একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় - যে ১০টি কারণে মাসিক দেরিতে হয়
আপনি কি জানেন একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে? পিরিয়ড চলাকালীন
মহিলাদের তলপেটে যদি তিলের তেল বা নারকেলের তেল দিয়ে আলতো করে মাসাজ করা যায়
তাহলে মাংসপেশী খিচুনি অনেকটা কমে যায় যার ফলে ব্যথা থেকেও অনেকটা রেহাই
পাওয়া যায়। একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে
আলোচনা করতে চলেছি। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে আসি একদিনে মাসিক হওয়ার
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।
আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়। আমাদের
পাঠকদের মধ্যে থেকে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়
সম্পর্কে। একজন মেয়ে হিসেবে একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে
রাখা উচিত।
পেজ সূচিপত্রঃ যে ১০টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়
- একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়
- দ্রুত মাসিক হওয়ার ব্যায়াম
- প্রাকৃতিক উপায়ে মাসিক হওয়ার উপায়
- বন্ধ মাসিক চালু করার উপায়
- মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হলে করণীয়
- শেষ কথা
যে ১০টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়
শারীরিক বিভিন্ন কারণে পিরিয়ড সাময়িকভাবে বন্ধ হতে পারে অথবা দেরিতে
শুরু হতে পারে। নিচে যে ১০ টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় এ সম্পর্কে আলোচনা
করা হলোঃ
- অনেক সময় গর্ভবতী হলে পিরিয়ড দেরিতে হয়। পিরিয়ড দেরিতে হলে অবশ্যই একবার নিশ্চিত হয়ে নিবেন আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কি না।
- শারীরিক বিভিন্ন হরমোনের কারণেও অনেক সময় পিরিয়ড হতে দেরি হয়।
- মানসিকভাবে যদি অতিরিক্ত স্ট্রেস এর মধ্যে থাকেন সেক্ষেত্রে পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে।
- একজন নারী হঠাৎ গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন কিন্তু এ বিষয়ে তিনি জানেন না এবং কিছুদিন পরে যদি একা একাই এই মিশকারীর বা গর্ভপাত হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে পিরিয়ডের তুলনায় অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। এই প্রক্রিয়াকেও দেরিতে মাসিক হওয়ার মধ্যে ধরা হয়ে থাকে।
- একজন মহিলার সাধারণ ওজনের থেকে যদি ওজন কম হয় সেক্ষেত্রে মাসিকের ব্যাঘাত ঘটতে পারে এমনকি কিছুদিন মাসিক বন্ধ থাকতে পারে।
- জরায়ুতে যদি টিউমার সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে এটি মাসিকের স্বাভাবিক চক্রকে বাধা দিতে পারে।
- জন্যনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যেমনঃ পিল প্যাচ ইঞ্জেকশন এছাড়া আরও যে সকল জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি রয়েছে এগুলো ব্যবহারের ফল পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে বা পিরিয়ডের সময় পরিবর্তন হতে পারে।
- মনো নিউক্লিয়সিস ঠান্ডা শুদ্ধি গলার ইনফেকশন এ ধরনের সমস্যায় ঢুকলে পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে। এক্ষেত্রে ঘাবড়ানোর তেমন কিছুই নেই নিয়মিত ঔষধ সেবনের মাধ্যমে এটি ভালো হয়ে যাবে।
- অনেক সময় দেখা যায় এর বিভিন্ন ধরনের বড় স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন থাইরয়েডের সমস্যা ওভার সিনড্রোম এর কারণেও পিরিয়ড লেটে হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কে জেনে নিন
কাঁচা পেঁপে পিরিয়ড রেগুলার হতে সাহায্য করে। এটি জরায়ুর মাসল কে
সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া পরপর কয়েক মাস ধরে নিয়মিত
কাঁচা পেঁপের রস খেলে এটি শরীরের সঠিক সময় পিরিয়ড হওয়ার সক্ষমতা
বাড়িয়ে দেয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে পিরিয়ড চলাকালীন পেঁপে না খাওয়াই
