জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি

আজ আমরা জানব জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে। এই জুম্মার দিনে হযরত আদম আলাই সাল্লাম কে সৃষ্টি করা হয়েছিল জান্নাতে প্রবেশ করা হয়েছিল এছাড়াও তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল এই জন্য এদিন এত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক আলেমগণ আমাদের প্রশ্ন করেন জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে। চলুন জেনে আসি জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে।
জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে আসি জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে।

পেজ সূচিপত্রঃ জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি

জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি

প্রতিটা মুসলমানের জুমাতুল বিদা কি এ সম্পর্কে জানা উচিত। অনেকেই আমাদের প্রশ্ন করেন জুমাতুল বিদা কি এ সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক জুমাতুল বিদা কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আমাদের সমাজে সকলের কাছে মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি জুমাতুল বিধান নামে পরিচিত। রমজান এবং জুমা একত্রে মিলেমিশে এই দিনটি অতুলনীয় মহিমান্বিত হিসাবে গণ্য হয়েছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন হে উম্মাতি মোহাম্মদী তোমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো রমজান মাস এবং সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুম্মা।

এই জুম্মার দিনে প্রত্যেকটা মুমিনের একটাই ইচ্ছা জমার জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা মহান আল্লাহর নিকট্য লাভের জন্য প্রাণ খুলে দোয়া করা এবং আল্লাহর থেকে পানা চাওয়া। হাদিসে উল্লেখিত রয়েছে জুমার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা সর্বোত্তম এই নামাজ একা আদায় করার কোন এখতিয়ার নেই।
পবিত্র কুরআনুল কারীমে উল্লেখ রয়েছে জুমার নামাজের সময় সকল কাজ বন্ধ করে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য পাক পবিত্র হয়ে মসজিদের দিকে নামাজের উদ্দেশ্যে যেতে হবে তবে কোন ব্যক্তি যদি উপযুক্ত কারণে নামাজ আদায় করতে না পারে সেক্ষেত্রে তিনি জোহরের নামাজ আদায় করে নিতে পারেন। এছাড়াও কিছু ব্যাক্তির ওপর জুমার নামাজ ফরজ করা হয়নি যেমন কোন ব্যক্তি ভ্রমণে গেলে তার ওপর জুমার নামাজ পড়া আবশ্যকীয় নয় তিনি যোহরের নামাজ পড়ে নিতে পারেন তবে ভ্রমণকারী চাইলে যে কোন মসজিদে দাঁড়িয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করতে পারেন।

জুমাতুল বিদা খুতবা - জুমার আগের ও পরের সুন্নাত

তোমার দিনের ফজিলত সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ও বর্ণনা করেছেন হাদিসে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন সূর্যোদয়ের মাধ্যমে যেদিন হয় তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম এবং পবিত্র দিন হল জুম্মার দিন।

এই পবিত্র জুমার দিনে হযরত আদম আলাই সালাম কে সৃষ্টি করা হয়েছিল জান্নাতে পাঠানো হয়েছিল এবং এই দিনেই হযরত আদম আলাই সাল্লাম কে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল অপরদিকে এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে উল্লেখ করতে গিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন এই দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যে সময় মুসলিমরা নামাজরত অবস্থায় দোয়া করলে অবশ্যই মহান আল্লাহ তা'আলা সেই দোয়া কবুল করবেন, সুনানে তিরমিজি হাদিসঃ ৪৯১। রমজান মাসে রোজা রাখা অবস্থায় জমাতুল বিদাতে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদকৃত যে কোন দোয়া মহান আল্লাহতালা কবুল করবেন। জুমার দিনের কিছু পবিত্র সুন্নত আমল রয়েছে যা নিচে দেওয়া হলঃ
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে গোসল করা
  • নিজের কাছে যেমন জামা কাপড় রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম জামা কাপড় পরিধান করা অথবা নতুন জামা কাপড় পরিধান করা
  • আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করা
  • মসজিদের দিকে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করা
  • আগে আগে মসজিদে গিয়ে প্রবেশ করা এবং সুন্নত নামাজ আদায় করা
অনেক ইমামদের মধ্যে এটি মতপার্থক্য রয়েছে যে যোহরের নামাজের সুন্নত ৪ রাকাত মক্কাদা নাকি জোহরের নামাজের সুন্নত মুস্তাহাব। অধিকাংশ ইমামদের এর মত হল জুমার পূর্বে সুন্নত হল মক্কায় এ হাদিসে বর্ণনাকারী ব্যক্তি হলেন মোঃ বিন আব্দুর রহমান আসামি।

