এজমা থেকে মুক্তির উপায় - এজমা কি ভাল হয়
আপনি কি এজমা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানার ট্রাই করছেন? বিশেষজ্ঞদের
মতে অ্যাজমা কখনোই সম্পূর্ণ ভালো হয় না তবে রোগীকে ভালো রাখার জন্য বর্তমানে
ভালো কিছু চিকিৎসা বের হয়েছে। আমাদের পাঠকদের মধ্য থেকে অনেকেই প্রশ্ন করেন এজমা
থেকে মুক্তির উপায় এবং এজমা কি ভাল হয় এ সম্পর্কে। চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে আসি
অ্যাজমা থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
শারীরিক কিছু অনিয়মের কারণে এজমা সৃষ্টি হতে পারে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে
এজমা থেকে মুক্তির উপায় এবং এর বিশেষ কিছু চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করব। অথেনটিক
এবং বিশেষ কিছু তথ্য জানতে শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকুন।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আজকে আলোচনা করা হবে এজমা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে। একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হিসাবে এজমা থেকে মুক্তির উপায়
সম্পর্কে যথাযথ ধারণা রাখা উচিত। বর্তমান সময়ে জীবন যাপনের মধ্যে যদি একটু
পরিবর্তন আনা যায় ও সতর্ক থাকা যায় সেক্ষেত্রে এজমা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া
যায়।
আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে সঠিক খাদ্য রাখলে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে
এজমার সমস্যা ভালো করা সম্ভব। এজমা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে অবগত হতে চাইলে
শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন। আজকে এই পুরো আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করা
হবে এজমা থেকে মুক্তির উপায় , এজমা কি ভাল হয়, এজমা কেন হয় ,
এজমা হলে কি করনীয় লক্ষণ ইত্যাদি সকল বিষয় এ।
এজমা কেন হয় - এজমা কি ভাল হয়
আর্টিকেলের এই অংশে আলোচনা করা হবে অ্যাজমা কেন হয় এবং অ্যাজমা কি ভাল হয় এ
সকল বিষয়ে। হাঁপানির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কিছু বস্তু রয়েছে তার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলঃ পশু প্রাণীর পশম , তেলাপোকা , বিভিন্ন ধরনের
ছত্রাক ইত্যাদি। অবশ্যই একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে রঙের ঝাঁজালো এবং
বিষাক্ত কর গন্ধ , ঠান্ডা বাতাস , ঝাঁঝালো মসলার গন্ধ , কারখানার ডাস্ট
ইত্যাদি যেন এজমা আক্রান্ত রোগীর আশেপাশে না থাকে।
আরো পড়ুন ঃ টিউমার থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
এগুলোর কারণে অ্যাজমার সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে অনেকগুণ যা পরবর্তীতে
শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত হারে বিভিন্ন ব্যাথা
নাশক ঔষধ হেরোইন সহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহারের ফলে হাঁপানি সমস্যা
দেখা দিতে পারে। এই দ্রব্যগুলো আস্তে আস্তে শরীরের ভেতর এর বিভিন্ন অঙ্গ কে
নষ্ট করতে থাকে।
ডাক্তারি ভাষাতে এই দ্রব্যগুলোকে স্লো পয়জন বলা হয়ে থাকে। অনেকের মনে
প্রশ্ন থাকে অ্যাজমা কি সম্পূর্ণরূপে ভালো করা সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা বলেন
অ্যাজমার সম্পূর্ণরূপী ভালো করা সম্ভব নয় তবে বর্তমান সময়ে বিশেষ কিছু
এজমার চিকিৎসা বের হয়েছে যা গ্রহণ করলে রোগী মোটামুটি খুব ভালো থাকবে বা
জটিল কোন সমস্যা হবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন এজমা রোগী ডাস্ট বা ধুলোবালি থেকে দূরে থাকা উত্তম। কারণ
পলিউশনযুক্ত বাতাস গাড়ির কালো ধোয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডাস্ট বাতাসের মাধ্যমে
