বৃক্ক ভালো রাখার উপায় - বৃক্ক ভালো রাখতে কি খাওয়া উচিত
আপনি কি জানেন বৃক্ক ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে? বৃক্ক ভালো রাখতে হলে সঠিক ওজন
রাখতে হবে শরীরের এছাড়া নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ পরিমিত ঘুম এবং কিছু নিয়ম-নীতি
অনুসরণ করে চলতে হবে। আমাদের পাঠকদের মধ্য থেকে অনেকেই আমাদের প্রশ্ন করেন
বৃক্ক ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে। আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব বৃক্ক ভালো
রাখার উপায় সম্পর্কে।
জীবন কিছু সঠিক নিয়মের মধ্যে পরিচালনা করলে বৃক্ষ ভালো রাখা সম্ভব। আজকের
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো বৃক্ক ভালো রাখার উপায়।বৃক্ক ভালো রাখার উপায়
সম্পর্কে সঠিক তথ্য যদি অর্জন করতে পারেন তাহলে সহজে বৃক্কতে রোগ প্রবেশ করতে
পারবে না।
পেজ সূচিপত্রঃ বৃক্ক ভালো রাখার উপায় - বৃক্ক ভালো রাখতে কি খাওয়া উচিত
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আজকে আলোচনা করা হবে বৃক্ক ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে। একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হিসাবে বৃক্ক ভালো রাখার
উপায় সম্পর্কে যথাযথ ধারণা রাখা উচিত। বর্তমান সময়ে জীবন যাপনের মধ্যে
যদি একটু পরিবর্তন আনা যায় ও সতর্ক থাকা যায় সেক্ষেত্রে কিডনির সমস্যার
মত বড় বড় রোগ থেকে বিস্তার পাওয়া যায়।
আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে সঠিক খাদ্য রাখলে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার
মাধ্যমে কিডনি ভালো রাখার সম্ভব। বৃক্ক ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে অবগত
হতে চাইলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।আজকে এই পুরো আর্টিকেলের
মাধ্যমে আলোচনা করা হবে বৃক্ক ভালো রাখার উপায় , বৃক্ক ভালো রাখতে
কি খাওয়া উচিত, বৃক্ক ইনফেকশন হলে করণীয় , কিডনি ভালো থাকে
কিভাবে ইত্যাদি সকল বিষয় এ।
বৃক্ক ভালো রাখার উপায় - বৃক্ক ভালো রাখতে কি খাওয়া উচিত
আমাদের পুরো শরীরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে একটি হলো
কিডনি। বৃক্ক কিছুটা মানব শরীরের ছাঁকনিরূপে কাজ করে এটি রক্ত থেকে বর্জ্য
নিষ্কাশন করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন ধরনের মসলাযুক্ত ও বাইরের খাবার খেয়ে থাকি এছাড়া কোন
নিয়ম নীতি না মেনে খাদ্য খাওয়া ও ভুল জীবন যাপনের ফলে কিডনিতে বিভিন্ন
সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এখন আমরা কিছু বৃক্ক ভালো রাখার উপায়
সম্পর্কে আলোচনা করব। এই উপায় গুলো মেনে চললে ঘরোয়া ভাবে আপনি কিডনি ভালো
রাখতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক উপায় গুলোঃ
- প্রচুর পানি পান করতে হবে
- পুষ্টিকর জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে
- পরিমিতভাবে ব্যায়াম করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিদিন
- ধূমপানের অভ্যাস থাকলে অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে
- কিডনির জন্য অধিক ক্ষতিকর ব্যথার ওষুধ তাই ব্যথার ওষুধ বর্জন করতে হবে
- রক্তের শর্করা সৃষ্টি হয় এমন খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে
-
বাইরের ভাজাপোড়া খাদ্য থেকে নিজেকে এড়িয়ে রাখতে হবে
লবণ চিনি চর্বিযুক্ত খাদ্য পারতপক্ষে এভয়েট করে চলার চেষ্টা করতে হবে এটি
কিডনির বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়তা করে। অপরদিকে কলা কমলা লেবু পালং
