আদা চাষ পদ্ধতি - জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি - বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি

প্রিয় পাঠক আছে এই পোস্টে আমরা আদা চাষ পদ্ধতি - জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি - বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব। আমরা সকলেই জানি আদা সাধারণত তরকারিতে মসলার কাজে ব্যবহার করা হয়। তরকারির স্বাদ বাড়ানোর জন্য দেওয়া হয়। আদার উপকারিতা রয়েছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আদার চাহিদা অনেক বেশি। তাই আজকে আমরা জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

আপনারা যদি জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি - বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি - বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্রঃ জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি - বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি

জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি

আমরা সকলে জানি আদা একটি মসলা জাতীয় ফসল। এটি তরকারিতে স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য দেওয়া হয়। আঘাতে অনেক উপকারিতা রয়েছে এটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে চায়ের সাথে আদা খাওয়া হয়। আদার চাহিদা প্রচুর তাই আজকে আমরা জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি জেনে নেই।

আবহাওয়াঃ আদা চাষের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন। আদা চাষের জন্য অল্প ছায়াযুক্ত স্থান সবথেকে উপযুক্ত। সাধারণত দোআঁশ মাটিকে আদা চাষের জন্য সবথেকে উপযুক্ত মাটি হিসেবে ধরা হয়। তবে এটেল মাটিতে ও আদা চাষ করা যেতে পারে।

জমি তৈরিঃ জমি তৈরি করার জন্য অবশ্যই আগে মাটি বাছাই করতে হবে এরপর জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে তৈরি করে নিতে হবে। জমিতে যখন আসবে তখন জমি অনেকগুলো চাষ দিতে হবে। মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে তারপর জমিতে বেড তৈরি করতে হবে। বেডের চারপাশে অবশ্যই নালা তৈরি করে নিতে হবে।

বীজ রোপণের সময়ঃ সাধারণত ফাগুন মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত আদার বীজ বপন করা যেতে পারে। জমি অনুযায়ী বীজ কিনতে হবে এবং বপন করতে হবে। অবশ্যই বীজ বপন করা আগে তা শোধন করে নিতে হবে। তাহলে বিভিন্ন রকম রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

আরো পড়ুনঃ কুরবানী করা কি - কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব

বীজের আকারঃ বীজের আকারের ওপর আদার ফলন নির্ভর করে থাকে। যদি বিচ বড় আকৃতির হয় তাহলে ফলন ভালো হবে।

বীজ বপন পদ্ধতিঃ ফাল্গুন মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত বীজ বপন করা যেতে পারে। বীজের ওজন হবে ১২-১৫ গ্রাম। বীজগুলো অবশ্যই সারিতে বপন করতে হবে। বীজ গুলোর মাঝে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং এক লাইন থেকে অন্য লাইনের দূরত্ব রাখতে হবে। বীজগুলোকে 5 সেন্টিমিটার গভীরে লাগাতে হবে।

সার প্রয়োগঃ আপনি যদি আদার ফলন ভাল পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে ভালো ফলন পেতে চাইলে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে বীজ লাগানোর পর ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ব্যবস্থাঃ আপনি যদি আদার ফলন ভাল পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। জমিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে। বৃষ্টি হলে জমিতে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জমি তৈরি করার সময় নেওয়া তৈরি করে নিতে হবে।

রোগ নির্ণয় ও পোকামাকড় দমনঃ আতাগাছের সাধারণত কন্দ পচা রোগ বেশি দেখা যায়। আবার আদা হলুদ হওয়া রোগ দেখা যায়। জমিতে বিভিন্ন রোগ ও পোকা আক্রমণ করলে প্রয়োজনীয় কীটনাশক স্প্রে প্রয়োগ করতে হবে।

বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি

বস্তায় আদা চাষ করলে জমির দরকার হয় না। বস্তা তে পর্যাপ্ত পরিমাণে আদা চাষ করা যায়। অনেকেই আছে যারা এই পদ্ধতিতে চাষ করার কথা জানেনা। প্রতি বৃষ্টি হলে ফসল ডুবে যাওয়ার ভয় থাকেনা। এই পদ্ধতি অনেক সহজ এবং কার্যকরী। আবার ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা কোন সার প্রয়োগ করতে হয় না। এখন আমরা বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

