বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। সাধারণত এক দুই দিন পর মলত্যাগের বেগ হওয়া এবং শুষ্ক ও কঠিন মল নিষ্কাশন হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য। শিশুদের ক্ষেত্রে আরো বেশি ভয়ঙ্কর হয় তাই আজকে আমরা বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় সম্পর্কে জানব।

আপনি যদি বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন দেরি না করে বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

আপনারা যারা আমাদের পোস্টটি পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য গুগলে সার্চ করে আমাদের পোস্টটি ওপেন করেছেন। তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের এই পোস্টে আমরা বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আপনার বাচ্চার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে তাহলে এগুলো উপায় অবলম্বন করবেন। তাহলে চলুন বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় সম্পর্কে জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ কুরবানী করা কি - কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব

  • আশ জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে বেশি বেশি করে। আপনার শিশুর যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে তাহলে বাচ্চার খাদ্য তালিকায় আঁশ জাতীয় খাবার রাখুন। আঁশ হল খাবারের সেই অংশ যা পরিপাক হয় না এবং খাদ্য গ্রহণের পর অবশেষ হিসেবে জমা হয়ে মল তৈরি করে। এতে করে মল নরম হয় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয়।
  • বিভিন্ন রকম শাক সবজি খাওয়াতে হবেঃ শাক, কচু শাক, মিষ্টি আলুর শাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, লাউ ও মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে এগুলো খাওয়াতে হবে।
  • খাবারের হজমে সহায়তা করে পানি। তাই আপনার বাচ্চাকে বেশি বেশি পানি খাওয়াবেন। বেশি পানি খেলে মলাশয় পরিষ্কার হয় এবং শরীর নতুন করে খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে সহজেই। শিশু যদি পানি খেতে না চায় তাহলে শরবত বাতাজা যে কোনো ফলের রস করে খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চাদের মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বাচ্চাকে প্রতিদিন মলত্যাগের জন্য উৎসাহিত করতে হবে। বাচ্চা যেভাবে ইচ্ছা তাকে মলত্যাগের অভ্যাস করাতে হবে।
  • বাচ্চাদের নির্দিষ্ট বাথরুম ব্যবহার করতে দিতে হবে। অনেক বাচ্চা আছে যারা তাদের পছন্দের বাথরুম ছাড়া অন্য কোথাও পায়খানা করতে চাইনা। তাই তাদের পছন্দের বাথরুমে পায়খানা করতে হবে।
  • বিশেষ করে এখনকার বাচ্চারা ফাস্টফুড অনেক পছন্দ করে। আপনি যদি আপনার বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চান তাহলে এই সব বাইরের খাবার থেকে তাকে দূরে রাখুন।
  • বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত রাখতে বাচ্চাকে প্রতিদিন খেলাধুলা করার ব্যবস্থা করতে হবে। বাচ্চা হাত পা নাড়াচাড়া করে খেলাধুলা করছে কিনা সেদিকে নজর রাখতে হবে।
  • বাচ্চার দুধের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে হবে। অনেক বাচ্চা আছে যারা দুধ থাকার কারণে অন্য খাবার পছন্দ করে না বা খেতে চায় না। এক বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাকে আশ জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চাদের পায়খানা নরম করার জন্য ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। তারপর ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হবে। পায়খানা নরম করার ওষুধ বাজারে পাওয়া যায় এগুলোর নিরাপদ এবং কার্যকরী। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াতে হবে।

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

আমরা ইতিমধ্যে বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এখন আবার বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনার বাচ্চা যদি কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগে তাহলে অবশ্যই এগুলো ঘরোয়া উপায়ে আপনি চেষ্টা করতে পারেন। দেখবেন ইনশাআল্লাহ আপনার বাচ্চা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবে। তাহলে চলুন বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা - লিচুর পুষ্টিগুণ

  • আপনার বাচ্চার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। তারপর ঘরোয়া উপায় গুলো চেষ্টা করবেন।
  • বাচ্চাকে প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করান। হাত পা পুরো শরীরে তেল মালিশ করাতে হবে। তাতে বাচ্চার শরীরে রক্ত সঞ্চালন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। পেটের ভেতর থেকে গ্যাস গুলো বের হয়ে যাই।
  • আশ জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে বেশি বেশি করে। আপনার বাচ্চার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে তাহলে বাচ্চার খাদ্য তালিকায় আঁশ জাতীয় খাবার রাখুন।
  • বাচ্চার বয়স যদি ছয় মাসের বেশি হয় তাহলে অল্প অল্প করে ফলের রস খাওয়াতে হবে। বিশেষ করে ফাইবার সমৃদ্ধ ফল খাওয়াতে পারেন। (অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে)
  • বাচ্চাকে সব সময় সুস্থ রাখে বসিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন।
  • ছয় মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের টমেটো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক কাপ পানি দিয়ে একটি টমেটো সিদ্ধ করুন তারপরেই রস করে প্রতিদিন বাচ্চাকে খাওয়ানো।
  • জৈব নারিকেল তেল কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে। আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মলদ্বারে লাগাতে পারেন।

