কোরবানির নিয়ম - কোরবানির নিয়ত
আপনি কি কোরবানির নিয়ম এবং কোরবানির নিয়ত সম্পর্কে জানতে চান? এই আর্টিকেলের
মাধ্যমে আমরা কোরবানির নিয়ম এবং কোরবানির নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করব। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী ছাগল ভেড়া বা দুম্বার বয়স কোরবানির জন্য
সর্বনিম্ন এক বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের কোরবানির বয়স ২ বছর এবং উটের বয়স
পাঁচ বছর হতে হয় কুরবানীর জন্য। চলুন জেনে আসি কোরবানির নিয়ম সম্পর্কে
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
সামর্থ্যবান সকল মানুষের উপর মহান আল্লাহতালা কোরবানি ওয়াজিব করে দিয়েছেন।
কোরবানি অবশ্য মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদতও বটে। আজকে আপনাদের
সঙ্গে কোরবানির নিয়ম এবং কোরবানির কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা করব।
আমাদের পাঠকদের মধ্যে অনেকেই প্রশ্ন করেন কোরবানির নিয়ম সম্পর্কে যা আমরা
বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
পেজ সূচিপত্রঃ কোরবানির নিয়ম - কোরবানির নিয়ত
কোরবানির নিয়ম - কোরবানির নিয়ত
ইসলামী শরীয়ত ও রীতিনীতি অনুযায়ী কোরবানির জন্য ছাগল ভেড়া বাদুমবার বয়স
সর্বনিম্ন এক বছর হতে হয় অপরদিকে গরু মহিষ এর বয়স দুই বছর হতে হয় এবং
উটের বয়স ৫ বছর হতে হয়। অপরদিকে দুম্বা যদি এক বছর না হয় কিন্তু এক বছর
হওয়ার মতো হৃষ্টপুষ্ট হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে সেই পশু কুরবানী দেওয়া যেতে
পারে উপরোক্ত উল্লেখিত পশুগুলো নর হোক বা মাদি কোরবানি দেওয়া জায়েজ
রয়েছে।
কোরবানির নিয়মের মধ্যে সবচেয়ে বড় নিয়ম হল পশু জবাই করার সময়
বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করা। এটি কে কোরবানির নিয়ম ও বলতে
পারেন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলেই ছুরি চালানোর নিয়ম ইসলামী বিধানে
রয়েছে অপরদিকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে যেন পশু জবাই করা না হয় সে
বিষয়টি খেয়াল রাখা অতীব জরুরী।
পশু জবাই করার ক্ষেত্রে একটি বিষয় খুবই গুরুত্ব দিয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে
সেটি হল পশুর খাদ্যনালী শ্বাসনালী আর দুই পাশে থাকা নালী যেন সুষ্ঠুভাবে
কাটা হয় তাহলেই শরীয়ত অনুযায়ী বিশুদ্ধ জবাই করা হবে। অর্থাৎ পশুকে কষ্ট
না দিয়ে এহসানের সাথে জবাই করার কথা বলা হয়েছে।
কোরবানির পশু শোয়ানোর নিয়ম - গরু জবাই করার নিয়ম
কোরবানির জন্য পশু শোয়ানোর পূর্বে মনে রাখতে হবে অবশ্যই পশুর মাথা কিবলার
দিকে হতে হবে অর্থাৎ পশ্চিম দিকে মুখ করে জবাই দিতে হবে পশুকে। ইসলামী
শরীয়ত অনুযায়ী পশুর বাম পাজরের ওপর দক্ষিণ দিকে মাথা দিয়ে কিবলামুখী করে
শোয়ানো উত্তম হিসেবে বিবেচিত।
জবাই করার সময় পশুর যেন কোন প্রকার কষ্ট না হয় সেই জন্য যে ছুরি দিয়ে
পশুকে জবাই করা হবে অবশ্যই তা আগে থেকে ভালোভাবে শান দিয়ে খুব ধারালো করে
রাখতে হবে যেন খুব দ্রুত এবং সহিসুদ্ধ ভাবে জবাই করা সম্ভব হয়। পশুর গলায়
ছুরি চালানোর সময় অবশ্যই বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলতে হবে শুধু
বিসমিল্লাহ বললে হবে না শরীয়ত অনুযায়ী বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলেই
শুরু করার নিয়ম কুরবানী।
অপরদিকে যারা কুরবানীর পশু জবাই করবেন বা ধরবেন তাদের অবশ্যই পবিত্র এবং
অজু অবস্থায় থাকতে হবে কারণ কুরবানী একটি পবিত্র কাজ।
গরু জবাই করার পদ্ধতি - গরু জবাই করার ছুরি
শুদ্ধভাবে কুরবানী করতে হলে সর্বপ্রথম কোরবানির সময় তিনটি অঙ্গ কেটে দিতে