ভালো।
শুধুমাত্র নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রিয়ড চালানোর ক্ষেত্রে যে পেঁপে ভূমিকা
রাখে এমনটি নয়। পেঁপে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ক্যান্সার
প্রতিরোধে বিশেষভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করার থাকে। এছাড়া ত্বককে মসৃণ
করতে সাহায্য করে। সাধারণত রান্নার ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসাবে আমরা হলুদ কে
ব্যবহার করে থাকি।
তবে প্রাচীনকাল থেকেই চিকিৎসার বিভিন্ন ধরনের কাজে হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে।
এটি পিরিয়ডের সঠিক সময় নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং শারীরিক হরমোন
ব্যালেন্স রাখতে ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কাঁচা হলুদের এমন এক ধরনের
প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যার ফলে জরায়ুর মাংসপেশী সংকোচন এবং প্রসারন
নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
এছাড়া কাঁচা হলুদে এমন একটি বিশেষ অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ রয়েছে যা
পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। নিয়মিতভাবে এক কাপ দুধে চা
চামচের চার ভাগের একভাগ হলুদ গুঁড়ো দিয়ে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেয়ে
দেখুন এটি শরীরের হরমোনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করবে পাশাপাশি নিয়ম
অনুযায়ী পিরিয়ড হতেও সাহায্য করবে।
অ্যালোভেরা প্রাচীনকাল থেকে রূপচর্চার পাশাপাশি মাসিক নিয়ন্ত্রণেও
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। অ্যালোভেরা শরীরের হরমোনাল ড্যামেজ
সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে। শরীরের হরমোনের সমস্যা দূর করতে এবং
নিয়মিত সঠিক সময় পিরিয়ড হওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এলোভেরার
শরবতের সঙ্গে হালকা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে পিরিয়ড চলাকালীন অ্যালোভেরার রস অ্যালোভেরার জুস
কোনটি খাওয়া যাবেনা।
দ্রুত মাসিক হওয়ার ব্যায়াম - তাড়াতাড়ি মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়
একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
দারচিনি শরীরের জন্য খুব কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক রেমেডি। এটি নিয়মিত
চায়ের সঙ্গে বা লেবুর রসের সঙ্গে গুঁড়ো করে যদি খাওয়া যায় তাহলে
পিরিয়ডের ব্যথা কমে এবং নিয়ম অনুযায়ী পিরিয়ড হয়। খাদ্য তালিকায় ফল ও
সবজি রাখতে হবে এর ফলে ফল ও সবজিতে থাকা ভিটামিন শরীরের হরমোনাল ড্যামেজ
দূর করে শরীরকে সুস্থ এবং সুগঠিত।
এমন কিছু খাবার রয়েছে যা পিরিয়ড আগে হতে সাহায্য করে তবে একটি বিষয়
অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে এ ধরনের খাবার কোন কোন ক্ষেত্রে গর্ভপাতেরও
কারণ হতে পারে। বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে যদি পিরিয়ডের অসময়ে হয়ে যায়
তাহলে সর্বপ্রথম আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েন এর নিশ্চিত হন যে আপনি
অন্তর সত্তা না ।
এর পরেই আপনি এমন খাবার খেতে পারেন যে খাবারে দ্রুত পিরিয়ড হতে সাহায্য
করে। পার্সলে এবং জিরায় এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যার কারণে
মাসিকের সময় দ্রুত এগিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করে এই দুই প্রাকৃতিক
রেমেডি। মাসিক চক্রকে প্রাকৃতিকভাবেই দ্রুত নিয়ে আসার পাশাপাশি মাসিকের
সময় বৃষ্টি হওয়া পেটে ব্যথা ও অস্বস্তি দূর করে থাকে আজওয়েন।
নিয়মিতভাবে প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ আজওয়াইন দানা এক গ্লাস পানিতে
ফুটিয়ে এক চা-চামচ গুঁড় অথবা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত সেবন করতে পারেন
নিজেই উপকার বুঝতে পারবেন।