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ এর নাম

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অনেক কষ্ট হয় বিশেষ করে বাচ্চাদের। বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে বিভিন্ন রকম ঘরোয়া উপায়ে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলো যদি কোনো কাজের না দেই তাহলে আপনি ঔষধের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করতে পারেন। তাহলে চলুন বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ এর নাম জেনে নেই।

যাদের ভেতরে কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা জানে এটির কষ্ট কত বেশি। পায়খানায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে এই ধরনের রোগীরা বিভিন্ন রকম ভাল-মন্দ খাবার থেকে বিরত থাকেন। কারণ কোন খাবারে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে রোগী বুঝতে পারেনা। সকল ধরনের ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করার পরও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হতে চাই না।

তখন আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য বাজারে বিভিন্ন রকমের সিরাপ পাওয়া যায়। এই সিরাপ গুলো খাওয়ার পরে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে পারেন। যারা দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন তারা Milk of Magnesia এই সিরাপ চার চামচ করে সামান্য গরম পানি দিয়ে গুলিয়ে খাবেন।

আরো একটি সিরাপ রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্যসহ আরো বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি দেয়। এটি বড়রা এবং বাচ্চারা উভয় প্রকার মানুষ খেতে পারবে। সেটি হল এডোভাস। বিভিন্ন রকমের ভেষজ উদ্ভিদের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে। 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার হোমিও ঔষধ

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কে অনেকগুলো বিষয় আলোচনা করেছি। উপরে আমরা বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ এর নাম সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার হোমিও ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করব। আমরা সকলেই জানি যে হোমিও ওষুধ অনেক কার্যকরী। তাই এখন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার হোমিও ঔষধ সম্পর্কে জানব।

সাধারণ কোষ্ঠকাঠিন্য হলে --- (nux vomica 30 রোজ রাতে শোয়ার সময় এবং sulphur 30 রোজ সকালে)

পায়খানা যখন খুব শক্ত এবং গোটা গোটা বের হয় --- (alumina 30 দিনে তিনবার)

যখন পায়খানা খুব কড়া এবং বড় বড় জমির উপর বেরিয়ে আসে --- (graphites 30 , দিনে তিনবার)

বারবার পায়খানা যেতে ইচ্ছা হয় কিন্তু পায়খানা গিয়ে পায়খানা হয় না --- (causticum 30 দিনে তিনবার)

যদি মনে হয় মলদ্বারে কিছু আটকে আছে --- (lycopodium 30 দিনে তিনবার)

কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য পেটের ভেতর থেকে ধসে যাওয়ার মত মনে হতে থাকে --- (hydrastis Q)

তথ্যসূত্র: homeopathicmedicine.info

6 মাসের বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য

আপনার বাচ্চার প্রথমে মলত্যাগের রুটিন তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগবে। হয়তো একদিন পায়খানা পাতলা হবে আবার পরের দিন শক্ত হবে। জেনে রাখুন যে যতদিন আপনার বাচ্চা মায়ের বুকের দুধ খাবে ততোদিন তার পায়খানা নরম থাকবে ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকবে। যখন শক্ত খাবার খেতে শিখবে তখন কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার 6 মাস বয়সী বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে?

যদি পায়খানা করতে গিয়ে আপনার বাচ্চা কান্নাকাটি করে সেটা একটি অন্যতম লক্ষণ হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য বোঝার। পায়খানা করার পর আপনি লক্ষ্য করবেন তার পায়খানা শক্ত কিনা। স্বাভাবিকের তুলনায় কম পায়খানা করতে পারে। পায়খানা করার পরিমাণ আগের থেকে কমে যেতে পারে।

মল ও গ্যাসের দুর্গন্ধ হলে সেগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য লক্ষণ। আপনি লক্ষ্য করবেন আপনার বাচ্চার পেট শক্ত হয়ে আছে বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পেট ফুলে যেতে পারে। এরকম যদি হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তার চেয়ে পরামর্শ দিবে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

শেষ কথাঃ বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

আপনারা যারা বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চেয়ে ছিলেন তাদের জন্য এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এর জন্য আপনাকে সম্পূর্ণ পোষ্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনার বাচ্চার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় তাকে সেখান থেকে মুক্ত করতে পারবেন।

কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য হল একটি খারাপ রোগ। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য এটি আরো বেশি ভয়ঙ্কর। তাই বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত রাখতে উপরের উপায় গুলো ব্যবহার করুন। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url