সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম - নামাজ পড়ার নিয়ম
সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত আপনি একজন মুসলিম
হিসেবে। নামাজের ক্ষেত্রে প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে একটি করে নতুন সূরা
পড়তে হয়। মুসলিম হিসাবে সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে
হবে একজন ব্যক্তিকে। আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে সব ধরনের নামাজের সূরা
পড়ার নিয়ম এবং নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে।
সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম ধর্মীয় দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম। আমাদের
পাঠকদের মধ্যে থেকে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম
সম্পর্কে ।
ভূমিকা
একজন মুসলিম এর জন্য সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। প্রতিটি নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানানো হবে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে। এ ছাড়া এই আর্টিকেলে আরো জানতে পারবেন সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন তথ্য। এছাড়া এই আর্টিকেলে থাকছে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম , বিতর নামাজ কখন পড়তে হয় , নামাজ না পড়ার শাস্তি, নামাজের ১১ টি সুরা ইত্যাদি সকল বিষয় এ।
সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম - নামাজ পড়ার নিয়ম
আজকে আলোচনার বিষয়বস্তু হলো সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে।
নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক বিষয় মনে রাখতে হবে। যেমন সূরা ফাতিহা
পড়ার পরে একটি সূরা পড়তে হবে এবং তার পরের রাকাতে গিয়ে সুরা ফাতিহার সঙ্গে
অন্য আর একটি সূরা পড়তে হবে। এছাড়া প্রথম রাকাতে যে সূরা পড়েছেন দ্বিতীয়
রাকাতে গিয়ে প্রথম রাকাতে পাট কিতো সূরার পরের সূরা পাঠ করতে হবে।
নামাজ শব্দটি ফাঁসি শব্দ নামাজ শব্দের আরবি শব্দ হল সালাত বা সালাহ। আরবি
শব্দ সালাত এর অর্থ হলো দোয়া করা প্রার্থনা করা প্রশংসা করা বা আশীর্বাদ
নেওয়া। প্রতিটি ধর্মেই প্রভুকে সন্তুষ্ট করার জন্য একটি নির্দিষ্ট উপাসনা
থাকে। তেমনি মুসলিম ধর্মের সালাত হল এক ধরনের উপাসনা যা মাধ্যমে মহান
আল্লাহতালা খুশি হন।
ইসলামের স্তম্ভ মোট পাঁচটি তার মধ্যে সালাত একটি। ঈমান বা বিশ্বাসের এরপরে
স্থান সালাতের বা নামাজের। সালাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এইজন্য ইসলাম ধর্মে একটি
কথা প্রচলিত রয়েছে সেটি হল الصلاة هي مفتاح الجنة আসসালাতু মিফতাহুল
জান্নাত, এর অর্থ হল নামাজ বেহেস্তের চাবি। একজন মুসলিমের উপর পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজ ফরজ করা হয়েছে।
এই জন্য প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা একজন মুমিনের জন্য ফরজ। একজন
মোমিন হিসাবে নামাজের সকল নিয়ম সম্পর্কে অবগত থাকা ফরজ। এ ছাড়া নামাজকে
ফরজে আইন হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী। নামাজ পড়ার
ক্ষেত্রে নামাজের নিয়ত করে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠাতে হবে এর পরবর্তীতে
