জন্ডিস এর লক্ষণ - জন্ডিস এর প্রতিকার
জন্ডিস এর লক্ষণ সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান? সাধারণত চোখের রং এবং প্রস্রাবের
রং হলুদ হয়ে গেলে জন্ডিস হয়েছে বলে ধরে না হয়। এটি জন্ডিসের সাধারণ উপসর্গ
গুলোর মধ্যে একটি। আমাদের পাঠকদের মধ্য থেকে অনেকেই প্রশ্ন করে
থাকেন জন্ডিস এর লক্ষণ সম্পর্কে। চলুন বিস্তারিত ভাবে জেনে আসি জন্ডিস এর
লক্ষণ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
বিভিন্ন কারনে শরীরের জন্ডিস এর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আজকের আলোচনার মূল
বিষয়বস্তু হলো জন্ডিস এর প্রতিকার এবং জন্ডিস এর লক্ষণ। আপনি যদি শরীর সম্পর্কে
সচেতন হন এবং জন্ডিস এর লক্ষণ ও জন্ডিস রোগীর খাবার তালিকা সম্পর্কে জানতে চান
তাহলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
পেজ সূচিপত্রঃ জন্ডিস এর লক্ষণ - জন্ডিস এর প্রতিকার
ভূমিকা
প্রতিটি স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের জন্য জন্ডিসের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে
অবগত থাকা উচিত । সঠিক খাদ্য অভ্যাসের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে শরীরকে দূরে রাখা
সম্ভব। শরীরকে সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে নিয়মিত পুষ্টিকর ও ফাইবারযুক্ত খাদ্য
খেতে হবে। যারা শরীরকে সুস্থ রাখতে চান এবং কিভাবে বুঝবেন আপনি জন্ডিসের
আক্রান্ত তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হলো।
জন্ডিস এর লক্ষণ - জন্ডিস এর প্রতিকার
জন্ডিস হল এক ধরনের রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর ত্বকে অথবা মুখের ভেতরে
হলুদ ভাব দেখা যায়। এছাড়া জন্ডিস এর লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলোঃ খুব
অরুচি ভাব , ক্ষুধা কম লাগা, বমি ভাব , শরীরে অস্বস্তি বোধ করা
, প্রচন্ড পেটে ব্যথা করা ইত্যাদি। যদি ত্বকে চুলকানি সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে
রক্তের বিলিরুবিনের এনজাইম গুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে শরীরের জন্ডিস আছে
কিনা। বিশেষজ্ঞদের মতে জন্ডিস কোন রোগ নয় এবং এর কোন ঔষধ নেই।
শরীরে জন্ডিস ধরা পড়লে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে এ
সময় কোন ধরনের ব্যথা নাশক , প্যারাসিটামল , ঘুমের ঔষধ এবং কবিরাজি গাছ
গাছড়া সেবন করা উচিত নয়। জন্ডিসের আক্রান্ত হলে অবশ্যই বাইরের খাবার
থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। পরিষ্কার পানি ছাড়া পানি পান করা যাবে না। বিশেষ
করে ফুচকা চটপটিতে ব্যবহৃত পানি অনেক ক্ষেত্রে নোংরা হয়ে থাকে এ সকল ফাস্টফুড
থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
জন্ডিস রোগীর খাবার তালিকা - জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয়
জন্ডিসে আক্রান্ত হলে যে সকল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে সেই সকল খাদ্যগুলো হলঃ
- মিষ্টি কুমড়া
- মিষ্টি আলু
- মুলা
- গাজর
- টমেটো
- ব্রকলি
- ফুলকপি
- বাঁধাকপি
- পালং শাক ইত্যাদি
জন্ডিসের আক্রান্ত রোগীদের যে সকল ফল খাওয়া প্রয়োজন সেই ফলগুলো হলঃ
- আঙ্গুর
- পেঁপে
- তরমুজ
- আনারস
- পাকা আম
- কলা
- কমলা
- জলপাই
- অ্যাভোকাড ইত্যাদি
জন্ডিস হলে দুগ্ধ জাতীয় বিভিন্ন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ দুগ্ধ
জাত যেকোন খাদ্য বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যার ফলে সৃষ্টি
হতে পারে জন্ডিস। সাধারণত যে কোন লিভারের রোগ জন্ডিসের মূল কারণ হতে পারে।
আমরা যে সকল খাদ্য প্রতিদিন গ্রহণ করে সে সকল খাদ্য লিভার এর মাধ্যমে
প্রক্রিয়াজাত হয়। হেপাটাইটি স এ বি সি ডি এবং ই এর কারণে শরীরের জন্ডিস
সৃষ্টি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে মদ্যপান করলে শরীরের জন্ডিস দেখা দিতে পারে।
জন্ডিস হলে কি হয় - জন্ডিস হলে কি কি খাওয়া নিষেধ
জন্ডিস আসলে কোন ধরনের রোগ নয় জন্ডিস শুধুমাত্র একটি রোগের লক্ষণ মাত্র।
জন্ডিস শরীরে হলে ত্বক বা চোখের সাদা অংশ হলুদ আকার ধারণ করে। জন্ডিস থেকে
বাঁচতে হলে অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাদ্য কাঁচা লবণ তেল মশলা রেডিমেট মদ পরিহার
