সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন - সিজারের পর শোয়ার নিয়ম
আপনি কি সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন সম্পর্কে জানতে চান? আজ আমরা আলোচনা করতে
চলেছি সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন সম্পর্কে। সিজারের পরে দাগ শুকানোর জন্য
সর্বনিম্ন ছয় সপ্তাহ সময় দিতে হবে এরপরেই কেবল দাগ মেশানোর জন্য ক্রিম
ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের পাঠকদের মধ্য থেকে অনেকেই প্রশ্ন করেন সিজারের
পর সেলাইয়ের যত্ন সম্পর্কে।
অনেকেই আছেন যারা সিজারের পর সেলাইয়ের যত সম্পর্কে অনেক চিন্তিত থাকেন। তবে কিছু
পদক্ষেপ ফলো করলে সিজারের পর শিরায় যত্ন নেওয়া খুবই সহজ এ সম্পর্কে আজকে আমরা
ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে আসি সিজারের পর সেলাইয়ের
যত্ন এবং সিজারের পর শোয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃ সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন - সিজারের পর শোয়ার নিয়ম
- সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন
- সিজারের পর খাবার তালিকা
- সিজারের পর ব্যাথা হলে করণীয়
- সিজারের কতদিন পর মাসিক হয়
- সিজারের সেলাই শুকানোর উপায়
- শেষ কথা
সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন - সিজারের পর শোয়ার নিয়ম
সিজারের সেলাই এর দাগ অনেকদিন পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ীভাবে থেকে যায় । এটি
প্রথম অবস্থায় একটু উঁচু হয়ে থাকে যত দিন যায় তত এটি হালকা এবং স্বাভাবিক
হতে শুরু করে। সেলাইয়ের দাগ শুকাতে সর্বনিম্ন ছয় সপ্তাহ দিতে হবে। এর
পরবর্তীতে দাগ মোচন এর জন্য ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
যেহেতু সিজারের পরে একটু লম্বা সময় হাঁটা বা নড়াচড়া খুব কম পড়ে সেজন্য
ঘুমানোর পূর্বে পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে পাকে একটু উঁচু রাখতে হবে। এতে পা
ফোলা বা পা ব্যথা অনেকটা কমে যাবে এবং ঘুম ভালো হবে। সিজার করানোর পর অনেক মা
তার সন্তানকে স্তনের দুধ পান করান না সাথে সাথে। সিজার করানোর পর তিন দিনের
মধ্যে স্তনে দুধ চলে আসে।
এ সময় স্থান বেথা হতে পারে এজন্য স্তনে হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে
শেখ দিতে পারেন এতে ব্যথা অনেকটা উপশম হতে পারে। এছাড়া প্রথম অবস্থায়
শিশুকে দুধ না দিলেও সে দুধ ফেলে দেওয়া বা বের করে দেওয়া উত্তম কারণ এতে
ব্যথা কম হয়। বর্তমান সময়ে অনেক মায়েরাই জানে না বুকে দুধ ফিডারে করে
খাওয়ানো যায় শিশুকে। ফিডারে করে ফ্রিজে দুধ রেখে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত তা
সংরক্ষণ করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
জিলকত মাসের রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
তবে অবশ্যই শিশুকে ঠান্ডা দুধ খাওয়ানো যাবে না দুধের টেম্পারেচার স্বাভাবিক
হলে সেই দুধ দেওয়া যেতে পারে শিশুকে।
সিজারের পর খাবার তালিকা - সিজারের পর করনীয়
প্রকৃতি প্রদত্ত সব ধরনের ফল ও শাকসবজিতে ভিটামিন এ ভিটামিন সি আয়রন
ক্যালসিয়াম ইত্যাদি ভরপুর থাকে। এই সমস্ত ফল ও শাকসবজি একজন সিজারকৃত মায়ের
খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। এ সকল ফলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হল মালটা , কমলা ,
আপেল , আঙ্গুর , লেবু ইত্যাদি। একজন সিজার কৃত মহিলার ক্ষেত্রে ফুলকপি
বাঁধাকপি কলমি শাক লাউ শাক সিম ইত্যাদি হওয়া খুবই প্রয়োজন।
এ ছাড়া ছয় সপ্তাহ প্রয়োজন হয় সিজারের কাটা দাগশুকানোর জন্য। ছয় সপ্তাহ
পরে থেকে কাটা দাগ মেশানোর জন্য বিভিন্ন তেল ও ক্রিম ব্যবহার করা যাবে । একজন
এমবিবিএস ডাক্তারের কথা অনুযায়ী সিজার একটি বড় অপারেশন। এই জন্য
অনেকেই সিজারের পরের টয়লেট করতে ভয় পান এবং এই সমস্যার সমাধান হলো প্রচুর
পরিমাণে পানি খেতে হবে এবং ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ওষুধ সেবন করতে