শাক নিয়মিত খেলে এটি কিডনি ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত
এক্সারসাইজের মাধ্যমে শরীরের বর্জ্যগুলো নিষ্কাশন হয় সহজেই এবং কিডনির উপর
অতিরিক্ত চাপ পড়ে না তাই কিডনি ভালো রাখতে নিয়ম করা উচিত।
বৃক্ক ইনফেকশন হলে করণীয় - কিডনি ভালো থাকে কিভাবে
বিশেষজ্ঞদের মতে শরীরের বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ
কিডনিকে ধরা হয়। বৃক্কে ইনফেকশন হলে বা কোন কারণে সংক্রমিত হলে শরীরে নানা
সমস্যা শুরু হয়ে যায়। এই সমস্যার কারণে শরীর আস্তে আস্তে ভিতর থেকে ড্যামেজ
হতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে বৃক্কে কোন ধরনের রোগ দেখা দিলে
এটির নির্দিষ্ট কোন উপসর্গ দেখা যায় না। বৃক্ক ইনফেকশন হলে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং কিছু নিয়ম অনুসরণ করে জীবন যাপন করতে হবে।
তবে কিছু ছোট ছোট উপসর্গ রয়েছে যা দেখলে অবশ্যই কিডনি বিষয়ে সচেতন হতে হবে
এর মধ্যে একটি হল মুখ বা চোখের কোণে যদি হঠাৎ ফোলা ভাব সৃষ্টি হয় তাহলে
চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কিছুক্ষণ পরপর অতিরিক্ত প্রস্রাব এর চাপ সৃষ্টি
হলে অথবা হাত-পা পিঠের পেশীতে ঘনঘন খিঁচুনি হলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে
হবে। কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে কিডনি ভালো রাখা যায়। কিডনি ভালো রাখার উপায়
গুলোর মধ্যে অন্যতম হলোঃ
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- ধূমপান ত্যাগ করতে হবে
- ব্যথার ওষুধ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে
- রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে হবে
- টাটকা ফলমূল খেতে হবে
- আমিষ জাতীয় খাদ্য পরিমিতভাবে খেতে হবে
- ভাজা পড়া খাওয়া যাবে না
- ভিটামিন সি যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে
বৃক্ক ড্যামেজের লক্ষণ - দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষণ
বৃক্ক ড্যামেজের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। অপরদিকে
দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো কি কি সেগুলো হলঃ
- শরীর ফুলে যাওয়া
- মুখমন্ডল ভুলে যাওয়া
- প্রস্রাব এর পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা কম হওয়া
- প্রস্রাবের সময় লাল রক্ত বের হওয়া
- কোমরের দুইপাশে প্রচন্ড ব্যথা করা
- তলপেটে ব্যথা করা
- রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া
- প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হওয়া
উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলোর যেকোনো একটি সমস্যা শরীরে দেখা দিলে বুঝতে হবে
যে কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। এ সকল রোগের চিকিৎসা করার কয়েক বছর পরও যদি এ
রোগ ভালো না হয় সেক্ষেত্রে আস্তে আস্তে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে
থাকে। তখন এই পর্যায়কে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বলা হয়।
কিডনি পাথরের লক্ষণ - কিডনিতে পাথর হলে কি খেতে হবে
এখন আমরা আলোচনা করব কিডনিতে পাথরের লক্ষণ সম্পর্কে। যে সকল উপসর্গ দেখা
গেলে বুঝতে হবে যে কিডনিতে পাথর হয়েছে সেই লক্ষণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- প্রস্রাবে রক্ত দেখা গেলে
- অতিরিক্ত গা গোলালে বা বমি ভাব হলে
- মাত্রার চেয়ে কম প্রস্রাব হলে
- প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করলে
- ঘন ঘন প্রস্রাব এর চাপ সৃষ্টি হলে