  • একটি বস্তায় শক্ত মাটি কে ভেঙে ঝুরঝুরা করে নিতে হবে। বস্তায় যাতে ফেঁপে থাকে সেজন্য ছাই মেশাতে হবে। পরিমাণমতো গোবর সার যোগ করতে হবে।
  • আলাদা একটি বালিভর্তি টবে তিন টুকরো চারা পুতে দিতে হবে। কয়েকদিন পর ওইখান থেকে গাছ বের হয়ে আসবে।
  • তখন আদার চারা সাবধানে তুলে বস্তার মুখে পুঁতে দিতে হবে। আবার মাটি তৈরি হয়ে গেলে বস্তায় ভরে চাষের জন্য বসাতে হবে ৭৫ গ্রামের একটি করে কন্দ।
  • এরপর পানি দিতে হবে। তারপরে বস্তার উপর ঢেকে দিতে পারলে আরো বেশি ভালো। তাতে মাটিতে আর্দ্রতা বেশি থাকবে অল্পদিনের মধ্যেই গাছ বেরিয়ে আসবে।
  • কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আদার গাছ বাড়তে থাকবে। নিয়মিতভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • চারা লাগানোর দুই মাস পরে চার চামচ সরিষার খোল ও আধা চামচ ইউরিয়া মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। বস্তার মাটি মাঝে মাঝে ঘুরে একটু আলগা করে দিতে হবে।
  • জুন-জুলাই মাসে আদা লাগালে ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসে তোলা যায়। একটি তিনটি কাজ থাকলে এক-দেড় কেজি পর্যন্ত পাওয়া যায়।

আদা চাষ পদ্ধতি সময় - আদা চাষ করার সময়

আমরা সকলেই জানি আদা একটু মসলা জাতীয় ফসল। তরকারিতে স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য আদা ব্যবহার করা হয়। আদার উপকারিতা রয়েছে। আদা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরের বিভিন্ন রকম রোগ থেকে আমাদের মুক্তি দেয়। শরীরকে তাজা রাখে। তাই শরীর একটু অসুস্থ হলে মানুষ আদা দিয়ে চা খেতে চাই। এখন আমরা আদা চাষ পদ্ধতি সময় সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন আদা চাষ করার সময় জেনে নেই।

সাধারণত বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসে আদা চাষ শুরু হয়। এ সময় বাজারে বিচ আদা কিনতে পাওয়া যায়। আপনি যদি আদা চাষ করতে চান তাহলে বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্য মাসের মধ্যে করতে পারেন। এই সময়ে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বেলে, বেলে দোআঁশ এঁটেল দো-আঁশ মাটি আদা চাষের সবথেকে উপযোগী।

আদা চাষ কিভাবে করা হয় - আদা চাষ কিভাবে করা যায়

ইতিমধ্যেই আমরা জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনি যদি আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন। এখন আমরা আদা চাষ কিভাবে করা হয় সে সম্পর্কে জানব। আদা চাষ কিভাবে করা যায় চলুন জেনে নেই।

জমি ও মাটি নির্বাচন করতে হবেঃ জমি তৈরি করার জন্য অবশ্যই আগে মাটি বাছাই করতে হবে এরপর জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে তৈরি করে নিতে হবে। বেলে, বেলে দোআঁশ এঁটেল দো-আঁশ মাটি আদা চাষের সবথেকে উপযোগী। জমিতে যখন আসবে তখন জমি অনেকগুলো চাষ দিতে হবে। মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে তারপর জমিতে বেড তৈরি করতে হবে।

বীজ বপন করতে হবেঃ সাধারণত বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসে আদা চাষ শুরু হয়। এই সময় হলো বীজ বপন করার উপযুক্ত সময়। শাড়িতে ৫০ সেন্টিমিটার এবং ২৫ সেন্টি মিটার দূরত্বে বীজ রোপণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা - লিচুর পুষ্টিগুণ

সার প্রয়োগ করতে হবেঃ বেশি ফলন পেতে হলে জমিতে প্রচুর পরিমাণে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।

আদার রোগ ও পোকামাকড় দমন করতে হবেঃ আধার ছত্রাক জনিত কারণে অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। সেগুলো দিকে সবসময় নজর রাখতে হবে। রোগ চিহ্নিত করতে হবে এবং তা দমন করতে হবে।

পরিচর্যা করতে হবেঃ আদার গাছ বড় হতে চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ সময় লাগে। আদা রোপন করার পর পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ পর জমির আগাছা ভালোভাবে মিলিয়ে নিতে হবে। অতিরিক্ত পানি না জমে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

আদা চাষের উপযুক্ত সময়

সবকিছুর একটা উপযুক্ত সময় রয়েছে। উপযুক্ত সময় এর মধ্যে যদি সেই ফসল রোপণ করা হয় তাহলে সেটিও ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ঠিক তেমন আদা চাষের একটি উপযুক্ত সময় রয়েছে। আদা চাষের উপযুক্ত সময় হল বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসে আদা চাষ শুরু হয়। এই সময় হলো বীজ বপন করার উপযুক্ত সময়। এইসময় আদা চাষ করলে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই আপনি যদি আদা চাষ করতে চান তাহলে এই সময় করতে পারেন।

শেষ কথাঃ জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি - বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি

আপনারা যারা জমিতে আদা চাষ পদ্ধতি - বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে ছিলেন তাদের জন্য এই পোস্টটি। এই পোস্টে আমরা আদা চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। তার জন্য আপনাকে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আপনি যদি আদা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিতে চান এখানে পেয়ে যাবেন।

এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url