রোগীর শরীরে প্রবেশ করলে নিঃশ্বাসে নিতে সমস্যা হতে পারে। এই সকল কারণে এজমা
অ্যাটাক হতে পারে রোগীর। বিশেষজ্ঞদের মতে সুস্থ থাকতে হলে অ্যাজমা রোগীদের
অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে তার মধ্যে একটি হল বাইরে চলাফেরা করার
ক্ষেত্রে মাক্স ব্যবহার করা উত্তম।
এজমা হলে কি করনীয় - এজমা থেকে মুক্তির উপায়
একজন এজমা রোগী হিসেবে অবশ্যই জেনে রাখা উচিত অ্যাজমা হলে করণীয় কি এবং
অ্যাজমা থেকে মুক্তির উপায়। প্রতিবছর সর্বনিম্ন একবার হলেও এজমা রোগীকে
হাঁপানির পরীক্ষা বা ফুসফুস পরীক্ষা করাতে হবে। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে
দেখা করে অথবা যোগাযোগ করে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে
সেই সকল পদক্ষেপ সম্পর্কে ধারণা নিয়ে রাখতে হবে।
হাঁপানি সমস্যা দূর করার জন্য সেই প্রাচীনকাল থেকে বিশেষ কার্যকারী প্রাকৃতিক
ওষুধ হিসেবে মধু ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন রাতে শোবার আগে যদি এক চামচ মধু
এবং এক টুকরো দারচিনি খাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে এই অ্যাজমার সমস্যার সমাধান
পাওয়া যাবে। এছাড়া শুধুমাত্র হাঁপানি বা অ্যাজমার সমস্যা দূর করে তাই নয়
মধুতে এমন কিছু গুনাগুন রয়েছে যা সর্দি কাশি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
এজমা থেকে মুক্তির উপায় গুলো হলোঃ আসমা ভালো করার জন্য নিয়মিত আদা ও তুলসীর
চা খেতে পারে এজমা সমস্যার পাশাপাশি এটি সর্দি কাশির সমস্যা দূর করতে বেশি
ভূমিকা রাখে। দুধের সঙ্গে রসুন গরম করে সেই মিশ্রণটি ঠান্ডা করে খেতে পারেন।
ফুসফুসের যে কোন সমস্যার জন্য এই রেমেডি গুলো খুবই উপকারী হিসেবে বিবেচিত।
আরো পড়ুনঃ 2 বছরের শিশুর খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে নিন
বিশেষজ্ঞদের মতে শ্বাসনালীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন প্রদাহ শ্বাসনালীর
সংকোচন রোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে আদা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় যদি মেথি আদা ও
মধু একটু পানির মধ্যে মিশিয়ে ফুটিয়ে খাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে এজমা সমস্যা
থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবেন। যদিও কফিতে প্রচুর ক্যাফেইন থাকে তবুও নিয়মিত
কফি খেলে তা হাঁপানি বা অ্যাজমার সমস্যা সমাধানের বিশেষ ভূমিকা রাখে। অপরদিকে
বিশেষজ্ঞরা বলেন প্রতিদিন তিন কাফের বেশি কফি খাওয়া উচিত নয় এটি শরীরের
জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এজমা হলে কি কি খাওয়া নিষেধ - এজমা কি ছোঁয়াচে রোগ
আপনি কি জানেন এজমা কি ছোঁয়াচে রোগ এ বিষয়ে? এছাড়া অ্যাজমা হলে কি কি
খাবার খাওয়া নিষেধ এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ এজমা রোগ এর সবচেয়ে
বড় শত্রু হলো সালফাইট যা এর সমস্যা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। সাধারণত শুকনো
ফলে সালফাইটের মাত্রা একটু বেশি থাকে। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলেন অ্যালকোহল সহ
বিভিন্ন ধরনের ভেসে জাতীয় দ্রব্য এজমা এর সমস্যা অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়।
ডাক্তারদের মতে গ্যাস তৈরি করে এমন ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উত্তম এ রোগীর
জন্য। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে এজমা কিছু আছে রোগ? না এজমা কোন ছোঁয়াচে রোগ
নয়। অ্যাজমা তে আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ খেলে সন্তানের অ্যাজমা হওয়ার
সম্ভাবনা নেই তবে বংশগত অ্যাজমা থাকলে এই সমস্যা হতে পারে। বেশিরভাগ
