দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম - দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন

আপনি কি জানেন দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম সম্পর্কে ? দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এর সম্পর্কে জেনে নিন। ইসলামিক আইন অনুযায়ী প্রথম বিয়ের করার পরে দাম্পত্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকা অবস্থায় স্ত্রী যদি আবার দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাহলে সেই দ্বিতীয় বিবাহ ইসলামী আইন অনুযায়ী অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। চলুন বিস্তারিতভাবে যে মাসে দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম এবং দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন সম্পর্কে।
দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম - দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন
আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম এবং দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন। আমাদের পাঠকদের মধ্যে থেকে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম সম্পর্কে ।

পেজ সূচিপত্রঃ দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম - দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন

দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম - দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন

দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করতে হলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। সাংসারিক বা শারীরিক বিভিন্ন কারণে স্ত্রীরা বিবাহ বিচ্ছেদ করে থাকে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে শরীয়ত অনুযায়ী যথাযথ আইন মেনে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে হবে । ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে অনুযায়ী এ প্রথম স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদানপূর্বক 90 দিন ইদ্দত পালন করার পরে তালাক কার্যকর হয়।

90 দিন ইদ্দত পালন করার পরে মহিলা আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন।  মুসলিম পরিবারের আইন অনুযায়ী প্রথম স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবন থাকা অবস্থায় যদি কোন মহিলা পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাহলে দ্বিতীয় বিবাহ আইন বহির্ভূত হবে এবং অকার্যকর বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।
স্ত্রী যদি দ্বিতীয় বিবাহ করতে চায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে প্রথম স্বামীর সঙ্গে যথাযথ আইন মেনে বিচ্ছেদ করতে হবে এবং ইদ্দত পালনের পরেই সে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

দ্বিতীয় বিয়ের আবেদন - দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে কুরআন কি বলে

কোন ব্যক্তি যদি একটি স্ত্রী থাকা অবস্থায় আরেকটি বিয়ে করতে চাই তাহলে তাকে ইসলামী আইন অনুযায়ী সেই স্ত্রীর পর অনুমতি গ্রহণ করে দ্বিতীয় বিয়ে করতে হবে। যদি স্ত্রী তাকে বিয়ের অনুমতি প্রদান করে তাহলে সে ব্যক্তি বিয়ে করতে পারে। কেননা যদি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোন পুরুষ বিয়ে করে সে ক্ষেত্রে শরীয়ত অনুযায়ী এটি ব্যভিচার বলে গণ্য করা হবে।

মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন তোমার স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা হারাম করা হয়েছে তোমাদের জন্য (এখানে সধবা নারীর কথা বলা হয়েছে তবে নিজ স্ত্রীর কথা ভিন্ন এখানে)। এই বিধান আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপর ফরজ করেছেন সূরা নিসা আয়াত নাম্বার ২৪। অনেকের মনে এখন প্রশ্ন আসতে পারে দ্বিতীয় বিয়ের কারণে প্রথম বিয়ের সম্পর্ক কি হারাম হয়ে যাবে?

যদি কোন পুরুষের একটি স্ত্রী থাকে এবং সেই পুরুষ যদি বিবাহ বন্ধনে পুনরায় আবদ্ধ হতে চায় সেই পুরুষকে অবশ্যই তার স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য। অনুমতি পাওয়ার পরে পুরুষ যদি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তাহলে পুরুষ চাইলে একসাথে দুই স্ত্রীর সাথেও সংসার স্থাপন করতে পারে।

কিভাবে দ্বিতীয় স্ত্রী হওয়া যায় - দ্বিতীয় বিয়েতে সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি কেন

প্রতিটি বর্বর জীবনে স্বপ্ন থাকে একবার বিয়ের পরে সারা জীবন যেন এই সম্পর্কটা অটুট রাখতে পারে দুইজনায়। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যে দাম্পত্য জীবনে প্রবেশের পর থেকে অমৃত পর্যন্ত একসঙ্গে বসবাস করেছেন অনেক দম্পতি।
তবে অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের এর স্বামী বিয়োগ বিবাহ কলহ দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেকেই সিদ্ধান্ত নেন দ্বিতীয় বিবাহের। প্রতিটি মুসলিমদের জীবনে বিবাহ করা ফরজ তবে বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বিবাহ ও একটি আইনি প্রক্রিয়া দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে সর্বপ্রথম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন অনুযায়ী করতে হবে এবং এরপরে দ্বিতীয় বিয়ের কার্যক্রমের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। 