করতে হবে। সাধারণত লিভারে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হলে সেটি শরীরকে সিগন্যাল
দেওয়ার জন্য জন্ডিসের সৃষ্টি হয।।
জন্ডিস এ আক্রান্ত হলে গোটা শস্য যেমন বাদাম বাদামি চাল রুটি টোস্ট খেতে পারেন
আর যুক্ত এবং ভিটামিনযুক্ত খাদ্য শরীরের টক্সিন বের করে দেয়। এছাড়া এ সময়
প্রোটিন জাতীয় বিভিন্ন খাদ্য খেতে হবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাছ মুরগির
মাংস পরিমিতভাবে বিভিন্ন ধরনের ডাল ইত্যাদি।
অনেকেই মনে করেন জন্ডিসের আক্রান্ত হলে রোগী মাছ মাংস খেতে পারবে না কিন্তু এ
ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বিশেষজ্ঞদের মতে জন্ডিসের আক্রান্ত হলে এ সকল খাবারের
প্রয়োজন শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি। সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়
এজন্য মিষ্টি কুমড়া মিষ্টি আলু মুলা গাজর টমেটো ব্রোক লিভ খেতে পারেন এগুলো
শরীর থেকে জন্ডিস দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত বিভিন্ন খাবার
যেমন কমলালেবু বাতাবি লেবু সাধারণ লেবু বা লেবুর শরবত খাওয়া যেতে পারে। এই
খাদ্যগুলোর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণে বাড়িয়ে তোলে এছাড়া প্রতিদিন
বাদাম এবং সামান্য আদা কুচি খেতে পারেন। এটি শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং
যকৃতের বিভিন্ন সমস্যা ভালো করে তোলে আদা।
জন্ডিস হলে ডিম খাওয়া যাবে কি - জন্ডিস হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
জন্ডিস হলে ডিম খাওয়া যাবে বাট অনেক ক্ষেত্রে রোগীর ডিম গন্ধ লাগতে পারে।
সাধারণত জন্ডিস এ আক্রান্ত হলে রোগীকে তেল মশলা জাতীয় খাদ্য খাওয়ানো উচিত নয়
কারণ এমনিতেই রোগীর পেট খুবই খারাপ থাকে সেই সময়। বলে রাখা ভালো জন্ডিস কোন
রোগ নয় এটি সাধারণত একটি রোগের আভাস দেয় এজন্য এর কোন সঠিক ঔষধ এখন পর্যন্ত
আবিষ্কৃত হয়নি।
জন্ডিসের আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে তরল গ্রহণ করতে
হবে। অযথা কোন ঔষধ বা কবিরাজি গাছ গাছরা খাওয়া যাবেনা এ সময়। নিজেকে সুস্থ
রাখতে হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে চলতে হবে তাহলে খুব
তাড়াতাড়ি জন্ডিস ভালো হয়ে যাবে।
জন্ডিস হলে কি মানুষ মারা যায় - জন্ডিস হলে লেবু খাওয়া যাবে
মানুষের শরীরে যদি বিলিরুবিনের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে সে
মানুষ জন্ডিসের আক্রান্ত হয়। লিভারের কোন সমস্যা হলে শরীরের জন্ডিসের সৃষ্টি
হয়। প্রতি বছর পুরো পৃথিবীতে জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক থেকে দেড়
লক্ষ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এর মূল কারণ হলো বেপরোয়া জীবনযাপন এবং বাইরের
খাদ্য বেশি গ্রহণ।
শরীর সুস্থ রাখতে হলে প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। বাইরের খাদ্য থেকে
নিজেকে বিরত রাখা সবচেয়ে উত্তম। আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ গুলোর
মধ্যে অন্যতম হলো লিভর। বিভিন্ন কারণে লিভারের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয় যার
পরিণাম হিসেবে শরীরে তৈরি হয় জন্ডিস। জন্ডিসের আক্রান্ত হলে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত বিভিন্ন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এটি রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শেষ কথাঃ জন্ডিস এর লক্ষণ - জন্ডিস এর প্রতিকার
আশা করি জন্ডিস এর লক্ষণ এবং জন্ডিস এর প্রতিকার সম্পর্কে যথাযথ ধারণা প্রদর্শন
করতে পেরেছি। আপনারা যারা মজন্ডিস এর লক্ষণ এবং জন্ডিস এর প্রতিকার সম্পর্কে
জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া জন্ডিস এর লক্ষণ এবং জন্ডিস হলে লেবু খাওয়া যাবে সম্পর্কে জানতে চান
তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জন্ডিস এর লক্ষণ সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে
সেই প্রশ্ন করতে পারেন।আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের
সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url