জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ - জরায়ু ক্যান্সারের কারণ

আপনি কি জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ এবং এই ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে জানতে চান? জরায়ু ক্যান্সার সৃষ্টি হলে প্রথমের দিকে এর উপসর্গ বোঝা নাও যেতে পারে কিন্তু পরবর্তীতে অনিয়মিতভাবে মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হওয়া বা অল্প খেলে পেট ভর্তি লাগা পেটে অস্বস্তি লাগা গ্যাস বদহজম ইত্যাদি হলে বুঝতে হবে যারাতে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পাঠকের মধ্য থেকে অনেকেই প্রশ্ন করেন জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে আসি জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে।
জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ -  জরায়ু ক্যান্সারের কারণ
সাধারণত শারীরিক কিছু কারণে শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ এবং জরায়ু ক্যান্সার হলে করণীয় কি। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ এবং জরায়ু ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচবে এ বিষয়ে সম্পর্কে।

পেজ সূচিপত্রঃ জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ -  জরায়ু ক্যান্সারের কারণ

জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ -  জরায়ু ক্যান্সারের কারণ

জরায়ুর মুখের দিকে ক্যান্সারের লক্ষণ গুলি নিচে দেওয়া হলঃ পিরিয়ড চলাকালীন প্রচন্ড রক্তপাত হওয়া। সহবাসের পর অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া এবং ম্যানুফজের পরেও রক্তপাত হওয়া। সহবাসের সময় অস্বস্তি বোধ সৃষ্টি হওয়া। এছাড়া তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত যোনির স্রাব বের হওয়া বা নির্গত হওয়া। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব করা।
হিউম্যান পিপিলোমা ভাইরাসের কারণে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। একটি রিসার্চে দেখা গেছে ১০০ টিরও বেশি প্রজাতির এইচপি ভাইরাস রয়েছে পুরো বিশ্বে এর মধ্যে শুধুমাত্র হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের কারণেই ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এই হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর থেকে জরায়ুতে ইনফেকশন শুরু হয়।

জরায়ু ক্যান্সার হলে করনীয় - জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ

প্রাথমিক অবস্থায় যদি ক্যান্সার ধরা পড়ে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অপারেশন এবং ঔষধ সেবনের মাধ্যমে এটি ভালো করা সম্ভব। এই ক্যান্সারকে গর্ভাশয়ের ক্যান্সার বলা যায়। ক্যান্সার যদি জরায়ুর কলা অতিক্রম করে সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হলো ব্যথা শুরু হওয়া। এছাড়া ক্যান্সার যদি জরায়ুর ও কলা অতিক্রম করে তখন কেম থেরাপির সমন্বয়ে বা বিভিন্ন ধরনের বড় বড় অস্ত্রপাশার এর সমন্বয়ে চিকিৎসা করা হয়।

জরায়ু ক্যান্সার হলে প্রথম অবস্থাতে মেয়েরা মাসিকের একটি প্রক্রিয়া মনে করে। কিন্তু যখন সমস্যা সৃষ্টি হয় শরীরবৃত্তীয় তখন ক্যান্সার অনেকটা ছড়িয়ে পড়ে শরীরের।জরায়ু ক্যান্সার যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো 16 বছরের কম বয়সী বা ১৬ বছর বয়সী মেয়েরা। এছাড়া পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে বা পিরিয়ড শুরু হওয়ার এক বছরের মধ্যে যারা যৌন মিলন করেন তারা। 

যৌন সঙ্গীর বা স্বামীর যদি শরীরে ভাইরাস থাকে সেক্ষেত্রে এ সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যদি অধিক জনসঙ্গী থাকে সেক্ষেত্রেও এ সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পাঁচ বছরের অধিক সময় যদি পিল খাওয়া যায় বা শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকলে জরায়ু ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া এ রোগের আরো কিছু লক্ষণ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জনসঙ্গমের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কিছু রোগ যেমন  সিফিলিস গনোরিয়া ইত্যাদি যৌন মিলনে পথে রক্তপাত হাওয়া ইত্যাদি। যদি অনিয়ত মাসিক সৃষ্টি হয় বা দুই মাসিকের মধ্যে ও অনুমিতভাবে রক্তপাত হয়। এছাড়া সাদা স্রাব হওয়া অতিরিক্ত মাত্রায় দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়া ।

চাল ধোয়া পানির মতো সাদা স্রাব অথবা কোন সময় রক্ত মিশ্রিত সাদা স্রাব হওয়া দেখলে বুঝতে হবে ক্যান্সারের রোগ জরায়ুতে সংক্রমণ করেছে। জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে আশা করি ধারণা দিতে পেরেছে। জরায়ু ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় হলোঃ কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না। অধিক সন্তান প্রসব করা চেষ্টা করা। ধূমপান থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। যৌন প্রজনন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং সচেতন থাকা ।

