সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়? এসকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। সিজোফ্রেনিয়া একটি জটিল মানসিক রোগ। এই রোগ হলে চিন্তা ধারা এবং অনুভূতি প্রকাশের মধ্যে সংগতি থাকেনা। পরিবারের কেউ বা তার পরিচিত কেউ তার খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে এরকম সন্দেহ করে সিজোফ্রেনিয়ার রোগীরা।
আপনি যদি সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়? এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোষ্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন দেরি না করে সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয় এ সম্পর্কে জেনে নেই।
পেজ সূচিপত্রঃ সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়
- সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া মানে কি
- সিজোফ্রেনিয়া কি বংশগত রোগ
- সিজোফ্রেনিয়া রোগ কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয়
- সিজোফ্রেনিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়
- সিজোফ্রেনিয়া রোগের লক্ষণ
- সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা
- সিজোফ্রেনিয়া রোগের ঔষধের তালিকা
- শেষ কথাঃ সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়
সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া মানে কি?
আপনারা যারা আমাদের এই পোস্টটি পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয় এই সম্পর্কে জানতে চেয়ে গুগলের সার্চ করে আমাদের এই পোস্টে ওপেন করেছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন আজকের এই পোস্টে আমরা সিজোফ্রেনিয়া রোগ নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। তার আগে আপনাকে জানতে হবে সিজোফ্রেনিয়া কি? সিজোফ্রেনিয়া এর মানে কি?
সিজোফ্রেনিয়া হলো এক ধরনের জটিল মানসিক রোগ। সিজোফ্রেনিয়া রোগের আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বাস্তব চিন্তা একেবারে কমে যায়। সিজোফ্রেনিয়া রোগীরা বিভ্রাম হ্যালুসিনেশন এ বেশি ভোগেন। বিভিন্ন রকম গায়েবী আওয়াজ শুনতে পান। জ্যাম নেই এমন জিনিস বিশ্বাস করেন। সিজোফ্রেনিয়া মূলত সাইকোটিক ডিসঅর্ডার। সিজোফ্রেনিয়া একটি মারাত্মক মানসিক রোগ।
এই সকল রোগীদের বড় সমস্যা হচ্ছে এরা মানতে চায় না যে এরা মানসিক রোগে ভুগছে। তাই এরা সবার বিরুদ্ধে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চাই না। তাই এই রোগের রোগীরা একা হয়ে যাই। যার কারণে তাদের আচার-আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন চলে আসে। তাদের মন চিন্তা শক্তি অনুভূতি ইচ্ছে শক্তি কোন কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সিজোফ্রেনিয়া রোগীরা পুরোপুরি একটা নিজস্ব আলাদা দুনিয়া তৈরি করে ফেলেন।
সিজোফ্রেনিয়া কি বংশগত রোগ
সিজোফ্রেনিয়া একটি জিন গত সমস্যা। এটি একটি মারাত্মক মানসিক রোগ। আমরা ইতিমধ্যে সিজোফ্রেনিয়া কি এ সম্পর্কে জেনে এসেছি। অনেকে মনে করেন যে সিজোফ্রেনিয়া বংশগত রোগ। এখন আমরা সিজোফ্রেনিয়া কি বংশগত রোগ এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন সিজোফ্রেনিয়া কি বংশগত রোগ সম্পর্কে জেনে আসি।
সিজোফ্রেনিয়া পুরোপুরি বংশগত রোগ নয়। কোন বাবা-মা এদের মধ্যে একজন যদি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয় তাহলে সন্তানের সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার ১২-১৪% সম্ভাবনা থাকে। আবার বাবা-মা দুইজনে যদি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয় তাহলে সন্তানের এ রোগটি হওয়ার ৫০% সম্ভাবনা থাকে। এটি একটি জিনগত সমস্যা। বিভিন্ন রকমের জিনের বিশৃঙ্খলার কারণে এ রোগটি হয়।
সিজোফ্রেনিয়া রোগ কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয়
আমরা ইতিমধ্যেই সিজোফ্রেনিয়া কি এই সম্পর্কে জেনে এসেছি। আমাদের সমাজে এরকম অনেক মানুষ রয়েছে যারা এই রোগে আক্রান্ত। কিন্তু তারা বিশ্বাস করতে চাই না বা মানুষ এই রোগ সম্পর্কে তেমন জানেনা তাই সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেনা। এখন আমরা সিজোফ্রেনিয়া রোগ কেন হয় এ সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় তা জেনে আসি।
- বংশগত কারণেঃ কোন বাবা-মা এদের মধ্যে একজন যদি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয় তাহলে সন্তানের সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার ১২-১৪% সম্ভাবনা থাকে। আবার বাবা-মা দুইজনে যদি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয় তাহলে সন্তানের এ রোগটি হওয়ার ৫০% সম্ভাবনা থাকে।
- সাধারণত 100 জন মানুষের মধ্যে একজন মানুষের সিজোফ্রেনিয়া হতে পারে। আবার দেখা যায় যদি জমজ বাচ্চাদের একজনের সিজোফ্রেনিয়া থাকে তাহলে আরেকজনের হওয়ার সম্ভাবনা ৫০%। জিনগতভাবে বংশপরম্পরায় ক্রোমোজোম একটি প্রবাহ থাকে।
আরো পড়ুনঃ লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা - লিচুর পুষ্টিগুণ
- আমাদের মস্তিষ্ক আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সবকিছু চলনশক্তি সবকিছু মস্তিষ্ক দিয়ে। মস্তিষ্কে কিছু কেমিক্যাল তৈরি হয় একে বলা হয় নিউরোকেমিক্যাল। সিজোফ্রেনিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায় ডোপামিন নামের একটি কেমিক্যাল বেশি কাজ করে। ডোপামিন বেশি হলে সিজোফ্রেনিয়া হয়।
