কানাডা ভিসা পাওয়ার উপায় - কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত

প্রিয় পাঠক আপনি কি কানাডা ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে আজকে আর্টিকেলটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বা প্রয়োজনীয়। বলে রাখা ভালো কানাডা ভিসা করতে হলে প্রায় সব প্রক্রিয়ায় বর্তমান সময়ে অনলাইনে সম্পূর্ণ করতে হয়। এরপরে একদিন হাইকমিশনে গিয়ে আপনার ছবি আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে আসতে হয়। প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে আসি কানাডা ভিসা পাওয়ার সকল প্রসেস সম্পর্কে।
কানাডা_ভিসা_পাওয়ার_উপায়__কানাডা_স্টুডেন্ট_ভিসার_খরচ_কত
শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকলে কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা ছাড়াও স্টুডেন্ট ভিসা এর সুবিধা অসুবিধা কানাডার স্টুডেন্ট ভিসা হতে কত সময় লাগে ইত্যাদি সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ বাংলাদেশী বা বিভিন্ন দেশের মানুষ উচ্চ শিক্ষা ভালো কর্মসংস্থানের জন্য কানাডা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন। আজ আমরা কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা সহ কানাডায় যেতে হলে কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন এ সম্পর্কে আলোচনা করব। প্রিয় পাঠক আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে আশা করি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারবেন।

কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা অসুবিধা - কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা

প্রতিটি বিষয়েরই কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে তেমনি কানাডার স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে সর্বপ্রথমে আপনাকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পেতে হবে। অফার লেটার পাওয়ার জন্য যেকোনো পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বপ্রথম আবেদন করতে হবে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনের নিয়ম অনুযায়ী। সকল নিয়ম অনুসরণ করে সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার সংগ্রহ করতে হবে।

প্রিয় পাঠক একটি বিষয় জেনে রাখা উচিত স্টুডেন্ট ভিসা নামে কানাডায় কোন ধরনের ভিসা দেওয়া হয়ে থাকে না। মূলত স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়ে থাকে যাকে বাঙালিরা স্টুডেন্ট ভিসা বলে অভিহিত করে থাকেন। স্টাডি পারমিট সাধারণত প্রতিষ্ঠানের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সের মেয়াদের ওপর নির্ভর করে থাকে।

এখানে আপনার কোর্সের মেয়াদ যদি পাঁচ বছর হয় সেক্ষেত্রে আপনি পাঁচ বছরের জন্য ভিসা পাবেন। অফার দিতে যদি আপনার স্টাডি প্রোগ্রাম ছয় মাস বা তার চেয়ে কম হয় সেক্ষেত্রে কোন ধরনের স্টুডেন্ট ভিসা নেওয়ার প্রয়োজন নেই আপনার। তবে পাঁচ বছর এর যে কোন কোর্সের ক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ এক্সট্রা ৯০ দিন বেশি থাকে।

এখন আমরা আলোচনা করব ও কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা গুলো সম্পর্কে। নিচে কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা দেওয়া হলোঃ
  • ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে ( IELTS স্কোর এর মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই করতে হবে )
  • একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে
  • জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয় পত্র সনদের প্রয়োজন হবে
  • SSC বা HSC পরীক্ষার সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে
  • গত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা পত্র এর প্রয়োজন হবে
  • যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পত্র দরকার হবে
  • কানাডায় পড়াশোনা থাকা-খাওয়া বাবদ যে খরচ হবে তা আছে কিনা যাচাই-করণের জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হবে।
  • কোন প্রকার মামলা বা দেশদ্রোহীতা মূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকা যাবে না
  • মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা প্রমাণের জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে
আপনার যদি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া যাবে এছাড়া কানাডায় যাওয়ার জন্য বা স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো IELTS স্কোর আপনার যদি 5.0 নিচে থাকে score সে ক্ষেত্রে আপনি স্টুডেন্ট ভিসাতে কানাডাতে যেতে পারবেন। এছাড়া একটি বৈধ পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে।

কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা হতে সর্বোচ্চ কত সময় লাগে

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কানাডিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের প্রয়োজন হয় তবে কিছু ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি বেশি সময় নিতে পারে এজন্য সঠিক সময় বলা একটু কষ্টকর। কানাডিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা যদি পেয়ে যান সে ক্ষেত্রে পাসপোর্ট এর রিকোয়ারমেন্ট লিস্ট জমা দিতে হবে এবং ভিসা ফি প্রদান করতে হবে।

স্টুডেন্ট ভিসার নিয়ম অনুযায়ী আপনি যদি লেখাপড়া করার জন্য কানাডা যেতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই কোন স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আবেদন করতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে অফার লেটার পেতে হবে। অফার লেটার পেলে বা সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি আপনাকে তার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে তাহলে আপনার ভিসার কাজ চূড়ান্তভাবে শেষ হবে।