তাকবীরে তাহরীমে পড়ার সময় বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে নাভির নিচে হাত
বাঁধতে হবে।
এর পরে উচ্চস্বরে সানা পড়তে হবে। সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া
তাবারা কাস্মুকা ওয়াতাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গারুকা। এর অর্থ হলঃ হে
মহান আল্লাহ তা'আলা আমরা তোমারি পবিত্রতা ও প্রশংসা ব্যক্ত করছি। তোমার নামে
বরকতপূর্ণ এবং তোমার গৌরব সর্বোচ্চ অসীম তুমি ছাড়া কোন উপাস্য বা ইলা নেই।
নাসাঈ হাদিস নং ৮৮৯।
বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম - বিতর নামাজ কখন পড়তে হয়
বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম হলোঃ অন্যান্য ফরজ নামাজের মতই দুই রাকাত নামাজ পড়তে
হবে এরপরে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহুদ পড়তে হবে। পরবর্তীতে তৃতীয় রাকাত পড়ার
জন্য উঠে দাঁড়িয়ে সুরা ফাতিহা সঙ্গে অন্য কোন একটা সূরা মিলাতে হবে। সূরা
শেষ করার পর তাকবির দিয়ে দুই হাত কান পর্যন্ত পুনরায় উঠাতে হবে এরপর
তাকবীরে তাহরীমের মতো হাত বাঁধতে হবে নাভির নিচে।
এরপর নিঃশব্দে দোয়া কুনুত পড়তে হবে এবং অল্প পূর্বে ন্যায় রুকু এবং
সিজদাতে যেতে হবে এবং শেষ বৈঠকে তাশাহুদ দরুদ শরীফ পড়ার মধ্য দিয়ে বেতর
নামাজ শেষ করতে হবে। বিতর নামাজ এমন এক ধরনের নামাজ যা বিজোড় সংখ্যক রাকাত
বিশিষ্ট হিসেবে বিবেচিত বর্তমানে মুসলিমরা এশার নামাজের পর এ সালাত আদায় করে
থাকে। বিতর নামাজ পড়তে হবে এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত
যেকোনো সময়।
নামাজ না পড়ার শাস্তি - নামাজের গুরুত্ব
ইসলামী শরীয়ত মতে যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তার ঈমান দুর্বল হিসেবে
আখ্যায়িত করা হয়েছে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম নামাজ না পড়াকে কুফরি কাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং
অবিশ্বাসীদের এর স্বভাব বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাদের উম্মতের এক হাদীসে
এসেছে যার ভেতরে নামাজ নিয়ে কোন চিন্তা নেই তার ভেতরে দিনের কোন হিস্যা নেই।
মুসনাদে বাজ্জারঃ ৮৫৩৯।
একটি হাদিসে এসেছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন আজ রাতে আমার কাছে দুইজন
অপরিচিত ব্যক্তি এসেছিল। তারা আমাকে বলল আমার দের সঙ্গে চলুন আমি তাদের সঙ্গে
গেলাম একজন লোকের কাছে এবং দেখলাম তিনি চিত হয়ে শুয়ে আছে। অন্য একজন
ব্যক্তি পাথর নিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে এবং অনবরত তার মাথায় আঘাত করছে
পাথর দিয়ে এবং তার মাথা থেতলে যাচ্ছে।
যখন লোকটি পাথর নিক্ষেপ করছে তখন সেই পাথর গড়িয়ে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে।
লোকটি গিয়ে পাথরটি পুনরায় তুলে নিয়ে আসছে এবং তার ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে
লোকটির মাথা পুনরায় পূর্বে মতো ভালো হয়ে যাচ্ছে। লোকটি পুনরায় এসে শুয়ে
থাকা লোকটিকে শাস্তি দিচ্ছে পাথর নিক্ষেপ করে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম তার দুই সঙ্গীকে যখন জিজ্ঞাসা করলেন সুবহানাল্লাহ
এরা কারা?
