জিলহজ্জ মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস
আজ আমরা জানবো জিলহজ্জ মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস সম্পর্কে।
জ্বিলহজ্জ ইসলামি বর্ষপঞ্জির ১২ তম মাস হিসাবে পুরো পৃথিবীতে গণ্য করা হয়।
মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই মাস কেননা এই মাসে মুসলিমগণ হজ্ব পালনের
উদ্দেশ্যে মক্কা তে যাত্রা করেন। আমাদের কাছে অনেকে এসে প্রশ্ন করেন জিলহজ্জ
মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস সম্পর্কে। চলুন জেনে আসি জিলহজ্জ মাসের
ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস সম্পর্কে।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে জিলহজ্জ মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ
মাসের ফজিলত হাদিস সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে আসি জিলহজ্জ
মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃ জিলহজ্জ মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস
জিলহজ্জ মাসের ফজিলত
জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম
বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন পুরো বছরের ইবাদতের চেয়েও জিলহজ্ব মাসের 10 দিনের
ইবাদত আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় অগ্রহণযোগ্য। এছাড়া তিনি আরো বলেন জিলহজ
মাসের প্রথম দশদিনের রোজা পুরো বছরের রোজার সমতুল্য কারণ এই দশ দিনের ফজিলত
পুরো বছরের নামাজের চেয়েও বেশি।
এছাড়া জিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের রাত্রির ইবাদত লাইলাতুল কদরের রাতের ইবাদত
এর সমতুল্য হিসেবে গণ্য করা হয়। (তিরমিজি) এছাড়া যারা হজ করার উদ্দেশ্যে
সৌদিতে যান তারা যিলহজ মাসের প্রথম দশকের বিশেষ ইবাদত মুখরিত থাকেন এবং এই
দশদিন তারা ইবাদতের মধ্যেই থাকার চেষ্টা করেন এছাড়া আজ সকাল থেকেই আকাশ
বাতাস মুখরিত করে তালবিয়া পাঠ করতে করতে হাজীগন মিনারের উদ্দেশ্যে অর্থাৎ
কাবা শরীফের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
তিরমিজি শরীফের উঠে এসেছে হযরত সাহল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু
ইরশাদ করেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন একজন হজ্বযাত্রী যখন
তালবিয়া পাঠ করতে শুরু করে তখন তার আশেপাশের পাথর বা নুড়িপাথর পাহাড়-পর্বত
বৃক্ষলতা সবকিছুই সেই তালবিয়া পাঠে শরিক হয়ে যায় (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)।
জিলহজের 9 নম্বর তারিখ কি হলো আরাফার দিন।
এই আরাফার দিনে আরাফার ময়দানে অবস্থান করা হজের চেয়ে সবচেয়ে বড়
রোকন এর মর্যাদা মহান আল্লাহতালার কাছে অপরিসীম মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন মহান আল্লাহতালা এই দিনকে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ বলে
আখ্যায়িত করেছেন পবিত্র কোরআনে যে তিনি সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ব্যক্তিকে এই
দিনে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন।
মহান আল্লাহতালা এই দিনে পৃথিবীর অনেক নিকটে চলে আসেন এবং ফেরেশতাদের বলেন হে
ফেরেশতাগণ তোমরা দেখো আমার বান্দারা এলোমেলো চুল ও ধূলি-ধূসর অর্থাৎ শরীরের
ধুলি মাখা অবস্থায় আমার দরবারে আগমন করছেন। এছাড়া তিনি আরও বলেন তারা
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ইন্নাল হামদা ওয়াননি'মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা
শারিকা লাকা লাব্বাইক বলে চিৎকার করছে তোমাদের সাক্ষী রেখে আমি বলছি আমি
সবাইকে মাফ করে দিলাম।
কিছু হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে শয়তান সেইদিন খুবই ধিক্কৃত অপদস্ত ও ক্রোধিত
হয় কারণ এই দিনে মহান আল্লাহ তাআলার রহমত এবং বান্দার পাপমোচন সে নিজ চোখে
দেখতে পায়।
জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস
জিলহজ মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিসের মধ্যে উল্লেখিত হলো মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন তোমাদের মধ্যে যেই ব্যক্তি কুরবানী
করতে চায় সে যেন জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পরে চুল বা না কাটে (ইবনে মাজাহ)।
এজন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আমাদের জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার আগেই চুল নখ
কেটে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
আরো পড়ুনঃ
আদা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তায়ালা হতে বর্ণিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন এক ওমরা থেকে আরেক ওমরা এর
মধ্যবর্তী যে সময় সেই সময়ে সগিরা গুনাহ গুলো মাফ করে দেন মহান আল্লাহতালা।
এছাড়া সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান জান্নাত ই হচ্ছে মূল হজের একমাত্র প্রতিদান
(সহিহ বোখারি ও সহিহ মুসলিম)। জিলহজ্ব মাসের অধিক তাকবীর পাঠ করা উচিত মহান
আল্লাহতালার সন্তুষ্টির জন্য।
এ সকল বিষয়ে হাদিসে উল্লেখিত রয়েছে হযরত ইবনে ওমর রাজেলা তালা বলেন মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন তোমরা এই দিনগুলোতে বেশি বেশি
করে তাহলিল যেমন লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ তাকবীর আল্লাহু আকবার এবং তাহমিদ
আলহামদুলিল্লাহ ( মুসনাদে আহমদ )। এছাড়া হযরত ইমাম বুখারী রাদিয়াল্লাহু
তা'আলা বলেন ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তালা ও আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু
তা'আলা আনহু এই দিনগুলোতে বাজারে যেতেন এবং বেশি বেশি তার পাঠ করতেন যেন
লোকেরা তাদের পাঠ করা থেকে শিখতে পারে।
অপরদিকে ইবনে রজব রহমতুল্লাআলাই উল্লেখ করেন বুখারীর হাদীস দ্বারা তিনি
আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন নেক আমলের জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট দিনগুলোর মধ্যে
জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন হল সর্বোত্তম এই দিনগুলোতে নেক আমল আল্লাহর কাছে
অধিক পৌঁছায় এবং আল্লাহর কাছে এই দিনের আমল গুলো অধিক প্রিয়।
জিলহজ্জ মাসের করণীয়
আল কুরআনে উল্লেখিত রয়েছে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন।
মহাগ্রন্থ আল কুরআনে মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন শপথ ঊষার শপথ সেই
মহামান্য 10 রজনীর শপথ জোড় ও বিজোড় এর শপথ অতিবাহিত হওয়ার রাত্রির
নিশ্চয়ই এই সকল শপথ এর মধ্যে রয়েছে বোধ সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য শিক্ষা।
(সুরা-৮৯ ফজর, আয়াত: ১ - ৫)।
জিলহজ্ব মাসের করণীয় গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জিলহজ মাসের 1 থেকে 9 তারিখ
পর্যন্ত দিনে রোজা পালন করা এবং রাতে ইবাদত করা বিশেষ ফজিলত সম্পন্ন বলে
মুহাদ্দিসগণ জানিয়েছেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন জিলহজের 10 দিনের ইবাদত নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট
অন্যদিনের তুলনায় অধিক প্রিয় তিনি আরো বলেন জিলহজ মাসের প্রথম তারিখ হইতে 9
তারিখের রোজা এক বছর এর সমান আর রাতের ইবাদত লায়লাতুল কদরের রাতের সমান।
(তিরমিজি খণ্ড-১ পৃষ্ঠা: ১৫৮)।
জিলহজ মাসের 9 তারিখ আরাফার দিন হিসেবে গণ্য করা হয় এই দিনে রোযা রাখা বিশেষ
সুন্নত ও আমল বলে গণ্য করা হয়। হযরত আবু কাতাদা রাদিয়াল্লাহু তালা হতে
বর্ণিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন
আরাফার দিনের রোজা ব্যাপারে আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তা'আলা তার বিগত এক বছরের
গুনাহ ও সামনের এক বৎসরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। (তিরমিজি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা:
১৫৭)।
বুখারী মুসলিমের উল্লেখিত আরাফায় উপস্থিত হাজীদের জন্য এই রোজা প্রযোজ্য
