রিজিক বৃদ্ধির আমল - রিজিক বৃদ্ধির দোয়া
আপনি কি জানেন রিজিক বৃদ্ধির আমল সম্পর্কে? রিজিক বৃদ্ধির আমল সম্পর্কে বিভিন্ন
পুরাতন কিতাব এ উল্লেখ রয়েছে বিভিন্ন কথা। রিজিক বৃদ্ধির জন্য এক ধরনের আমল
রয়েছে যা, সুবহে সাদিকের সময় ১০০ বার করে পাঠ করলে রিজিকে বরকত হয়। একজন
ঈমানদার মুসলিম হিসাবে রিজিক বৃদ্ধির আমল সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
আজ এই আর্টিকেলে আপনারা রিজিক সম্পর্কে হাদিস, রিজিক নিয়ে আল্লাহর
বাণী, রিজিক বৃদ্ধির আমল, রিজিক নিয়ে হাদিসে কুদসি, রিজিকের সূরা এবং রিজিক
সম্পর্কিত যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধির আমল সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।
রিজিক বৃদ্ধির আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে থাকলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন শেষ
পর্যন্ত।
পেজ সূচিপত্রঃ রিজিক বৃদ্ধির আমল - রিজিক বৃদ্ধির দোয়া
- হালাল রিজিক বৃদ্ধির দোয়া
- রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী
- রিজিক বৃদ্ধির আমল
- রিজিক কত প্রকার
- রিজিক নিয়ে চিন্তা
- শেষ কথা
হালাল রিজিক বৃদ্ধির দোয়া - রিজিক বৃদ্ধির জিকির
মুসলিম হিসাবে হালাল রিজিক বৃদ্ধির দোয়া এবং রিজিক বৃদ্ধির জিকির সম্পর্কে
সঠিক ধারণা ট্রাই করবো। মুসলিম হিসাবে হালাল রিজিক বৃদ্ধির দোয়া সম্পর্কে
ধারণা রাখা উচিত। হযরত উম্মে সালমা রাঃ হতে বর্ণিত বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাজের ফেরানোর পরে হালাল রিজিক
বৃদ্ধির দোয়া করতেন। ইবনে মাজহা ৯২৫ এ নাসাই সুনানে কোবরা ৯৯৩০।
হাদিস হতে বর্ণিত রিজিক বৃদ্ধির জন্য একটি তাজবীহ আমল রয়েছে যা প্রতিদিন
সুবহে সাদিক এর নামাজের পরে ১০০ বার পাঠের মাধ্যমে আহলাল রিজিকবৃদ্ধি পায়।
হালাল রিজিক বৃদ্ধির জিকিরটি হল সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল
আজিম আস্তাগফিরুল্লাহ। হক ও হালালভাবে রিজিক বৃদ্ধি করতে চাইলে আল্লাহর
ইবাদতে মনোনিবেশ করতে হবে।
মহান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারলে সেই ব্যক্তির রিজিক আল্লাহতালা আপনা আপনি
খুলে দিবেন। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে সকল ব্যস্ততাকে পিছনে ফেলে ইবাদত
বন্দেগীতে মনোনিবেশ করতে হবে। ইবাদতের মাধ্যমে হালাল রিজিকের ব্যবস্থা হয়।
বিশিষ্ট আলেমগণের মতে রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি আমল হলো
নিয়মিত আল্লাহর ইবাদত করা এবং আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে উৎসর্গ করা।
রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী - রিজিকের সূরা
মহান আল্লাহ তা'আলা প্রতিটি মানুষের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন রিজিকে।
আল্লাহ সৃষ্ট প্রতিটি প্রাণীর নির্ধারিত রিজিক রয়েছে। মহান আল্লাহকে
রাজ্জাকন বা রিজিকদাতা বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন পুরনো পুঁথি এবং হাদিসে
উল্লেখিত আছে যে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণের প্রায় এক বছর আগে সেই মানুষ বা
প্রাণীর রিজিক নির্ধারণ করেন পুরো বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মালিক মহান আল্লাহতালা।
পবিত্র মহাগ্রন্থ আল কুরআন এবং হাদিসে হালাল রিযিক নিয়ে আল্লাহর বাণী এবং
রিজিকের সূরা উল্লেখিত রয়েছে। বিশিষ্ট আব্রাহাম ইলাহী বলেন কার রিজিক মহান
আল্লাহতালা কোথায় রেখেছেন তা পৃথিবীর কেউ জানে না শুধু একমাত্র জানেন মহান
আল্লাহতালা নিজে।মহাগ্রন্থ আল কোরআনে পরম করুনাময় আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা
করেছেন পৃথিবীতে বিচরণকারী সকল মানুষ জাতি ও প্রাণীর রিজিকের দায়িত্ব মহান
আল্লাহতালার।
সূরা হুদ আয়াত নম্বর 6। মহান আল্লাহকে যে যত বেশি ভয় করবে এবং যত বেশি
উপাসনা বা ইবাদত করবে মহান আল্লাহতালা আকর্ষিকভাবে তার রিজিক বাড়িয়ে দিবেন।
কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন আল্লাহকে যারা ভয় করে তারা সেই
কেয়ামতের দিন আল্লাহর ছত্রছায়ায় থাকবে আর সেই লোকের ধারণার বাইরে থেকে
রিজিক পাবে। সূরা তালাক আয়াত নম্বর 2 ও 3।