জুমার দিনের ১১ টি আমল - জুমাতুল বিদা হাদিস

জুম্মা প্রতিটি মুসলমানের জন্য পাপ মোচনের হাতিয়ার কারণ এই দিন মহিমান্বিত দিন এবং এই দিনে মহান আল্লাহ তায়ালা মোনাজাত কবুল করেন। জুমার দিনের ১১ টি গুরুত্বপূর্ণ আমল নিচে দেওয়া হলঃ 
  • খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠা।
  • অত্যাধিক দুরুদ শরীফ পাঠ করা। 
  • জুম্মার নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য দ্রুত গোসল করে রওনা দেওয়া। 
  • মহান আল্লাহতালার কাছে পাপ পৌঁছানোর জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা কারণ এই দিনে অধিক পরিমাণ দোয়া কবুল হয়। 
  • মসজিদে গিয়ে কাতার ভেঙে সামনে যাওয়া নিষেধ এই দিনে। 
  • এছাড়া সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা। 
  • নামাজে যাওয়ার পূর্বে গোসল করা এবং পবিত্র হাওয়া। 
  • সুগন্ধি ব্যবহার করা নিজের শরীরে। 
  • চেষ্টা করা পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার। 
  • খুতবার সময় চুপচাপ থেকে মনোযোগ সহকারে খুতবা শ্রবণ করতে হবে।  
  • এছাড়া তাহি আতুল মসজিদ আদায় করতে হবে।
মহান আল্লাহতালা বিশ্ব জাহানের সকল মুসলিমদের মসজিদে এসে জুম্মাতুল বিদা সহ সকল জুম্মা মসজিদে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন আমিন। 
হযরত আওয়াজ ইবনে আওয়াজ আস সাফি রাদিয়াল্লাহু তা'আলা থেকে বর্ণিত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে ব্যক্তি জুম্মার দিনে কুশল করে সুন্দর কাপড় পরিধান করে আগে আগে হেঁটে মসজিদে যাবে ইমামের কাছাকাছি বসবে এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনবে এবং অনর্থক কোন কাজ করবে না তাকে মহান আল্লাহ তা'আলা প্রতিটি কদমের বিনিময়ে এক বছরের নামাজ ও রোজার সব প্রদান করবেন ,সুনানে ইবনে মাজা, হাদিসঃ ১০৮৭)।

জুমাতুল বিদা এর ফজিলত - জুমাতুল বিদা সম্পর্কে আলোচনা

জুম্মাতুল বিদা এর এই দিনে মহান আল্লাহতালা আদম আলাই সাল্লাম কে সৃষ্টি করেছিলেন জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন এবং পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন এই জুম্মার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যে সময় নামাজের পরে মহান আল্লাহতালার কাছে দুই হাত তুলে দোয়া করলে মহান আল্লাহতালা নিশ্চয়ই সে দোয়া কবুল করেন।সুনানে তিরমিজি, হাদিসঃ ৪৯১।

মাহে রমজানের শেষ জুমার দিন আমাদের সমাজে জামাতুল বিধান নামে অধিক পরিচিত রমজান মাস এবং জুমার দিন এই দুইটি মিলে এই জুমার তুল বিদাকে করে তুলেছে অধিক মহিমান্বিত। উম্মাতে মোহাম্মদীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উপহার গুলোর মধ্যে একটি হলো প্রতি বছর একটি বিশেষ মাস রয়েছে যেটি রমজান মাস এবং প্রতি সপ্তাহে একটি বিশেষ দিন রয়েছে যা শুক্রবার বা জুম্মার দিন। মহান আল্লাহর কাছ থেকে পানা চাওয়ার জন্য প্রত্যেকটি মুসলমানের কাছে এই দিনটি বিশেষ হিসাবে গণ্য করা হয়।

সর্বপ্রথম জুমার সালাত অনুষ্ঠিত হয় কোথায় - জুমার খুতবার ইতিহাস

জুম্মার নামাজ পৃথিবীর সকল মুসলমানের ওপর ফরজ হয় প্রথম হিজরীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত কালে কুবাতে অবস্থান শেষে শুক্রবার দিনে মদিনায় পৌঁছান এবং বনি ইসালেম গোত্রের উপত্যকায় পৌঁছে যোহরের ওয়াক্ত হলে সেখানে তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন এটি ইতিহাসের প্রথম জুম্মা হিসেবে বিবেচিত।
অধিকাংশ পুরাতন গ্রন্থে উল্লেখিত হিজরতের পর জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার আগে নবুওয়াতের দ্বাদশ বর্ষে মদিনায় নাউকিলে খাজিমতের হযরত আসাদ বিন জুড়ারা রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু এর ইমামতিতে সম্মিলিতভাবে শুক্রবারে দুই রাকাত নামাজ আদায়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে সেটি ছিল নফল নামাজ ইসলামে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত কালে কুবাতে অবস্থান শেষে শুক্রবার দিনে মদিনায় পৌঁছান এবং বনি ইসালেম গোত্রের উপত্যকায় পৌঁছে যোহরের ওয়াক্ত হলে সেখানে তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন এটি ইতিহাসের প্রথম জুম্মা হিসেবে বিবেচিত।

শেষ কথা

আপনারা যদি জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া আপনার যদি জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জুমাতুল বিদা কি - জুমার নামাজের হুকুম কি সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমিটির মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url