ক্ষেত্রে দেখা যায় এজমা হাঁপানি রোগ তাদের পূর্বপুরুষদের থেকে চলে এসেছে।
অর্থাৎ অ্যাজমা বংশগত একটি রোগ।
অ্যাজমা রোগের লক্ষণ কি কি - সিজনাল অ্যাজমা কি দূর হয়
আর্টিকেলের এই অংশে আলোচনা করা হবে অ্যাজমা রোগের লক্ষণ কি কি এবং সিজনাল
অ্যাজমা কি দূর করা হয় এ বিষয়ে। অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের লক্ষণ গুলো
হলঃ
- প্রশ্বাস নেওয়ার সময় শ শ শব্দ হওয়া।
- শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় কষ্ট হওয়া
- বুকের উপরে চাপ অনুভব করা
- বুকের পেশীগুলো শক্ত হয়ে যাওয়া
- শ্বাস গ্রহণের সময় কাশির সৃষ্টি হওয়া
- ফুসফুসের কপ তৈরি হওয়া যা সহজে বের হয় না ইত্যাদি
হাঁপানি বা এজমা নিঃশ্বাস গ্রহণের সময় বাধা সৃষ্টি করে যার ফলে বুকে চাপ
অনুভব হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ গুলোর মধ্যে হাঁপানি বা
অ্যাজমা একটি। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা না পেলে এটি মারাত্মক
আকার ধারণ করতে পারে এমনকি শ্বাসকষ্ট বুক ধরফর করা এবং নিঃশ্বাস গ্রহণের সময়
কাশি হতে পারে। বিভিন্ন প্রকারের অ্যাজমা রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুলো
হলঃ
- যে হাঁপানি ফুসফুসের বায়ু নালি আকর্ষিকভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত করে এবং তীব্র হাঁপানের সৃষ্টি করে তাকে তীব্র পানি বলে।
- দীর্ঘমেয়াদি হাঁপানি
- এলার্জিজনিত হাঁপানি বা এজমা
সবচেয়ে মারাত্মক অ্যাজমা কোনটি - ব্রংকিয়াল অ্যাজমা রোগ নির্ণয়
আর্টিকেলের এই পর্যায়ে সবচেয়ে মারাত্মক অ্যাজমা কোনটি এবং ব্রংকিয়াল
অ্যাজমা রোগ নির্ণয় সম্পর্কে জানব। হাঁপানি হল শ্বাসতন্ত্রের একটি রোগ যা
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বংশ পর ম্পরা এর মাধ্যমে চলে আসে। সাধারণত এই রোগ
দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে। সাধারণত শ্বাস গ্রহণ বা নিঃসরণের সময়
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়।
পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট কাশি বুকে ব্যথা নিশ্বাস গ্রহণের সময় শ শ শব্দ হওয়া
ইত্যাদি এ রোগের অন্যতম লক্ষণ গুলোর কয়েকটি। বিশেষজ্ঞদের মতে হাঁপানি
রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই তবে বিশেষ কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো
এনালাইসিস এর মাধ্যমে হাঁপানের উৎপত্তি এবং স্থায়িত্ব সম্পর্কে ধারণা
পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ টাইফয়েড রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এই রোগ জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে অর্থাৎ বংশ
পরম্পরায় এরূপ থাকলে সেই বংশের জন্মকৃত যে কোন শিশুর ভার সম্ভাবনা সবচেয়ে
বেশি। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ধুলাবালি ডাস্ট থেকে দূরে রাখতে হয়
নিজেকে। অপরদিকে বিভিন্ন ধরনের নেশা দ্রব্য গ্রহণের ফলে এ রোগের সমস্যা
অনেক গুণে বাড়তে পারে।
শেষ কথাঃ এজমা থেকে মুক্তির উপায় - এজমা কি ভাল হয়
প্রিয় পাঠক এজমা থেকে মুক্তির উপায় এবং এজমা কি ভাল হয় এ সম্পর্কে যথাযথ
তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি আজকের আর্টিকেলে। এজমা থেকে মুক্তির উপায় এবং
এজমা কি ভাল হয় এ সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে
পারেন।
আপনি যদি এজমা থেকে মুক্তির উপায় এবং এজমা কি ভাল হয় এ সম্পর্কে অবগত
হওয়া আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য। এমন আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন
এবং আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url