রিজিক বৃদ্ধির আমল - রিজিক বৃদ্ধির দোয়া
হালাল রিজিক বৃদ্ধির জন্য একটি তাসবিহ আমল রয়েছে যা প্রতিদিন সুবহে সাদিকের
সময় ১০০বার করে পাঠ করলে হালাল রিজিক আয়ে বরকত পাওয়া যায়। তাজবীটি হলো
সুবানাল্লাহি ওয়া হামদিহি সুবহানাল্লাহি আজিম আস্তাগফিরুল্লাহ। রিজিক বৃদ্ধি
করতে চাইলে আল্লাহর ইবাদতে নিজেকে উৎসরন করতে হবে এবং সকল ব্যস্ততাকে পেছনে
ফেলে নিয়ম অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদতে নির্দিষ্ট সময় ব্যয় করতে হবে।
তবে আরেকটি মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধি হয় সেটি হল বিবাহ। একটি হালাল বৈবাহিক
সম্পর্ক রিজিক বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। নিয়মিত নামাজ শেষে মহান আল্লাহর কাছে
দোয়া করতে পারেন হে আল্লাহ আমার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিন আমার ঘরে প্রশান্তি
প্রদান করুন এবং আপনি আমাকে যে জীবিকা দান করেছেন তাতে বরকত বাড়িয়ে দিন।
রিজিক কত প্রকার - রিজিক কি নির্ধারিত
রিজিক বলতে শুধুমাত্র ধন সম্পদ স্বচ্ছলতাকে বোঝানো হয় না আমাদের মধ্যে অনেক
মানুষ আছেন যারা রিজিক বলতে ধন দৌলত এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা কে বোঝেন। আমাদের
সমাজে যে সকল মানুষের অর্থ-সম্পদ বেশি তাদের এর রিজিক বেশি বলে মনে করা হয়
এবং যাদের অর্থ-সম্পদ কম তাদের কম রিজিক বলে মনে করা।
কিন্তু ধন দৌলত টাকা পয়সা রিযিকের সবচেয়ে নিম্ন স্তর। রিজিকের অনেক কয়টি
স্তর রয়েছে তার মধ্যে সর্বনিম্ন স্তর হল ধন দৌলত টাকা পয়সা। রিজিকের
রিজিকের একমাত্র স্তর ধন দৌলত টাকা পয়সা এমন ধারণা রাখা ভুল। রিজিকের সংজ্ঞা
দিতে বড় বড় আলেমগণ বলেছেন দুনিয়ায় যা কিছু মানুষের উপকার করে এবং উপকারে
আসে সবকিছু রিজিকের অংশ।
আল্লাহতালা পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করেছেন ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি সবকিছুই
প্রার্থীর জগতের শোভা মাত্র। সূরা কাহাফ আয়াত নম্বর ৪৬। প্রতিটি মানুষ ও
প্রাণীর জীবনধারণের জন্য আল্লাহতালার এমন বিশেষ দানকে রিজিক বলা হয়ে থাকে যা
নির্ধারিত সময় এবং প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী প্রদান করা হয়ে থাকে সেই
প্রাণী বা মানুষকে।
রিজিক সেটাই যেটা বান্দার উপকারে আসে এবং এই উপকারে আসা রিজিক ইহকাল ও
পরকালের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বলে অনেকেই ধারণা প্রকাশ করেন।
রিজিক নিয়ে চিন্তা - রিজিক কি
যে কোন মানুষ যদি আল্লাহকে ভরসা করে আল্লাহর ইবাদত করে ধৈর্য ধারণ করে সে সঠিক
সময় তার সঠিক রিজিক পেয়ে যাবে। রিজিকের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলা যেতে পারে আমি
এখন একটি আপেল খাচ্ছি তা হয়তো অন্য কোন দেশে উৎপাদিত হয়েছে কত পাখি মানুষ এর
ছোঁয়া পেয়ে তারপরে আমার কাছে এসেছে।
আমার রিজিকে এই ফলটি লিখা ছিল বিধায় আমি এখন এই ফলটি গ্রহণ করতে পারছি বা খেতে
পারছি। প্রতিটি প্রাণীর জীবনধারণ সম্পর্কে নিশ্চয়ই মহান আল্লাহতালা জানেন এবং
তার প্রয়োজন অনুযায়ী তাকে নির্ধারিত রিজিক প্রদান করবেন সময় মত মহান
আল্লাহতালা নিজেই এতে কোন সন্দেহ নেই।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন রিজিক সেটাই যেটা বান্দার উপকারে আসে আর উপকারে আসার
বিষয়টি ব্যাপারে অনেক ধরনের মতপার্থক্য রয়েছে ইহকাল ও পরকালের মধ্যে এই উপকার
অন্তর্ভুক্ত।
শেষ কথাঃ রিজিক বৃদ্ধির আমল - রিজিক বৃদ্ধির দোয়া
প্রিয় পাঠক আজ আমরা রিজিক বৃদ্ধির আমল নিয়ে একটি আর্টিকেল তৈরি করেছি। আমাদের
এই আর্টিকেলটিতে রিজিক বৃদ্ধির আমল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিতভাবে। আশাকরি,
আমাদের এই রিজিক বৃদ্ধির আমল এর আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগবে এবং এই আর্টিকেলটি
পড়ার পরে আপনি উপকৃত হবেন। রিজিক বৃদ্ধির আমল সম্পর্কে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকলে
আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন। এই ধরনের আরও নতুন নতুন পোস্ট
পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন, ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url