আরবি হিজরি সনের সূচনা - আরবি হিজরী সন কত দিনে এক বছর হয়

অনেকেই আছেন যারা আরবি হিজরী সনের সূচনা জানেন না। আরবি হিজরী সন ইসলামী চন্দ্রপঞ্জিকা অনুসারে গণনা করা হয়ে থাকে সেই প্রাচীনকাল থেকে এটা এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। আরবি হিজরী সন জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে পড়ে না।

খ্রিস্টাব্দ ১ তারিখ যা মহরম মাসের এক তারিখ বা হিজরির মাসের পহেলা তারিখে শুরু হয় এবং ১৬ই জুলাই ৬২২ খ্রিস্টাব্দ তারিখে পড়ে বলে জানা যায়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর হিজরতের তারিখ নববর্ষের তারিখ নয়। এছাড়া আরবি হিজরী সনের মধ্যে রয়েছে ৩৫৪ থেকে ৩৫৫ দিন।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার অনুসারী এগনের মদিনা হিজরতের  ঐতিহ্যবাহী ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই আরবি মহরম মাসকে হিজরী সনের প্রথম মাস হিসাবে ধরা শুরু হয় এবং এর পর থেকেই এটি গণনা শুরু হয়েছিল। মহান আল্লাহতালার নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে তথা দিনের স্বার্থে পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামগণ মদিনায় হিজরত করেছিলেন।

এই হিজরত থেকেই হিজরী সনের সূচনা হয়েছিল বলে জানা যায় অনেক গ্রন্থ থেকে। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর রাঃ এর খেলাফতের সময়কালে গোটা আরব ভূখণ্ড ইসলামের খেলাফতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল যা ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলোর অন্যতম ঘটনা। হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) যিনি ছিলেন বসরার গভর্নর।

হঠাৎ একদিন একটি পত্রের মাধ্যমে খলিফা ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা কে জানান খলিফা তাদের কাছ থেকে যেসব চিঠি পাঠাচ্ছেন সেগুলোতে সন তারিখ উল্লেখ না থাকার কারণে তাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। এই ঘটনার পরে খলিফা হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ও একটি সন চালু করার চেষ্টা করেন পরবর্তীতে ১৬ ও হিজরী সনের সাবান মাসে খলিফা হযরত ওমর রাঃ একটি দাপ্তরিক পত্রের খসড়া পেশ করেন।

যেখানে এ পত্রে মাসের উল্লেখ ছিল কিন্তু সনের কোন উল্লেখ ছিল না বলে জানা যায়। পরবর্তীতে দৃষ্টি সম্পন্ন খলিফা হযরত ওমর রাঃ নিজেই সবাইকে প্রশ্ন করেন পরবর্তীতে কিভাবে বোঝা যাবে যে এটি কোন সনে পেশ করা হয়েছিল? এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সকল সাহাবায়ে কেরামগণ ও অন্যান্য শীর্ষ পর্যায়ের জ্ঞানীদের পরামর্শে হিজরতের 16 বছর পর দশই জুমা দল উলা মোতাবেক ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে হিজরী সন প্রবর্তনের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন বলে অনেক গ্রন্থ থেকে জানা যায়।

বুখারী মুসলিম এবং আবু দাউদ থেকে জানা যায় হিজরতের বছর থেকে সংগঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন হযরত আলী রাঃ এবং পবিত্র মহরম মাস থেকে ইসলামিক বর্ষ শুরু করার পরামর্শ প্রদান করেন হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু।

অনেক প্রাচীন পুঁথি থেকে জানা যায় হিজরী সন ইসলামী চন্দ্রপঞ্জিকা অনুসারে গণনা করা হয়ে থাকে। আরবি পঞ্জিকা মহরম মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর হিজরতের তারিখ নববর্ষের তারিখ নয় হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন এ ঘটনাকে স্মরণীয় রাখার জন্য হিজরী সাল গণনা সূচনা হয়।

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা এর শাসন আমলে ১৭ই হিজরী অর্থাৎ বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের প্রায় সাত বছর পর চন্দ্র মাসের হিসেবে এই এই চন্দ্রপঞ্জিকা প্রবর্তন করা হয়।

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা এর এর খিলাফতের এর সময় বিস্তৃত ভূখণ্ড ইসলামী খেলাফতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল বলে জানা যায়। ঐতিহাসিক গ্রন্থ আলবেরুনীর বর্ণনায় হযরত মুসা আশআরী রাঃ একটি পত্রে ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা কে জানান আপনি যে সকল পত্র বা চিঠি আমাদের কাছে পাঠাচ্ছেন সেগুলোতে তারিখ ও সন উল্লেখ না থাকার কারণে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

এই ঘটনার পর খলিফা ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা সন চালু করার প্রচেষ্টা করেন এরপরে আল্লাহ মা শিবলী নোমানি রাদিয়াল্লাহু তা'আলা এ বিষয়ে সুপ্রসিদ্ধ আল ফারুক গ্রন্থের উল্লেখ করেছিলেন হযরত ওমর রাঃ এর শাসনামলে ১৬ হিজরী সনের সাবান মাসে খলিফার কাছে একটি দাপ্তরিক পত্র পেশ করেন যার মধ্যে মাসের উল্লেখ ছিল কিন্তু বছরের সনের উল্লেখ ছিল না।

দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ও খলিফা হঠাৎ বলেন পরবর্তী সময়ে কিভাবে বোঝা যাবে যে কোন পত্র কোন সালের? পরবর্তীতে তিনি কিছু গুণী সাহাবায়ে কেরাম ও শীর্ষ পর্যায়ের জ্ঞানীগুণীদের পরামর্শে হিজরতের 16 বছর পর দশ জমা দয়াল ওলা মোতাবেক ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে হিজরী সন প্রবর্তনের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন।

বুখারী মুসলিম ও আবু দাউদ গ্রন্থ থেকে জানা যায় হিজরতের বছর থেকে সন গণনার পরামর্শ দিয়েছিলেন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এবং পবিত্র মহরম মাস থেকে ইসলামী বর্ষ শুরু করার পরামর্শ প্রদান করেছিলেন হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু। সর্বশেষে সকলে হযরত আলী রাঃ প্রস্তাবে ঐক্যমত পোষণ করেন।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর মক্কা থেকে মদিনা শহরে হিজরতের সময় থেকে ইসলামিক বর্ষপঞ্জিরা শুরু হয়। যদিও প্রকৃত হিজরত হয়েছিল আন্তঃকালীকালীন বর্ষপঞ্জিকা সফর ও রবিউল আউয়াল মাসের তথা নতুন স্ত্রীর বংশবৃন্দ মহরম ও শুরু হওয়ার অন্তত দুই মাস আগে।

হিজরতের কারণেই ইসলামী বর্ষ পঞ্জিকার নাম রাখা হয়েছিল হিজরী বর্ষ পঞ্জিকা এছাড়া এই মাসকে পৃথিবীর এর চারদিকে চাঁদের প্রদক্ষিণ করার গড় সময়কার হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। প্রাচীন নিয়ম অনুযায়ী ৩০ দিন ও ২৯ দিন মাস একে অপরের সাথে এর পরপর দুই মাস যোগ হয়ে ৫৯ দিনে পরিণত হয়। এই সময় কালে চন্দ্র পূরক পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।

আরবি হিজরি সনের সূচনা এবং আরবি হিজরী সন কত দিনে এক বছর হয় এ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা প্রদর্শন করতে পেরেছি। আপনারা যারা আরবি হিজরি সনের সূচনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া  মআরবি হিজরি সনের সূচনা এ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আরবি হিজরি সনের সূচনা সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন।আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।