কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায় - কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু হলো কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ। অধিক পরিমাণে লবণ
চিনি চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়তে
পারে। আমাদের পাঠকদের মধ্য থেকে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন কিডনি ড্যামেজের
লক্ষণ সম্পর্কে। চলুন বিস্তারিতভাবে দেখে আসি কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ গুলো।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার
20 টি উপায় এবং কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন কথা না
বাড়িয়ে জেনে আসি কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায় এবং কিডনি
ড্যামেজের লক্ষণ সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃকিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায় - কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
- কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায়
- কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা
- কিডনি পাথরের লক্ষণ
- কিডনি ইনফেকশনের চিকিৎসা
- কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার
- শেষ কথা
কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায় - কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
খাদ্য পানিতে নির্মিত ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড রাসায়নিক যৌগের মাধ্যমে পাথর রূপ
সৃষ্টি করে যা কিডনি পাথর নামে পরিচিত। কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার ২০টি
উপায় নিচে দেওয়া হলঃ
- প্রতিদিন নিয়ম করে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি গ্রহণ করতে হবে যার ফলে শরীরে ক্যালশিয়াম অক্সালেট পাথর তৈরি সম্ভাবনা কমে যায়।
- পরমাণু বিদ্যালয়ে আপনার মুত্র পিন্ডের পাথরগুলো নিষ্ক্রিয় করতে সহায়তা করে থাকে।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার আপনার শরীরে পাথর গঠন কমাতে সাহায্য করে পশুর মাংস মাছ ডেইরি পণ্য মুগ ডাল সহ বিভিন্ন প্রকার ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বিদ্যমান রয়েছে।
- ক্যালসিয়াম পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে ক্যালসিয়াম সাধারণত দুধ পনির পণ্য লালমরিচ ব্রকলি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ
মেডিটেশন করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন
- এছাড়া যে সকল মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড বিদ্যমান থাকে সে সকল মাছ খাওয়া উচিত কারণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাথর হওয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করেন।
- ভিটামিন ডি একটি পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম স্তর যা শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। সূর্যের আলো থেকে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা যেতে পারে অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।
- সাধারণত চা কফি বাইরের খাবার চকলেট ক্যান্ডি সবুজ ও শস্য দ্রব্য সহ বিভিন্ন ধরনের খাবার যা আপনার মূত্র থলিতে পাথর গঠন বাড়াতে সাহায্য করে এ সকল খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
- প্রতিদিন যথাযথ পরিমাণে পানি পান করতে হবে পানি পান করলে মূত্র কিন্তু পরিষ্কার হয়ে যায় এছাড়া পাথর ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার ফলে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায় শরীর থাকে সুস্থ।
- দীর্ঘ সময় খালি পেটে না থেকে একটু পর পর পানি খেতে হবে এটি আপনার শরীরের ব্যাড এনজাইম কে পরাস্ত করতে সাহায্য করে।
- পাথর তৈরি করে এমন ধরনের পদার্থ যেমন রুটি বাইরের খাবার পাকা গাজর ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং শরীরের ওজন ঠিক রাখার মাধ্যমে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
- গোসল করার সময় গরম পানি ব্যবহার করলে মূত্র পিন্ড পরিষ্কার হয়ে যায় এ ছাড়া পাথর তৈরি কারী পদার্থ তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হয় শরীর থেকে।
- স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন অর্থাৎ নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ধূমপান বা অ্যালকোহল গ্রহনের অভ্যাস থাকলে এটা পরিহার করতে হবে।
- লেমন জুস পান করতে পারেন তবে এটি অবশ্যই বাজারে তৈরি লেমন জুস না হয়ে অর্গানিক লেমন জুস হতে হবে। যদিও লেবু এসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে তবুও এটি পাথর নষ্ট করতে সাহায্য করে শরীরকে।
- চকলেট কফি বিভিন্ন ধরনের পানীয় পাথর তৈরি করে এজন্য এগুলো অবশ্যই পরিহার বা পরিত্যাগ করতে হবে।
- প্রস্রাব অধিক সময় আটকে রাখা যাবে না এতে পাথর সৃষ্টির সম্ভাবনা বেড়ে যায় এই জন্য সময়মতো প্রস্রাব করতে হবে।
- যদি আপনার শরীরে পাথর আছে এমন কোন উপসর্গ দেখা যায় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন এবং পাশাপাশি মেডিটেশন করুন।
- প্রাকৃতিক কিছু ঔষধি রয়েছে যেমন নেত্রীন পানি এ পাটকা পাথর পানি বোখরা বৃক্ষের ছাল পাথর অপসারণ এর সহায়তা করে থাকে।
- এছাড়া কিডনিতে পাথর হওয়া যদি দীর্ঘদিন হয়ে যায় সেক্ষেত্রে পরিচিত ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ করে এটি শরীর থেকে অপসারণ করে ফেলা ভালো হবে।
- নিয়মিত নেত্রীন পানি পান করার ফলে মূত্রথলির পাথর অপসারণ করা যেতে পারে।
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু লক্ষণ হলো ক্ষুধা
মন্দা শরীরের ওজন হাস পাওয়া শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত-পা মুখএ পানি জমে
ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া
শরীরে ক্লান্তি আসা ও ঘুম কম হওয়া অসুস্থ বোধ করা শরীরে বিভিন্ন অংশে
চুলকানি হওয়া মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা হওয়া ইত্যাদি।
কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা - কিডনি ইনফেকশনের টেস্ট
কিডনিতে ইনফেকশনের লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম কিছু লক্ষণ প্রস্রাব করার সময়
জ্বালাপোড়া করা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমা হওয়া এবং ব্যথা হওয়া ,
পেটের দুই পাশে এবং তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা করা পরিমিতভাবে প্রস্রাব না হওয়া
ইত্যাদি। দীর্ঘদিন যাবত চিকিৎসার পরেও কিডনির রোগ যদি সম্পূর্ণরূপে ভালো না হয়
এবং কিডনির কার্যকারিতা যদি দিন দিন কমতি থাকে তাহলে এটাকে ডাক্তারি ভাষায়
কিডনির রোগ বলা হয়ে থাকে।
কিডনির কার্যকারিতা বুঝতে হলে বিভিন্ন ধরনের সিরাম ও ইউরিয়া পরীক্ষা করতে হয়
যদি কিডনি নষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে এই দুইটি মারাত্মক আকারে শরীরে বেড়ে যায়।
কিডনি কতটুকু রোগে আক্রান্ত বা কতটুকু ভালো আছে এটা বোঝার জন্য সিএফআর বা
সিসিআর টেস্ট করাতে হয় সিএফআর ৯০ এর ওপর হলে আপনি নিশ্চিন্ত অর্থাৎ আপনার
কিডনি ভালো আছে।
কিডনি পাথরের লক্ষণ - মূত্রথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ
কিডনিতে পাথর হলে এর একটি উপসর্গ হলেও পেটে অথবা নিচে পিঠের ডানে বায়ে মৃদু
ব্যথা হওয়া। লাল প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাবে মৃদু রক্ত আসা অন্যতম উদাহরণ
হতে পারে কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ গুলোর মধ্যে । কিডনি থেকে পাথর যদি প্রস্রাবের
নালীতে নেমে আসে সে ক্ষেত্রে পেট পিঠ থেকে কসকির দিকে প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং
সঙ্গে বমি জ্বর ইত্যাদি হয়ে থাকে।
কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম কিছু লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি হল প্রস্রাবের সঙ্গে
সামান্য পরিমাণ বা মোটামুটি পরিমাণে রক্ত আসা এছাড়া প্রস্রাবের রং যদি লাল
গোলাপি কিংবা বাদামি হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ এটি
একটি খুব ভালো মানের উপসর্গ যেখান থেকে বোঝা যাবে কিডনিতে সমস্যা হয়েছে।
মূত্রথলিতে যদি পাথর হয় সেক্ষেত্রে অনেক সময় বড় পাথরগুলো মূত্রথলির পথগুলো
আটকে দেয় যার ফলে সঠিক মাত্রায় প্রস্রাব হতে পারে না এবং মূত্রথলি
সম্পূর্ণরূপে খালি হয় না।
কিডনি ইনফেকশনের চিকিৎসা - কিডনি রোগের ভেষজ ঔষধ
নিয়মিত 300 মিলি লিটার পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করলে কিডনিতে
ইনফেকশন হওয়ার সমস্যা দূর করা সম্ভব হয়। প্রতিদিন কাঁচা রসুনের দুই থেকে তিন
কোয়া খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ থেকে নিজেকে দূরে রাখা
সম্ভব। রসুন এ এমন কিছু জীবাণু নাশক উপাদান বিদ্যমান থাকে যা কিডনির সুস্থতায়
কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রাকৃতিকভাবে কিডনিকে সুস্থ রাখতে কিছু ভেষজ উপাদান রয়েছে যা কিডনিকে
সম্পূর্ণ সুস্থ রাখে।সাধারণত কিডনি আমাদের গ্রহণ কৃত বিভিন্ন খাদ্য থেকে টক্সিক
পদার্থ অপসারণ করে শরীরে পরিশুদ্ধ প্রোটিন সরবরাহ করে আদা আমাদের কিডনিকে ভালো
রাখতে সাহায্য করে এছাড়া রসুন লাল মরিচ কিডনি সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে ভূমিকা
রাখে।
কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার - নষ্ট কিডনি ভালো করার উপায়
- খাবারের মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা করা উচিত তবে তরল খাবারের মধ্যে নারকেল পানি সবুজ চা এবং শুধু পানি পরিমাণে পান করা যেতে পারে।
- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সম্পৃক্ত মাছ খাওয়া যেতে পারে যা আমাদের বৃক্কের জন্য খুবই ভালো অপরদিকে মাছ-মাংস খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- খাবারের গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে ফল ও সবজি বিদ্যমান সবসময়ই থাকে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে ফল ও সবজি খাওয়া যেতে পারে এটি শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
- বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কেমিক্যাল ফলে ব্যবহার করা হচ্ছে সে ক্ষেত্রে অর্গানিক ফল খাওয়ার চেষ্টা করা উচিত অথবা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ওপরের আস্তরণ উঠিয়ে ফল খাওয়া যেতে পারে।
- আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের গুড এনজাইম কে বাড়িয়ে তোলার জন্য ধনেপাতা বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে এজন্য খাবারে ধনেপাতা রাখা উচিত।
- দুধ বা দুধ জাতীয় খাদ্য কিডনি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এই জন্য এটি নিয়মিত খাবার তালিকায় রাখা উচিত।
- নারকেলের পানি স্বাস্থ্যও ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক একটি রেমেডি যা কিডনি পরিষ্কার করতে সহায়তা করে থাকে।
- বিভিন্ন ধরনের হারবাল চাপ বা গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
অতিরিক্ত লবণ, চিনি, চর্বি যুক্ত খাবার কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
অন্যদিকে হাই পটাশিয়াম যুক্ত খাবার যেমন কলা, কমলালেবু, পালংশাক কিডনিকে
ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
এবং কিডনিকে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ
কমায়।
শেষ কথাঃ কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায় - কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
আপনারা যারা কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায় এবং কিডনি ড্যামেজের
লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া
আপনার যদি কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করার 20 টি উপায় এবং কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পোস্টটির
মাধ্যমে আমরা কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের
ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url