নয়। জিলহজ্ব মাসের 10 তারিখ ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ বা কোরবানির দিন
হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই কোরবানির দিনে ঘর থেকে পানাহার থেকে বিরত
থেকে কোরবানির ঈদের নামাজ পড়ে কোরবানি করে সকালের নাস্তা করা বিশেষ সুন্নত ও
আমল।হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যিলহজ মাসের
প্রথম দশকের আমল মহান আল্লাহতালার কাছে যত বেশি প্রিয় আর কোন দিনের আমল মহান
আল্লাহতালার কাছে ততো বেশী প্রিয় নয়।
জিলহজ্জ মাসের রোজার ফজিলত
জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন এমন কোনো দিন নেই বছরের মধ্যে যে দিনের ইবাদত এই দশদিনের
ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয় মহান আল্লাহতালার কাছে। এছাড়া মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের প্রতিদিন
রোযা রাখা এক বছরের রোজা রাখার সমতুল্য। এছাড়া প্রত্যেক রাতে ইবাদত লায়লাতুল
কদরের ইবাদত এর সমতুল্য হিসেবে বিবেচিত (তিরমিজি)।
জিলহজ্জ মাসের তাকবীর
জিলহজ মাসের প্রথম 9 তারিখ থেকে শুরু করে 13 তারিখ পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ
নামাযের পরে প্রত্যেক নারী ও পুরুষের ওপর তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব করা
হয়েছে। ফরজ নামাজ শেষে পুরুষরা অত্যাধিক উচ্চ আওয়াজে এই তাকবীর পাঠ করবে
অপরদিকে নারীরা নিচু আওয়াজে এই তাকবীর পাঠ করবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ
তা'আলা বলেন আল্লাহকে স্মরণ করো নিদৃষ্ট দিনসমূহে।
আরো পড়ুনঃ
অ্যালোভেরার দশটি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
এছাড়া যে ব্যাক্তি খুব দ্রুততার সাথে দুই দিনে চলে আসবে তারও কোন পাপ নেই
অপরদিকে যারা বিলম্ব করবে তাদের কোন অপরাধ নেই। কারণ তারা মহান আল্লাহ তাআলার
আদেশ অনুযায়ী চলেছে। পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত রয়েছে আল্লাহতালার তাকওয়া
অবলম্বন করো তোমরা এবং নিশ্চয়ই তোমাদের তার কাছেই ফিরে যেতে হবে। (সুরা
বাকারা, আয়াত ২০৩)।
তাকবীরে তাশরীকের জন্য বিভিন্ন শব্দ হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখিত রয়েছে তবে হযরত
আলী ইবনে মাসউদ রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিতঃ لله أكبر الله أكبر لا إله
إلا الله، والله أكبر الله أكبر ولله الحمد
অর্থঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার
ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
এছাড়া হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিতঃ الله أكبر الله أكبر
الله أكبر لا إله إلا الله الحي القيوم يُحيي ويُميت وهو على كل شيء قدير
অর্থঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল
হাইয়ুল কাইয়ুম। ইউহুয়ি অজুমিত ওয়া আলা আলা কুল্লি সাইন কাদির।
উভয়ের তাসরিফের যেকোনো একটি আমল করা যায় তবে হযরত আলী ও ইবনে মাসউদ
রাদিয়াল্লাহু তা'আলা এর বর্ণনাটিকে হানাফী মাযহাবের ওলামায়ে কেরামগণ বেশি
গ্রহণ করেছেন। কারণ এটা প্রসিদ্ধ বর্ণনা ও অবিচ্ছিন্ন ও কর্ম ধারায় বর্ণিত
হয়েছে এছাড়া তাকবীর ও তাহলিল ও তাহমিদ সবই এতে রয়েছে।
শেষ কথা
আপনারা যদি জিলহজ্জ মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস সম্পর্কে জানতে
চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে।এছাড়া আপনার যদি জিলহজ্জ
মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত হাদিস সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি
আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জিলহজ্জ মাসের ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের ফজিলত
হাদিস সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমিটির মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে
পারেন আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন
ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url