হবে। যার ফলে খুব সহজে এই টয়লেট সম্পূর্ণ হবে।
এছাড়া সিজারের পর রক্ত যেন জমাট বাঁধতে না পারে এজন্য হালকা হালকা হাঁটাচলা
করতে হবে। সিজারের পর অনেকের এনেস্থিসিয়া প্রভাব কাটার জন্য শরীর কাঁপুনি
দিয়ে ওঠে এমনকি জ্বর আসতে পারে এবং শরীরের নিচের দিকে বিশেষ করে পা অসাড়
হয়ে যায় অনেক সময় এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সিজারের পর ব্যাথা হলে করণীয় - সিজারের কতদিন পর ভারী কাজ করা যায়
সিজার কৃত মহিলা হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এতে মাংসপেশী
টান হয়ে থাকা শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে যে ব্যথা সৃষ্টি হয় তা অনেকটা কমে
আসে। এছাড়া তাপের কারণে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে যার কারণে প্রদাহ বা ব্যথা
অনেকটা কমে যায়। তবে কুসুম গরম পানির মধ্যে নিমের পাতা দিয়ে গোসল করলে আরো
ভালো হয়।
সিজারের পর মহিলাদের কোন ভারী কাজ করা যাবে না এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পানির
বালতি বা ভারি কোন কিছু তোলা। যদি ব্যায়াম করার ইচ্ছা হয় সেক্ষেত্রে এমন
ব্যায়াম করতে হবে যার কারণে পেটে যেন টান না পড়ে এমন প্রায় হয় মাস করতে
হবে। সিজারের ছয় মাস পর থেকে দৌড় ঝাপ লাফালাফি সাইকেলিং পায়ের পেশী
স্ট্রেচিং করা যেতে পারে তবে ছয় মাসের আগে এগুলো করলে নিজের ক্ষতি হতে পারে।
সিজারের কতদিন পর মাসিক হয় - সিজারের সেলাই শুকাতে কতদিন লাগে
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে সিজারের কতদিন পর মাসিক শুরু হয় এর একটি সঠিক উত্তর
হল সাধারণ প্রসবের এর ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে মেয়েদের নরমাল মাসিক শুরু
হয়ে যায়। তবে মায়েরা যদি নিয়মিত বুকের দুধ সন্তানকে না দেন সে ক্ষেত্রে
এটির সময়টা বদলে যেতে পারে। সিজারের সেলাই এর যত্ন নেওয়ার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো হালকা গরম পানি দিয়ে প্রতিদিন জায়গাটা পরিষ্কার
করতে হবে।
কিছুক্ষণ আলো বাতাস লাগাতে হবে এবং পরিষ্কার করার সময় যেন ঘর্ষণ না লাগে সেই
জন্য হালকা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া ঢিলাঢালা কাপড় পরা
এ সময় ভালো। কাটা স্থানে প্রথমের দিকে ফোলা এবং কালো দেখাতে পারে তবে এটিকে
ভয় পাওয়ার কোন কিছু নেই ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর এটি স্বাভাবিক রূপ পেয়ে চলে
আসবে।
সিজারের সেলাই শুকানোর উপায় - সিজারের পর সেলাই ফুলে যায় কেন
প্রতিদিন ব্যান্ডেজ খুলে পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে হালকা কুসুম গরম পানি
দিয়ে কাটা জায়গা পরিষ্কার করে নিতে হবে এরপরে ড্রেসিং করতে হবে, অবশ্যই
অ্যান্টিসেপটিক ইউজ করতে হবে এক্ষেত্রে। সিজারের পর সেলাই ফুলে যাওয়া এটি
একটি স্বাভাবিক বিষয় তবে ছয় থেকে সাত সপ্তাহের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ
স্বাভাবিক রূপে চলে আসে। সিজারের জায়গায় যদি লাল হয়ে যায় বা পুঁজ বের হয়
বা পানি বের হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এছাড়া
প্রথমের দিকে একটু অসস্তিবোধ হতে পারে সেলাইয়ের জায়গাতে।
শেষ কথাঃ সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন - সিজারের পর শোয়ার নিয়ম
আশা করি আপনাকে সিজারের পর সেলাই এর যত্ন সম্পর্কে ধারনা দিতে পেরেছি। আপনারা
সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন এবং সিজারের পর শোয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন
তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন এবং
সিজারের পর সেলাই শুকানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য
খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন এবং সিজারের পর সেলাই ফুলে যায় কেন এ সম্পর্কে কারো
কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন। আমাদের
ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url