- স্বাভাবিক একটি লক্ষণ হল জ্বর ও সর্দি হওয়া ঘন ঘন
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিনের খাদ্যে উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত সর্বনিম্ন দুইটি
খাবার রাখতে হবে। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাদ্য কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই
কমিয়ে দেয়। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এক কাপ করে দুধ খেতে পারেন এক কাপ দুধে
প্রায় ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম বিদ্যমান থাকে।
কিডনির জন্য সবচেয়ে ভালো হলো পালং শাক , স্ট্রবেরি , গমের ভুষি , বাদাম ,
চা ইত্যাদি। কিডনির অনেক সমস্যা থেকে শরীরকে রক্ষা করে থাকে এভোকাডো এবং
আনারস। এভোকাডো ও আনারস এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস পটাশিয়াম এবং
সোডিয়াম।
কিডনি পাথর দূর করার উপায় - কিডনি নষ্ট হওয়ার কারণ
কিডনি পাথর দূর করার উপায় উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম উপায় হলোঃ
প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ফাস্ট ফুড জাতীয় খাদ্য থেকে নিজেকে
দূরে রাখতে হবে এছাড়া যে সকল খাদ্য শরীরের ক্ষতি সাধন করে এ সকল খাদ্য
থেকে বিরত রাখতে হবে শরীরকে। নিচে কিডনি পাথর দূর করার উপায় দেওয়া হলোঃ
- পানি পান করতে হবে
- তুলসী পাতার রস সেবন করতে হবে
- পাতি লেবুর রস খাওয়া যেতে পারে
- ডালিম এর রস খেতে হবে
- আপেল আপেল খেতে হবে
- মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে হবে
- নিয়মিত সকালে কালিজিরা খেতে হবে
শরীরে যে উপসর্গ গুলো দেখলে বুঝতে হবে যে কিডনির ড্যামেজ হতে চলেছে সে
উপসর্গ গুলো হলঃ
- বমি বমি ভাব হওয়া।
- তলপেটে ব্যথা করা।
- পেটের ২ পাশে ব্যথা করা।
- প্রস্রাব করতে গেলে ব্যাথার সৃষ্টি হওয়া এবং রক্ত বের হওয়া।
- অতিরিক্ত প্রস্রাব এর চাপ সৃষ্টি হওয়া।
- প্রস্রাবে বসলে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রস্রাব না হওয়া।
- দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হওয়া
এখন আমরা জানবো যে সকল কারণে কিডনিতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে সেই সকল
বিষয়ে। কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এটিতে সমস্যা সৃষ্টি হলে
শরীরে অন্যান্য রোগ সৃষ্টি হতে শুরু করে।
কিডনিতে সমস্যা সৃষ্টির কারণ গুলো হলঃ
- দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাবকে চেপে রাখা
- অতিরিক্ত লবণ খাওয়া
- অতিরিক্ত চা-কফি সেবন করা
- ব্যথার দর্শক ওষুধ এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া
- অতিরিক্ত হারে প্রোটিন গ্রহণ করা
- অ্যালকোহল গ্রহণ করা
- ধূমপান করা
শেষ কথাঃ বৃক্ক ভালো রাখার উপায় - বৃক্ক ভালো রাখতে কি খাওয়া উচিত
আশা করি বৃক্ক ভালো রাখার উপায় এবং কিডনি ভালো থাকে কিভাবে এ সম্পর্কে
যথাযথ ধারণা প্রদর্শন করতে পেরেছি। আপনারা যারা বৃক্ক ইনফেকশন হলে করণীয় এবং
বৃক্ক ভালো রাখতে কি খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের
পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া বৃক্ক ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানতে
চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বৃক্ক ভালো রাখার উপায় এবং বৃক্ক ভালো রাখতে কি খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে কারো
কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন।আমাদের
ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url