একাধিক পুরুষের সঙ্গে জন সম্পর্ক সৃষ্টি করা যাবে না। বর্তমান সময় নয় থেকে ৪৫ বছর বয়সে নারীদের জরের ক্যান্সারের প্রতিরোধের টিকা প্রদান করা হয়ে থাকে সেটি গ্রহণ করা। ৩০ থেকে ৩৫ বছরের যে কোন নারীর প্রতি তিন বছর পর পর ভায়া টেস্ট করতে হবে। উপরের লক্ষণ গুলোর মধ্যে একাধিক লক্ষণ যদি আপনার শরীরে দেখা যায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ওষুধ সেবন করুন।

জরায়ু ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ - জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষা

জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো হলঃ
  • পিরিয়ড চলাকালীন অত্যাধিক রক্তপাত হওয়া ।
  • সহবাসের পর অনিয়মিতভাবে রক্তপাত হওয়া ।
  • মেনোপজ এর পরেও রক্তপাত সৃষ্টি হওয়া । 
  • সহবাসের সময় শরীরে অস্বস্তি বোধ হওয়া ।
  • জনি স্রাব তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত সৃষ্টি হওয়া ।
  • রক্তের সাথে জনিসরাফ নির্গত হওয়া ও প্রস্রাবের সময় তলপেট ব্যথা করা ।
একজন গাইনী বিভাগের নারী ডাক্তার তার চেম্বারে কলপোস্কপ পরীক্ষা করে থাকেন এ পরীক্ষার মাধ্যমে যোনিকে অতি সূক্ষ্ম ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। যোনির কোন স্থানে অস্বাভাবিক মনে হলো সেখান থেকে কোষ সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রক্রিয়াকে বলা হয় প্যাপ স্মেয়ার।

জরায়ু ক্যান্সার রোগের খাবার তালিকা - জরায়ু ক্যান্সার রোগীর ১০ টি লক্ষণ

ডিম মাছ মাংস তে প্রচুর পরিমাণে আমিষ বিদ্যমান রয়েছে যা শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করে থাকে। অনেকেই আছেন যারা আমি গ্রহণ করেন না তাদের জন্য প্রচুর পরিবারে মসুর ডাল ও মটরশুটি গ্রহণ করা উচিত কারণ এটি প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। পনির ও দুধের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ক্যান্সারের প্রাথমিক কিছু লক্ষণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য লক্ষণ গুলো হলো অনয়মিত মাসিক চক্র সৃষ্টি হওয়া , পা ফুলে যাওয়া , ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ,  এ ছাড়া প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে অক্ষমতা ও মলদ্বারে ব্যথা এবং রক্তপাত হওয়া। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে জরায়ু ক্যান্সার সৃষ্টি হলে খুব কম উপসর্গ দেখা যায় এজন্য প্রতি ছয় মাসে পুরো শরীর চেকআপ করা উত্তম।

জরায়ু ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে - জরায়ু ক্যান্সার কি ভালো হয়

অনেকেই মনে করে থাকেন ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ। আসলে সাধারণ ক্যান্সার গুলো তেমন মারাত্মক না। তবে বেশকিছু ক্যান্সার রয়েছে যেগুলো অনেক মারাত্মক যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। অনেকেই ক্যান্সারের নাম শুনে অনেক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এটি করা উচিত নয় বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক উন্নতি করেছে সাইটোপ্যাথলজি পরীক্ষা করে এ রোগ নির্ণয় করা যায়।
বর্তমানে যত জন ক্যান্সারে আক্রান্ত তার পঞ্চাশ শতাংশ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন ক্যান্সারের কারণে। ক্যান্সার হলে এটি নির্ণয় করতে করতে অনেকটা দেরি হয়ে যায় অতিরিক্ত সংক্রমণের কারণেই মৃত্যু ঘটে। তবে সঠিক সময়ে যদি চিকিৎসা করা যায় সেক্ষেত্রে জরায়ু ক্যান্সার ভালো করা সম্ভব। জরায়ু ক্যান্সার এমন এক ধরনের ক্যান্সার যার টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। এজন্য ক্যান্সার থেকে মুক্ত শরীর পেতে হলে সময়মতো টিকা গ্রহণ করতে হবে।

শেষ কথাঃ জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ -  জরায়ু ক্যান্সারের কারণ

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ এবং জরায়ু ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। আপনারা যারা জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ এবং জরায়ু ক্যান্সার কেন হয় এ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। এছাড়া  মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url