যেহেতু পাসপোর্ট ভিসা করার প্রসেস একটু দীর্ঘমেয়াদি এই জন্য বাংলাদেশে এই কাজের জন্য প্রায় চার থেকে আট সপ্তাহ প্রয়োজন পড়ে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে পাসপোর্ট বা ভিসা করার সময় যে সকল ডকুমেন্ট শো করবেন তা যেন অরিজিনাল হয়।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং এজেন্সি 

কানাডার স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং এর ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেতে হবে। অনেকে আছেন যারা কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসাতে গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি লক্ষাদিক টাকা আয় করে থাকেন। এর জন্য আলাদাভাবে কোন ওয়ার্ক পারমিট এর প্রয়োজন হয় না স্টুডেন্ট পারমিটের সঙ্গেই ওয়ার্ক পারমিট যুক্ত থাকে।

একটি প্রতিষ্ঠানে যখন আপনি পড়াশোনার জন্য আবেদন করবেন তখন প্রমাণপত্র হিসাবে কিছু ডকুমেন্ট পাবেন সেই ডকুমেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য খুবই সহায়ক হিসেবে গণ্য হয়। কানাডার স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার জন্য অনলাইনে সর্বপ্রথম আপনাকে কানাডা সরকারের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপরে নিবন্ধন করে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং উল্লেখিত নির্দেশনা বলি মেনে ফার্ম পূরণ করতে হবে।

এরপরে আপনার আবেদন বাবদ নির্ধারিত একটি ফি জমা দিতে হবে। অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে আবেদন ফরম পূরণ করে সাবমিট এর পূর্বে এই অর্থ প্রদান করতে হবে। আপনি অনলাইনের ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংক ট্রান্সফার এর মাধ্যমে এই অর্থ প্রদান করতে পারেন কানাডিয়ান সরকারকে।

কানাডা ভিসা পাওয়ার উপায়

কানাডায় যাওয়ার জন্য ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য বর্তমান সময় অনলাইন এর ব্যবহার করা হচ্ছে। অনলাইনে আবেদন করা হয়ে গেলে হাইকমিশন এ গিয়ে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি দিতে হবে। সাধারণত কানাডায় যাওয়ার জন্য ভিসা প্রসেসের ক্ষেত্রে কানাডিয়ান ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নিয়ম অনুযায়ী সেই ফর্ম পূরণ করতে হয়।

উন্নত জীবনযাপন চাকরি পড়াশোনা জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কানাডায় গিয়ে থাকে মানুষ। পছন্দের দিক দিয়ে চাকরি বা পড়াশোনার জন্য যাওয়া প্রবাসীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে এ দেশ বিশ্বের সুন্দরতম দেশের তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে এই দেশ। আয়তনের দিক থেকে এর আয়তন দীর্ঘ কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে খুবই কম জনসংখ্যা এদেশের এবং সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এই কানাডার।

কানাডাতে প্রায় বর্তমান সময়ে ৩ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষ বসবাস করে থাকে। বর্তমান সময়ে কানাডায় থাকা অধিবাসীদের মাথাপিছু আয় 5280 ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করলে 423,964.81 দাঁড়ায় ৪২ লাখ ৩ হাজার ৯৬৪ পয়েন্ট ৮১ কানাডিয়ান ডলার।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত

বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যেতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন পাসপোর্ট তৈরি করা সবচেয়ে ভালো হয় ৬৪ পেজের দশ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করলে। পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ২১ কর্ম দিবস এর মধ্যে গ্রাহক হাতে পায় যার ফি দিতে হয় ৪ হাজার ২৫ টাকা এবং জরুরী ভিত্তিতে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট নিলে পড়বে ৬৩২৫ টাকা।

অপরদিকে দুই কর্ম দিবসের মধ্যে যদি প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে ৮৬২৫ টাকা প্রয়োজন পড়ে। ৬৪ পেজের পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর সাধারণত ফি হয় ৬৩২৫ টাকা জরুরী ভিত্তিতে ৮৬২৫ টাকা এবং অতীব জরুরি ভিত্তিতে ১২ হাজার ৭৫ টাকা পড়ে। এছাড়া সব ফ্রী এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে 15% ভ্যাট।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করি কানাডিয়ান ভিসা পাওয়ার উপায় বা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার খরচ সহ বিভিন্ন বিষয়ে যথাযথ ধারণা প্রদর্শন করতে পেরেছি আজকের আর্টিকেলে। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। এমন নতুন নতুন আরও তথ্য পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে সকলের সঙ্গে শেয়ার করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url