হবে তার মধ্যে একটি হচ্ছে খাদ্যনালী দ্বিতীয় হচ্ছে শ্বাসনালী তৃতীয় হচ্ছে
দুই পাশের রগ যেন খুব দ্রুত প্রাণটা বের হয়ে যায় পশুর। যদি সঠিকভাবে এ
কাজগুলো করা হয় তাহলে গরু সর্বোচ্চ 10 মিনিট বা 15 মিনিটের মধ্যে নিস্তেজ
হয়ে পড়বে এবং এভাবেই জবাই করা সুন্নত।
গরু জবাই করার ছুরি সাধারণ ছুরির থেকে কিছুটা বড় হয়ে থাকে কারণ এটি একটি
বিশাল দেহের অধিকারী জীবকে কুরবানী করার জন্য ব্যবহৃত হবে। এছাড়া গরুর যেন
কষ্ট না হয় সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে এর জন্য ইসলামী শরীয়ত
অনুযায়ী জবাই করতে হবে তাহলে খুব দ্রুত গরু বা জবায়ের পশু নিস্তেজ হয়ে
পড়বে।
তবে অবশ্যই সকল ধাতু দিয়ে কুরবানীর ছুরি তৈরি করা যায় না কুরবানীর চুরি
অনেকক্ষণ যাবত ধার ধরে রাখার ক্ষমতা সম্পন্ন হতে হবে এজন্য ট্রাক এর
স্প্রিং ব্যবহার করে কোরবানির ছুরি বাড়ানো উত্তম।
ছাগল জবাই করার নিয়ম - জবাই কাকে বলে
জবাই করার সময় পশু যেন কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জবাই করার
হাতিয়ার বা ছুরি হতে হবে তীক্ষ্ণ ধারালো যেন খুব সহজে জবাই করা সম্পূর্ণ
হয়ে যায়। অনেকে আছে যারা গরুকে শোয়ানোর জন্য তার পুরো শরীর বেঁধে ফেলে
বা অমানবিক কার্যকলাপ শুরু করে। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী এগুলো সঠিক নয়।
তাই সঠিক নিয়মে অর্থাৎ গরুর সামনের দুই পা এবং পেছনে দুই পা বেঁধে
আলতোভাবে শুইয়ে দিয়ে জবাই পরিচালনা করতে হবে। ইসলামী আইন অনুযায়ী
কুরবানি বা জবাই করা একটি হালাল ইসলামিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতি সম্পর্কে বিভিন্ন
হাদিস ও উল্লেখ রয়েছে।
জবেহ করার মাসয়ালা
বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ বুখারী মুসলিম থেকে এসেছে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কুরবানীর পশু নিজে জবাই করেছেন।
অনেক ধরনের হাদিস থেকে উৎসাহ পাওয়া যায় যার যার কোরবানি নিজে করার জন্য
তবে অন্যের হাত থেকে কুরবানী করাও হালাল হবে এতে কোন ধরনের অসুবিধা নেই।
অন্যের হাতে কুরবানী করার মাধ্যমেও কোরবানি আদায় হয়ে যাবে এতে কোন
সন্দেহ নেই। বর্তমান সময়ে অনেক ব্যক্তি আছে যারা নিজের কুরবানী নিজে
করেনা। তার অন্যতম কারণ হলো তিনি কুরবানীর পদ্ধতি বিশুদ্ধতা ও নিয়ম
সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না কিন্তু কুরবানীর নিয়ম ও পদ্ধতি একেবারেই
সোজা।
কুরবানীর পশু জবাই করার পূর্বে কিছু বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
তার মধ্যে একটি হলও জবাই করার পূর্বে অবশ্যই পশুর বয়স হয়েছে কিনা
সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে । কোরবানি করার শুরুতে বিসমিল্লাহি আল্লাহু
আকবার বলতে হবে এবং আল্লাহর নামে কুরবানী করতে হবে।
শেষ কথাঃ কোরবানির নিয়ম - কোরবানির নিয়ত
আশা করি কোরবানির নিয়ম এবং কোরবানির নিয়ত সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান বা ধারণা
প্রদর্শন করতে পেরেছি। আপনারা যারা কোরবানির নিয়ম এবং কোরবানির নিয়ত
সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে।
এছাড়া কোরবানির নিয়ম এবং কোরবানির নিয়ত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই
পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোরবানির নিয়ম এবং কোরবানির
নিয়ত সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন
করতে পারেন।আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই
থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url