প্রাকৃতিক উপায়ে মাসিক হওয়ার উপায় - দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়
সময় অনুযায়ী পিরিয়ড হওয়ার জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ
অ্যাপেল ভিনেগার মিশিয়ে খাবার পূর্বে খেতে পারেন। দেরিতে মাসিক হওয়ার
প্রতিকার হিসাবে এর এক কাপ পানিতে এক চা চামচ মিহি আদা সিদ্ধ করে সেই পানির
সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেতে পারেন।
অনেক সময় দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় খুঁজতে গিয়ে অনেকেই অস্বাস্থ্যকর
বিভিন্ন কেমিক্যালযুক্ত ওষুধ সেবন করেন এবং এর সাইড ইফেক্ট হিসেবে অসুস্থ
হয়ে পড়ে। আপনি কি জানেন ঔষধ সেবনের মাধ্যমে নয় প্রাকৃতিকভাবেই মাসিক
দেরি হওয়া দূর করা যায়? প্রকৃতি থেকে এমন কিছু উপাদান পাওয়া যায় যার
মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে।
দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে মাসিক হওয়ার জন্য আদা
জিরা আজওয়াইন খেতে পারেন এগুলো মাসিকের সময় নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা
রাখে।
বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - মাসিকের ব্যাথা কমানোর উপায়
বন্ধু মাসিক চালু করতে হলে এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ আপেল ভিনেগার
মিশিয়ে প্রতিদিন খাওয়ার আগে খাবেন তাহলে আপনার মাসিকের বন্ধ সাইকেল
পুনরায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে চালু হয়ে যাবে। মাসিকের ব্যথা কমানোর উপায়
গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো একটি পিরিয়ডের সময় তলপেটে নারিকেল বা তিলের তেল
মেসেজ করা এটি মাংসপেশীর খিচুনি কমায়।
এছাড়া এটি ব্যথার উপশমে উপকারী হিসাবে প্রমাণিত। হারবালটি শরীরের
জন্য খুব উপকারী হিসাবে বিবেচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে আদা লং ফুটন্ত পানির
মধ্যে ছেড়ে দিয়ে পাঁচ মিনিট ফুটানোর পরে কুসুম কুসুম গরম পানি পান করলে
এটিও মাসিকের ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে অনেকটা কাজে দেবে।
মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হলে করণীয় - পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়
মাসিকের সময় পেটে ব্যথা হলে করণীয় কাজগুলোর মধ্যে একটি হলো তলপেটে নারকেল
তেল অথবা তিলের তেল মেসেজ করতে পারেন। এতে ব্যথা অনেকটা সেরে যায়। এছাড়া
হারবালটি পান করতে পারেন। এটি মাসিকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে পিরিয়ড চলাকালীন ইন আদা গোলমরিচ দেওয়া রচা পান করতে
পারেন এতে ব্যথা অনেকটা প্রশমিত হয়।
পবিত্র কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহতালা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন সূরা
ফাতেহাকে প্রতিটা রোগের শেফা বলা হয়েছে। মাসিকের ব্যথা হলে প্রথমে
বিসমিল্লাহ পড়ে তিনবার সূরা ফাতেহা পড়তে হবে এরপর পেটে ফু দিতে হবে অথবা
পানিতে ফু দিয়ে সেই পানি খেলে ইনশাল্লাহ মাসিকের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া
যাবে।
বিশ্বনবী নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এরশাদ করেন তোমরা যদি
অতিরিক্ত মাসিকের ব্যথা অনুভব করো সে ক্ষেত্রে তোমরা সূরা ফাতিহা পড়ে
তোমাদের তলপেটে ফু দিবে।
শেষ কথাঃ যে ১০টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়
প্রিয় পাঠক আজ আমরা একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় নিয়ে আজকের আর্টিকেল তৈরি
করেছি। আমাদের এই আর্টিকেলটিতে একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করা
হয়েছে বিস্তারিতভাবে। আশাকরি, আমাদের এই একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় এর
পোস্ট আপনার ভালো লাগবে এবং এই পোষ্ট করার পরে আপনি উপকৃত হবেন। এই ধরনের আরও
নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন, ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url