরের জন্য প্রোটিন খুবই উপকারী এবং রক্তে প্রোটিন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে প্রোটিন কখনোই মূত্রে থাকার কথা না। যদি মূত্র পরীক্ষার মাধ্যমে প্রোটিন পাওয়া যায় তাহলে বুঝবেন কিডনি ঠিকঠাকমতো রক্ত ছাঁকতে পারছে না। তাই ইউরিন টেস্ট প্রোটিন পজিটিভ হলে। যদি তিন মাস বা তার অধিক সময় ধরে পরীক্ষার রেজাল্ট পজিটিভ আসে তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা রয়েছে আর যদি নেগেটিভ আসে তাহলে কিডনি ভালো আছে।

আরো পড়ুনঃ দ্রুত লম্বা হওয়ার উপায়

জিএফআর কাউন্ট করতে রক্ত পরীক্ষাঃ

কিডনি যদি খারাপ হয় তা রক্ত থেকে ক্রিয়েটিনিন অর্থাৎ বর্জ্য পদার্থ গুলো ঠিকমতো করতে পারেনা। ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা হল প্রথম ধাপ এরপর গ্লোমেরুলার ফিলট্রেশন রেট দেখতে হবে। এ রেজাল্টগুলো ডাক্তার দেখলে বুঝা যাবে আপনার কিডনি ভালো আছে কিনা। যদি আপনার মনে হয় আপনার কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাহলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নেন।

শেষ কথাঃ কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা

এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি আপনারা কিভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে। আবার কিডনি ভালো আছে এটা বুঝার উপায় আলোচনা করেছি। তো আপনি কিডনি ভালো রাখতে নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করুন। এতে আপনার কোন সমস্যা থাকলে সেগুলো বড় ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই বুঝতে পারবেন।

কিডনি আমাদের শরীরে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই তার কোন সমস্যাকে অবহেলা করে দেখা উচিত নয়। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url