জবাবে সঙ্গীরা উত্তর দিলেন ইনি হলো সেই ব্যক্তি তিনি ফরজ নামাজ আদায় না করে
শুয়ে পড়তেন।রিয়াদুস সালেহিনঃ ১৫৪৬। এই হাদিস থেকে আমরা নামাজ না পড়ার
শাস্তি এবং নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে পারি।
নামাজের ১১ টি সুরা - নামাজে কিরাত পড়ার নিয়ম
ইসলামী শরীয়তে প্রতিটি মুসলিমের উপর নামাজকে ফরজ করা হয়েছে আজ আমরা জানবো
নামাজের ১১ টি সুরা সম্পর্কে।
- সুরা ফাতিহা
- সূরা আসর
- সূরা হুমাযাহ
- সূরা ফীল
- সূরা আল কাউসার
- সূরা কাফিরুন
- সূরা নাসর
- সূরা লাহাব
- সূরা ইখলাস
- সূরা ফালাক
- সূরা নাস
আশা করি নিচের উক্তিটুকু পড়লে নামাজে কিরাত পড়ার নিয়ম সম্পর্কে অবগত
হতে পারবেন। পবিত্র কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন বলে দাও
তোমরা আল্লাহ বা রহমান যে নামে ডাকো না কেন সব সুন্দর নামই মহান আল্লাহ
তাআলার। মহান আল্লাহতালা আরো বলেন নামাজ পড়ার সময় তোমাদের সর খুব উচ্চ বা
অতি ক্ষীণ করো না এই দুইয়ের মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন কর। সুরাঃ বনি ইসরাঈল
আয়াত নং ১১০।
নামাজের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য বিষয় হল সুরা পাঠ করা। সাধারণত
ফজর মাগরিব ও এশার নামাজে ইমাম সাহেব উচ্চস্বরে কেরাত বা সূরা পাঠ করেন। আর
জোহর ও আসর নামাজের সময় এই স্বাভাবিকভাবে মনে মনে কেরাত পাঠ করেন ইমাম যখন
কেরাত পাঠ করেন তখন মুক্তাদীদের চুপ থাকতে হয়।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের রাকাআত সংখ্যা - যে তিন সময়ে নামাজ পড়া নিষেধ
এখন আমরা আলোচনা করতে চলেছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের রাকাত সংখ্যা সম্পর্কে
এছাড়া যে ৩ সময়ে নামাজ পড়া নিষেধ সে বিষয়ে।
১. ফজরের নামাজ
ফজরের নামাজের ক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাত সুন্নত পড়তে হয় এবং পরবর্তীতে
দুই রাকাত ফরজ পড়তে হয়।
২. জোহরের নামাজ
জোহরের নামাজের ক্ষেত্রে প্রথমে চার রাকাত সুন্নত পড়ে নিতে হয় এরপরে চার
রাকাত ফরজ এবং তারপরে দুই রাকাত সুন্নত পড়তে হয়। তবে যোহরের নামাজ 10
রাকাত পড়া উত্তম। অনেক মুসল্লী আছেন যারা সর্বশেষে দুই রাকাত নফল নামাজও
পড়ে থাকেন এই হিসাবে যোহরের নামাজ 12 রাকাত আদায় করা হয়ে যায়।
৩. আসরের নামাজ
আসরের নামাজে চার রাকাত পড়া ফরজ অনেকেই আছেন যারা ফরজ নামাজের পূর্বে চার
রাকাত সুন্নত নামাজও পড়ে থাকেন।
৪. মাগরিবের নামাজ
মাগরিবের প্রথম তিন রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে হয় তারপরে দুই রাকাত সুন্নত এবং
কেউ কেউ সুন্নতের পর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে থাকেন।
৫. এশার নামাজ
এশার নামাজে চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে হয় এরপরে দুই রাকাত সুন্নত এবং তিন
রাকাত বেতর নামাজ পড়তে হয়। বেতের নামাজ পড়া ওয়াজিব। অনেক মুসল্লী
রয়েছেন যারা ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত এবং বেতর নামাজের পর দুই
রাকাত নফল নামাজ পড়ে থাকেন।
যে ৩ সময় নামাজ পড়া নিষেধ সেই দিন সময় হলঃ
১. সূর্যোদয়ের পর থেকে এশরাকের আগ পর্যন্ত
২. সূর্য যখন মাথার ওপরে
৩. সূর্য ডোবার সময়
শেষ কথাঃ সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম - নামাজ পড়ার নিয়ম
আশা করি সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে যথাযথ ধারণা প্রদর্শন করতে
পেরেছি। আপনারা যারা সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম এবং যে ৩ সময় নামাজ
পড়া নিষেধ এ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে।
এছাড়া সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট
টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সব ধরনের নামাজের সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের
কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন।আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন
আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url