ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়
আপনি কি অনলাইনে ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এ সম্পর্কে খোঁজাখুঁজি করছেন। আজ
আমরা আপনার জন্য নিয়ে এসেছি ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এবং ডায়াবেটিস রোগীর
খাদ্য তালিকা সম্পর্কে আর্টিকেল। সাধারণত শরীরে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে
ডায়াবেটিস দেখা দেয়। চলুন বিস্তারিত ভাবে জেনে আসি ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো
হয় এ সম্পর্কে।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
এবং ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এ সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন শুরু করা যাক
আজকের আর্টিকেল ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এবং ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার
তালিকা লক্ষণ সম্পর্কে।
ভূমিকা
ডায়াবেটিকস বর্তমান সময়ের খুব স্বাভাবিক একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডায়াবেটিস কে সকল রোগের মা বলা হয়। এ রোগে আক্রান্ত হলে জীবনের প্রতিটা
কাজে নিয়ম মেনে চলতে হবে। অতিরিক্ত ডায়াবেটিস হয়ে গেলে এটি মৃত্যুর কারণও
হতে পারে। ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় , ডায়াবেটিকসের লক্ষণ সম্পর্কে
আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে ।
আপনি যদি ডায়াবেটিকস সম্পর্কে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য জানতে চান তাহলে আজকে
আর্টিকেলটির গুরুত্বপূর্ণ আপনার জন্য । মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত আমাদের
সাথেই থাকুন।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - ডায়াবেটিস কেন হয়
প্রতিদিনের খাবার তালিকাতে এমন বিশেষ কিছু খাবার রাখতে হবে যার মাধ্যমে
ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বাঁধলে
অবশ্যই প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন ধরনের টাটকা সবজি ফল খেতে হবে। এই
সকল খাদ্য পরিমান মত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এখন আলোচনা করা
হবে এমন কিছু খাবার সম্পর্কে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ
ভূমিকা রাখে।
মিষ্টি এমন কিছু ফল রয়েছে যা ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করার পরিবর্তে ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আজকের তালিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল হল খেজুর
অনেকেই মনে করে খেজুর যেহেতু মিষ্টি এজন্য খেজুর খেলে হয়তো ডায়াবেটিস
বাড়তে পারে কিন্তু খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিদ্যমান থাকে যার ফলে এটি
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্য খুবই উপকারী।
আরো পড়ুনঃ জন্ডিসের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
বিশেষজ্ঞদের মতে আঙ্গুর কমলালেবু ফুলকপি এর তুলনায় অধিক এন্টিঅক্সিডেন্ট এর
উৎস হলো খেজুর। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে মহা ঔষধি হিসেবে কাজ
করে এই খেজুর। শুধুমাত্র ডায়াবেটিস নয় শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দূর করে
থাকে খেজুর এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো যৌন সমস্যা, শরীর দুর্বল হওয়া ,
মেয়েদের গোপন সমস্যা ইত্যাদি। ডায়াবেটিস হল এমন একটি রোগ যাকে সকল রোগের মা
বলা হয়।
এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যায়
এর কারণে শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না বা ইনসুলিন উৎপাদন করলেও তা
সঠিকভাবে শরীরে কার্যকর হয় না।
ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় - ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য যে সকল খাবার উপযোগী সেই সকল খাবারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য
হলোঃ
- বাদাম
- মটর দানা
- সিমের
- বীজ
- ভুট্টা
- ব্রকলি ইত্যাদি।
এই সকল খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিদ্যমান থাকে যা ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে
বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলের মধ্যে এমন কিছু ফল রয়েছে যা ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত
খাওয়া উচিত। এ সকল ফল নিয়মিতভাবে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পায় শরীরের অতিরিক্ত হাড়ে ইনসুলিন উৎপন্ন হয় যার কারণে ডায়াবেটিকস কমে
যায়। ফলগুলোর নাম হলোঃ
- খেজুর
- বাঙ্গি
- তরমুজ
- আঙ্গুর
- আমড়া
- লেবু
- বেদানা
- মিষ্টি আলু
- জামির
- পেয়ারা
- কামরাঙ্গা ইত্যাদি।
এই সকল খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখতে বিশেষ
ভূমিকা রাখে। মিষ্টি আলু অনেকেই ডায়াবেটিকস বৃদ্ধি হয়ে যাবে মনে করে খান না
তবে বলে রাখা ভালো অতিরিক্ত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি আলু খাওয়ার পরামর্শ
দেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে টাটকা পুষ্টিকর খাবার পরিমিতভাবে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
রাখা সম্ভব। এই সকল বিভিন্ন পুষ্টিকর ফল প্রতিদিনের খাদ্যে ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম
পরিমাণ রাখতে হবে। কারণ এ ফলে কোন ধরনের কেমিক্যাল নেই এবং প্রচুর পরিমাণে
ক্যালরি যোগাস শরীরে এগুলো। যে সকল খাদ্য খেলে ডায়াবেটিস বাড়তে পারে সেই সকল
খাবারের তালিকা হলোঃ
- চিনি
- মধু
- গুড়
- মিষ্টি
- জ্যাম
- জেলি
- মিষ্টি পানীয়
- মদ
- দুধের সর
- আইসক্রিম
- কেক
- পেস্ট্রি
- মিষ্টি বিস্কুট
- মিষ্টি দই
- ঘি
- ডালডা
- চর্বিযুক্ত মাংস
- কলিজা
- গলদা চিংড়ি
- মগজ
- আখের রস ইত্যাদি।
এ সকল খাদ্য যদিও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর তবে এ সকল খাদ্য তেও প্রচুর
পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় এই জন্য প্রতি মাসে সর্বোচ্চ এক থেকে দুইবার
পরিমাণে অল্প করে এই খাদ্যগুলো খাওয়া যেতে পারে ডায়াবেটিস রোগীদের।
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় - ডায়াবেটিস হলে বাচ্চা নেওয়ার উপায়
শরীরের ডায়াবেটিস সৃষ্টির পরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পরে সুস্থ থাকতে হলে জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে
কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো হলঃ
- খুব পিপাসা পাওয়া
- অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া, বিশেষ করে রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া।
- শারীরিকভাবে ক্লান্তি বোধ করা
- স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া
- শরীরে ব্যথা সৃষ্টি হয় এমন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া
- চোখের পাওয়ার কমে যাওয়া
- শরীরের কোথাও কেটে বা ছিঁড়ে গেলে সেই ক্ষত সারতে দেরি হওয়া ইত্যাদি।
ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত হলে প্রায় প্রজনন ক্ষমতা অনেকটা কমে যায় নারীর।
বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভকালীন সময় দুই থেকে পাঁচ শতাংশ নারী ডায়াবেটিসে
আক্রান্ত হয়। একটি রিসার্চে দেখা গিয়েছে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ নারী গর্ভবতী
হওয়ার আগেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। যে সকল মহিলা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত
কিন্তু সন্তান ধারণ করতে চান তাদের জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত সতর্কতা এবং
পূর্ব প্রস্তুতির পাশাপাশি ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ডায়াবেটিকস জনিত কারণে শারীরিক বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা দেখা যায় যেমনঃ রেটিনা কিডনিস স্নায়ু রক্তনালীর রোগ সহ গর্ভনালীর
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলাদের
ক্ষেত্রে বাচ্চা নেওয়ার জন্য ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যকীয়।
প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ - কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না
ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগীদের ফাইবারযুক্ত খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
কেননা ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণের পরে এটি শরীর ধীরে ধীরে গ্রহণ করে যার ফলে
খুব দ্রুত সুগার বাড়ার আশঙ্কা থাকে না। ফাইবার যুক্ত খাবার গুলো হলঃ
- শাক সবজি
- ফল
- বিভিন্ন প্রকার ডাল
- বিভিন্ন ধরনের শস্য ইত্যাদি।
অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পারতো পক্ষে চেষ্টা করা
উচিত টাটকা ফলমূল এবং শাকসবজি গ্রহণ করার। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে
নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত কারণ নিয়মিত ব্যায়াম করলে ওজন ঠিক থাকে এবং
শরীরের ইন্সুরেন্স সেনসিটিভিটি বৃদ্ধি পায়। ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বৃদ্ধি পেলে
শরীরে অধিক ইনসুলিন উৎপন্ন হয় যা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং নিয়মিত
ব্যায়ামের ফলে শরীরের মাংস কোষ ঠিকমতো ইনসুলিন গ্রহণ করতে পারে।
ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে রুটিন মাফিক ব্যায়াম করা উত্তম। সর্বনিম্ন প্রতিদিন
30 মিনিট ব্যায়াম করতে হবে শরীর সুস্থ রাখতে হলে। সপ্তাহে সর্বনিম্ন পাঁচ
থেকে ছয় দিন ব্যায়াম করা উত্তম। ব্যায়ামের ক্ষেত্রে যে সকল ব্যায়াম
করা যাবে সেগুলো হলঃ
- হাটা
- দৌড়ানো
- সাইকেল চালানো
- সাঁতার কাটা
- জিম করা ইত্যাদি
জিম করার পাশাপাশি ফলমূল খেতে হবে মনে রাখতে হবে ফাইবার শরীরে পর্যাপ্ত
পরিমাণে থাকলে শরীরের অন্ত্রের কার্য সঠিক থাকে।
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ - দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
সাধারণত ডায়াবেটিসের লক্ষণ দুই রকম হয়ে থাকে। যদি অধিক ডায়াবেটিকস হয়ে
থাকে সেক্ষেত্রে ক্ষতস্থান নিরাময় হতে সময় লাগে। তুলনামূলক ডায়াবেটিস কম
হলে ক্ষতস্থান দ্রুত সারে। ডায়াবেটিস এর লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলোঃ
দ্রুত ওজন হ্রাস পায়, অদ্ভুত কিছু গন্ধের অনুভূতি পাওয়া , হাত ও পায়ে
ঝিনঝিন করা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রতি সন্ধ্যায় সঠিক সময়
খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
খাওয়ার সময় পরিমাণমতো খাদ্য খেতে হবে, বিশেষজ্ঞরা বলেন ডায়াবেটিসে
আক্রান্ত হলে ভাতের পরিবর্তে রুটি খাওয়ার জন্য। টাটকা শাকসবজি এবং ফলমূল
খাওয়ার কথা বলেন চিকিৎসকেরা এছাড়া কাঁচা লবণ বা চর্বিযুক্ত খাদ্য থেকে
অবশ্যই নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ এরোগে আক্রান্ত হলে
কিছু নিয়ম মানার মাধ্যমে এরক থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। প্রিয় পাঠক আশা করি ডায়াবেটিসের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে যথাযথ ধারণা দিতে পেরেছি আরো কিছু জানতে এখানে ভিজিট করুন।
শেষ কথাঃডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়
আপনারা যদি ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা এবং ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এ
সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া
ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার
জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এ সম্পর্কে কারো কোন
প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমিটির মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট
ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url