- কিছু কিছু সিজোফ্রেনিয়া তে মস্তিষ্কের গঠন এর মধ্যেও কিছু পরিবর্তন হয়। শৈশব থেকেই রোগ বাসা বাঁধতে থাকে। শিশুদের ওপর যদি অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা হয় তাহলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সিজোফ্রেনিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়
সিজোফ্রেনিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। এতক্ষণ আমরা সিজোফ্রেনিয়া রোগ সম্পর্কে আলোচনা করলাম। সিজোফ্রেনিয়া রোগের অনেক বিস্তারিত জানলাম। এখন আমরা সিজোফ্রেনিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানব। সিজোফ্রেনিয়া রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে অশ্বগন্ধা গ্রহণ করুন।
অশ্বগন্ধা গ্রহণ করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তা গ্রহণ করুন। অশ্বগন্ধা সিজোফ্রেনিয়া রোগীর উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি গ্রহণ করার পর নেতিবাচক লক্ষণ প্রকাশ পায়।
সিজোফ্রেনিয়া রোগের লক্ষণ
আপনারা যারা উপরের আলোচনা গুলো পড়েছেন তারা এতক্ষণে বুঝে গিয়েছেন যে সিজোফ্রেনিয়া একটি মানসিক রোগ। কিন্তু অনেককে দেখলে বুঝা যায় না তিনি এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগে নির্ণয় করার কোনো নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই। তাই এই রোগের বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখে বুঝতে হবে রোগী সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। তাহলে চলুন সিজোফ্রেনিয়া রোগের লক্ষণগুলো জেনে নেই।
- সিজোফ্রেনিয়া রোগ একা একা কথা বলে।
- সব সময় চুপচাপ থাকা। কারো কথার জবাব না দেওয়া। কোন কথা জিজ্ঞেস করলে উত্তরঃ না দেওয়া এ রোগের লক্ষণ।
- বিভিন্ন রকম গায়েবী আওয়াজ শুনতে পান। জ্যাম নেই এমন জিনিস বিশ্বাস করেন।
- অসংলগ্ন কথা বলা প্রতিদিনের কাজ সঠিকভাবে না করা।
- অহেতুক সন্দেহ প্রবণতা পরিবারের কেউ বা তার পরিচিত কেউ তার খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে এরকম সন্দেহ করা।
- ভ্রান্ত বিশ্বাস এ রোগের আরেকটি লক্ষণ।
- অবাস্তব চিন্তা ভাবনা করা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা। যেমন তার চামড়ার ভিতরে পোকা হাঁটাহাঁটি করছে। একটি অবাস্তব দৃশ্য দেখার দাবি করে। পেটে ও মাথায় পোকামাকড় কিলবিল করছে ইত্যাদি।
সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা
সিজোফ্রেনিয়া নির্ণয়ের জন্য কোন নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই। এটিও লক্ষণ এবং মেডিকেলে ভর্তি হলে ডাক্তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেবেন এবং রোগীর মধ্যে এর উপসর্গ দেখে বুঝতে হবে রোগী সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগের কোনো প্রতিকার না থাকলেও অনেক রোগী আছে যারা সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। এখন আমরা সিজোফ্রেনিয়া রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করব।
- মানসিক চিকিৎসাঃ সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ কমাতে সাইকোথেরাপি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি উপসর্গ মারাত্মক লেভেলের হয় তাহলে মানসিক চিকিৎসা করে উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এর জন্য রোগীকে নিয়মিত থেরাপি নিতে হবে।
- ঔষধ সেবনঃ সিজোফ্রেনিয়া রোগের চিকিৎসার জন্য সাধারণত অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
- এরপর সবথেকে ভালো হবে সাইকোথেরাপি দেওয়া। এর ফলে ৮০ ভাগ রোগী কিছুদিন ভালো থাকে কিছুদিন খারাপ থাকে। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ভালো কখনো হয়না। বাকিটা ভালো হয়ে যাই। এই রোগীকে সব সময় দেখে রাখতে হবে এ কারণেই রোগীর আত্মহত্যা করার প্রবণতা দেখা দেয়।
সিজোফ্রেনিয়া রোগের ঔষধের তালিকা
সিজোফ্রেনিয়া একটি মারাত্মক মানসিক রোগ। যেটির প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্য রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে এবং ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এখন আমরা সিজোফ্রেনিয়া রোগের ওষুধের নাম জানবো। উপরে সিজোফ্রেনিয়া কি এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
- সিজোফ্রেনিয়া চিকিৎসার সাধারণত যে ওষুধ প্রয়োগ করা হয় তা হল অ্যান্টিসাইকোটিক ড্রাগ। হ্যালুসিনেশন ডিলিউশন সাইকোসিসের লক্ষণ গুলো প্রমাণিত করতে ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
- এর পাশাপাশি বিভিন্ন থেরাপি ও মনোচিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন মানসিক চিকিৎসার পাশাপাশি রোগের সামাজিক সহায়তা ভীষণভাবে প্রয়োজন হয়।
- সাইকোলজিকাল ইন্টারভেনশন থেরাপির মাধ্যমে রোগী অন্যান্য মানসিক অসুস্থতা থেকে মুক্তি লাভ করেন।
- সিজোফ্রেনিয়া এর লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এবং উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
শেষ কথাঃ সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়
আপনারা যারা সিজোফ্রেনিয়া কি - সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় - সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয় এই সম্পর্কে জানতে চেয়ে ছিলেন তাদের জন্য উপরে এই পোস্টে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলো জানার জন্য আপনাকে কষ্ট করে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
এই পোস্ট থেকে আমরা জানলাম সিজোফ্রেনিয়া একটি মারাত্মক মানসিক রোগ। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও করতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url