দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
আপনি কি দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান? প্রকৃতি থেকে এমন
কিছু উপাদান পাওয়া যায় যা জ্বর কমাতে সহায়তা করে সেই উপাদান গুলো সম্পর্কে
এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। আমাদের পাঠকদের মধ্য থেকে অনেকে প্রশ্ন করেন
দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। চলুন বিস্তারিত জেনে আসি দ্রুত জ্বর
কমানোর ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে।
দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়ানো উচিত এ
সম্পর্কে কিছু টিপস থাকবে আজকে আর্টিকেলে। দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
পেজ সূচিপত্রঃ দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
- ভূমিকা
- দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
- শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় - শিশুর অতিরিক্ত জ্বর হলে করণীয়
- বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত - ৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয়
- শিশুর জ্বর ১০৩ হলে করণীয় - বাচ্চাদের জ্বরের সিরাপ
- শিশুদের নাপা সিরাপ খাওয়ার নিয়ম - শিশুদের জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা
- শেষ কথা
ভূমিকা
সাধারণত বর্তমান সময়ে যার একটি খুব স্বাভাবিক বিষয় হয়ে গেছে। নতুন নতুন
ভাইরাসের কারণে শরীরে জ্বরের সৃষ্টি হয়। আজ আলোচনা করতে চলেছি দ্রুত জ্বর
কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। শিশুর জ্বর যদি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায় সে
ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে শিশুর। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে
আমরা শিশুর অতিরিক্ত জ্বর হলে তাৎক্ষণিক যে সকল ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে
তার সম্পর্কে ধারণা দেব।
এছাড়া দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় , বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া
উচিত,৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয় ,১শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
ইত্যাদি সকল বিষয়ে জানতে পারবেন। তাই আমাদের সাথে থাকুন।
দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
জ্বরের মাত্রা অতিরিক্ত হলে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে খুব সহজে জ্বর
কমানো সম্ভব। এর মধ্যে অন্যতম হলো জলপট্টি ব্যবহার করা। জলপট্টি ব্যবহার করার
নিয়ম হলোঃ সর্বপ্রথম একটি পরিষ্কার রুমাল বা কাপড়ের টুকরো পানিতে
ভিজিয়ে নিন এরপর পানি ঝরিয়ে নিয়ে রোগীর কপালের উপর রাখুন, একটু পরে
জলপট্টি কপাল থেকে তুলে নিয়ে পুনরায় পানিতে ভিজিয়ে রোগীর কপালে দিতে হবে
এভাবে কিছুক্ষণ জলপট্টি দিলে জ্বর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
এছাড়া জ্বর নিয়ন্ত্রণে আনার আরেকটি কার্যকর উপায় হল সাপোজিটার। এটি
ব্যবহারে খুব দ্রুত জ্বর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে
সুস্থ রাখতে জ্বর নিয়ন্ত্রণ করতে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন
সকালে ৮ থেকে ১০ টি তুলসী পাতা ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে নিয়ে ফুটন্ত পানির
মধ্যে ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি খেতে পারেন।
তুলসী পাতাতে বিদ্যমান অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ এবং এন্টিবায়োটিক উপাদান
জ্বর , সর্দি , গলা ব্যথা , ব্রংকাইটিস , ম্যালেরিয়ার মত রোগ প্রতিরোধে
বিশেষ ভূমিকা রাখে। এই তুলসী পাতাতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা জ্বর কমাতে
সাহায্য করে এবং শরীরের অ্যান্টিবডি বৃদ্ধি করে। শিশুর জ্বর কমাতে হলে এবং