একটি রিসার্চে দেখা গেছে বিবাহ বিচ্ছেদের পরে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ এবং ভাবের আদান-প্রদান টা একটু বেশি মধুর হয়ে থাকে। এর কারণ হিসাবে বিশেষজ্ঞরা বলেন প্রথম স্ত্রীকে হারিয়ে একজন পুরুষ অনুভব করে সঙ্গিনী ছাড়া একাকীত্ব একটি জীবনের। এই জন্য পরবর্তী নতুন জীবনে সেই ভুলটা একজন পুরুষ আর করতে চায় না।

এই কারণে দ্বিতীয় স্ত্রীকে অনেক বেশি আপন করে নেন পুরুষরা এবং নির্ভরশীলতার দিক থেকে অনেক টা দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতি ডিপেন্ডেবল হয়ে পড়েন পুরুষরা সাংসারিক এবং নিজের জীবনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে।

মেয়েরা কি দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারে - স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে

বিভিন্ন কারণে একটি মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। মেয়েদের বিবাহ বিচ্ছেদের পর পুনরায় বিয়ে করতে হলে মুসলিম আইন অনুযায়ী তিন মাস ইদ্দত পালন করতে হয়। এ সময় তারা বিয়ে করতে পারে না এবং তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে মেয়েরা দ্বিতীয় বিয়েতে বসতে পারে। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে কোন পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে না এবং এটি যদি করে সেক্ষেত্রে সেই পুরুষ ফৌজদারী অপরাধের মধ্যে লিপ্ত হয়েছে।

ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী কোন পুরুষ যদি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করতে হবে অথবা সে যদি একই সাথে দুই নারীর সঙ্গে সংসার করতে চায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে প্রথম স্ত্রীর পরামর্শ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং অনুমতি নিতে হবে।

দ্বিতীয় বিয়ে সুখ না কষ্টের কারণ - বহু বিবাহের কুফল

বিশেষজ্ঞদের মতে প্রথম বিয়ের তুলনায় দ্বিতীয় বিয়েতে সুখী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেশি থাকে। তবে পুরুষদের বা মহিলাদের জারি হোক না কেন প্রথম বিয়ের অভিজ্ঞতা দ্বিতীয় বিয়ে টিকিয়ে রাখতে অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন পুরুষ বা মহিলা যে হোন না কেন প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদের পরে তারা যে ভুলগুলো প্রথম বিয়েতে করছিল তা থেকে দ্বিতীয় বিয়েতে বিরত থাকার চেষ্টা করে।

সঙ্গিনীর প্রতি একজন আরেকজনের ভালোবাসা প্রকাশ করার ট্রাই করেন দ্বিতীয় বিয়েতে সবচেয়ে বেশি পুরুষেরা। অতীতের ভুলগুলো সংশোধন করে পুনরায় নিজের জীবনকে গুছিয়ে নিতে সাহায্য করে দ্বিতীয় বিয়ে। এইজন্য বলা যেতেই পারে দ্বিতীয় বিয়ে ছেলে বা মেয়ে যেই হোক না কেন তার জীবনে সুখ বয়ে আনে।

বহুবিবাহের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতে পুরুষ যদি অনেকগুলো বিয়ে করে ফেলেন তাহলে মারাত্মক কিছু রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে সে পুরুষের। তার মধ্যে অন্যতম হলো বন্ধত্ব। মেয়েদের ক্ষেত্রে যদি কোন মহিলা অনেকগুলো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
একাধিক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক মেলামেশার ফলে কিছু মারাত্মক শারীরিক রোগ সৃষ্টি হতে পারে।শারীরিক সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো জরায়ু ক্যান্সার। প্রস্রাবে ইনফেকশন ইত্যাদি।

শেষ কথাঃ দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম - দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন

আশা করি দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম এবং দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন সম্পর্কে যথাযথ ধারণা প্রদর্শন করতে পেরেছি। আপনারা যারা দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম এবং দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া  দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম এবং দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম এবং দ্বিতীয় বিয়ে করার আইন সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন।আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url