শিশুর শরীরের মধ্যে থাকা জীবাণু নাস করতে হলে নিয়মিত সকালে তুলসী পাতা
ফুটিয়ে খেতে হবে এবং তুলসীপাতা দিয়ে পানি গরম করে তা দিয়ে গোসল করতে হবে।
শিশুর শরীরে যদি জ্বরের মাত্রা ১০২.২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয় বা তার বেশি হয়
সেক্ষেত্রে প্যারাসিটামল , নাপা , পাইরিনল জাতীয় ঔষধ সেবন করতে হবে। এছাড়া
সাত দিনের বেশি যদি জ্বর অবস্থান করে শরীরে সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করাতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতিতে
অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে
এ সকল ঔষধ বাচ্চাকে খাওয়ানোর পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অবশ্যই।
শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় - শিশুর অতিরিক্ত জ্বর হলে করণীয়
একটি বিষয়ে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে জ্বরের জন্য শুধু ডেঙ্গু বা
করোনায় দায়ী নয়। ডেঙ্গু বা করোনা
আসার আগে বিভিন্ন ভাইরাস এর কারণে শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল। সেই সকল
ভাইরাস এখনো বিদ্যমান রয়েছে পরিবেশে। এই জন্য জ্বর হলে সেই সকল ভাইরাসের
সংক্রমনের কথা ভেবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিবছর নতুন নতুন ভাইরাস
সৃষ্টি হচ্ছে।
একটু অসাবধানতার কারণে শিশুরা এ সকল ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে যার ফলস্বরূপ
তারা জ্বরে ভুগছে। শিশুদের জ্বরের কিছু অন্যতম কারণ রয়েছে তার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলোঃ ম্যালেরিয়া , নিউমোনিয়া , রক্ত আমাশয় , কানের
সংক্রমণ , টনসিলের সংক্রমণ , টাইফয়েড , হার্টের সংক্রমণ ইত্যাদি। শিশুরা যদি
জ্বরে আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে প্যারাসিটামল , নাপা , পাইরিনাল , আন্টি
হিসামিন জাতীয় ঔষধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করাতে হবে শিশুকে।
এছাড়া কুসুম গরম পানি দিয়ে শরীর পরিষ্কার করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে পানির
মধ্যে হালকা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করা যেতে পারে যা জীবাণুনাসে কার্যকরী
ভূমিকা পালন করে। এছাড়া শিশুর শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ
করতে হবে খাদ্যের মাধ্যমে পরিমাণে অল্প হলেও বারবার খাদ্য খাওয়াতে হবে।
শিশুর কাশির থাকলে গরম লেবুর শরবত কমলালেবু সহ ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য
খাওয়াতে হবে। এছাড়া বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কাশি হলে মধু দিয়ে লেবু
চা তৈরি করে খাওয়াতে হবে। জ্বরের উপসর্গর মধ্যে অন্যতম হলোঃ শরীরের
তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে , শিশুর শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত
ঘেমে যেতে পারে এবং অতিরিক্ত পিপাসাগ্রস্ত হতে পারে।
অবশ্যই মনে রাখতে হবে জ্বর হলে তরল জাতীয় খাদ্য খাওয়াতে হবে শিশুকে। কারণ
জ্বর হলে শরীরে পানির স্বল্পতা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে জ্বর হলে বাচ্চার
কানে ব্যথা , ত্বকে ফুসকুড়ি , গলা ব্যথা এবং পেটে ব্যথার মত সমস্যা
সৃষ্টি হয় শরীরে।
বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ওষুধ খাওয়ানো উচিত - ৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয়
জ্বর হলে শরীরে খিচুনি বা ব্যথার সৃষ্টি হয় এ সময় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ
খাওয়া যাবে কিন্তু ভুলেও ব্যথা নাশক ঔষধ খাওয়া যাবে না। ব্যথা না শোক ঔষধ
শরীরের ক্ষতি করে। সবচেয়ে বেশি কিডনিতে ইফেক্ট সৃষ্টি করে ব্যথা নাশোক ঔষধ।
জ্বর হলে অবশ্যই তরল জাতীয় বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য
হলঃ স্যালাইন , লেবু জল , বিভিন্ন ধরনের জুস , ফলের রস , ভাতের মাড় , ডাবের
পানি ইত্যাদি।
শিশুদের শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে এটি অবশ্যই চিন্তার কারণ হতে পারে যদি সঠিক
পদক্ষেপ না হয়। একটি রিসার্চে জানা গেছে ছয় মাসের কম বয়সী শিশুরা জ্বরে বেশি
আক্রান্ত হয়ে থাকে। তিন মাস বয়সী শিশুর ১০৪ ডিগ্রি এবং ছয় মাস বয়সী শিশুর
১০২ ডিগ্রি এর বেশি যদি জ্বর হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিলম্বনা না করে চিকিৎসকের
শরণাপন্ন হতে হবে।
শিশুদের শরীরে জ্বর আসলে তারা খুবই অস্বস্তি বোধ করে এবং প্রচন্ড ঘামতে থাকে।
এই জন্য শিশুদের দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।
শিশুর জ্বর ১০৩ হলে করণীয় - বাচ্চাদের জ্বরের সিরাপ
১০০ থেকে ১০২ ডিগ্রী জ্বর হলে শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে শিশুর।
এছাড়া অবশ্যই ঔষধ খাওয়াতে হবে শিশুকে। শরীরে জ্বর সৃষ্টি হলে পানির ঘাট
দেখা দেয়। এইজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাদ্য এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে
হবে। জ্বর শরীরে থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম করতে হবে এছাড়া শরীর কে
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম প্রদান করতে হবে।
১০০ ডিগ্রী বা তার বেশি জ্বর শরীরে থাকলে অবশ্যই ওষুধ খাওয়াতে হবে
শিশুকে। শিশুকে একবার ওষুধ খাওয়ানোর পরে পুনরায় ঔষধ খাওয়ানোর জন্য
কমপক্ষে চার থেকে ছয় ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। সাপোজিটর ব্যবহার করার
ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬ ঘন্টা সময় নিতে হবে। শিশুদের শরীর ব্যথা পেট ব্যথা
কানের ব্যথা সর্দি কাশির জন্য প্যারাসিটামল ব্যবহার করতে পারেন।
বর্তমান সময় শিশুদের জন্য জ্বর কমানোর অনেক ট্যাবলেট সিরাপ পাওয়া যায়। এই
ওষুধগুলোর কারণে জ্বর ও জীবাণু শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না। যদি ১০২
ডিগ্রী জ্বর শিশুর শরীরে থাকে সেক্ষেত্রে রুটিন মাফিক ৬ ঘন্টা পর পর
প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে শিশুকে।
শিশুদের নাপা সিরাপ খাওয়ার নিয়ম - শিশুদের জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা
সাধারণত শিশুর বয়সের উপর শিশুর ওজনের ওপর নির্ভর করে যে কোন ওষুধটি খাওয়াতে
হবে। এইজন্য শিশুকে যে কোন ঔষধ খাওয়াতে হলে ঔষধের সাথে থাকা নির্দেশনা খুব
ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। তবে জ্বরের ক্ষেত্রে সিরাপ বা ট্যাবলেট খাওয়ানোর
পরে সর্বোচ্চ আধা ঘন্টা পর থেকে শিশু স্বাভাবিক বোধ করতে শুরু করে অপরদিকে
সাপোজিটার ব্যবহার করলে প্রায় এক ঘন্টা ও সময় লাগতে পারে।
মনে রাখতে হবে কফ ও সর্দির ওষুধে কিছুটা প্যারাসিটামল থাকে এই জন্য এই ওষুধ
গুলো খাওয়ানোর পর আবার প্যারাসিটামল খাওয়ানো যাবে না। জ্বর হলে ঘরোয়া
চিকিৎসার মধ্যে অন্যতম হলো জলপট্টি ব্যবহার করা। এছাড়া শরীর কে পর্যাপ্ত
পরিমাণে পানি এবং পুষ্টিকর খাদ্য দিতে হবে যার ফলে শরীর জ্বরের সঙ্গে লড়াই
করার শক্তি পাবে। এছাড়া তুলসী পাতার রস খাওয়ানো যেতে পারে। জ্বরের সঙ্গে
সর্দি কাশির সমস্যা থাকলে আদা লং মধু মিস করে চা তৈরি করে খাওয়ানো যেতে পারে
শিশুকে।
শেষ কথাঃ দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
প্রিয় পাঠক আশা করি দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের
জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা প্রদর্শন করতে পেরেছি।
আপনারা দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য
উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। প্রতিটি পিতা-মাতার শিশুদের দ্রুত জ্বর কমানোর
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।
দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের
কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন
আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url