সুন্দরবন কেন বিখ্যাত - সুন্দরবন কয়টি জেলা নিয়ে গঠিত

প্রিয় পাঠক আপনি কি সুন্দরবন সম্পর্কে জানতে চান? সুন্দরবনকে কেন বিশ্ব ঐতিহ্য বলা হয় বা সুন্দরবন কেন বিখ্যাত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান?তাহলে আমার আর্টিকেলটির সাথে থাকুন। আমি আমার আর্টিকেলটিতে আজকে আমাদের দেশের জাতীয় সম্পদ সুন্দরবন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সুন্দরবন_কেন_বিখ্যাত__সুন্দরবন_কয়টি_জেলা_নিয়ে_গঠিত
সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন জাতিসংঘ।অপরুপ রুপের লীলাভূমি এই সুন্দরবন।সুন্দরবনের রয়েছে নানা রকমের সম্পদ।যদি আপনারা এই সুন্দরবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলটির সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকুন। 

সুন্দরবন বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ। সুন্দরবনে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সুন্দরবনের চাক ভাঙ্গা প্রাকৃতিক মধুর কোন তুলনা হয় না কোন কিছুর সঙ্গে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সুন্দরবন গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সুন্দরবন সম্পর্কে জানা সবার জন্য খুবই জরুরী।

আপনিও  যদি সুন্দরবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে পড়ুন আমার এই আর্টিকেলটি। কারণ আমার আর্টিকেলটিতে আমি সুন্দরবন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

ভূমিকা

সুন্দরবন আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে সুন্দরবন। আপনার মনে কি কখনো প্রশ্ন জেগেছে সুন্দরবনকে নিয়ে। কেন এই বনের নাম হলো সুন্দরবন?এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আছে বিভিন্ন ধরনের মতবাদ।

অনেকই মনে করেন সুন্দরবনের অর্থ হচ্ছে সৌন্দর জঙ্গল বা সুন্দর বনভূমি। আবার অনেকেরই মতে সুন্দরবনে রয়েছে প্রচুর সুন্দরী গাছ যার কারণে সুন্দরী গাছের কারণেই সুন্দরবনের নামকরণ করা হয়েছে। আবার অনেকেরই ধারণা যেহেতু সমুদ্রের কাছেই সুন্দরবন অবস্থিত তাই সমুদ্রের  নাম অনুসারে  সুন্দরবনের নামকরণ করা হয়েছে।
মতভেদ যাই হোক না কেন যুক্তি জোরালো হয়ে ওঠে সুন্দরী গাছের পক্ষেই। সুন্দরী গাছ একটি ঔষধি গাছ যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশাল ভূমিকা পালন করে। আর সুন্দরবনে রয়েছে অসংখ্য সুন্দরী গাছ। চলুন আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা সুন্দরবন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। আশা করি আপনার না জানা অনেক প্রশ্নের উত্তর সুন্দরবন সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং আর্টিকেলটি পড়ে খুশি হবেন।

সুন্দরবন কেন বিখ্যাত

পৃথিবীর সব থেকে বড় ম্যানগ্রোভ বন হল সুন্দরবন। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক দৃশ্য এত সুন্দর যে একবার সেখানে গেলে বারবারই মন ফিরে যেতে চায়। সারা বিশ্বের বহু পর্যটক প্রেমী সুন্দরবন আসেন বেড়াতে। সুন্দরবন আমাদের বাংলাদেশের গর্ব, আমাদের বাংলাদেশের অহংকার। সুন্দরবন বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়।

অস্তিত্ব রক্ষায় সুন্দরবনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রত্যেক বছর বহু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশের উপর আঘাত হানে যেগুলো মোকাবেলা করতে সর্বপ্রথম এগিয়ে থাকে সুন্দরবন। সুন্দরবন বিশ্বের বিখ্যাত এবং সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও ভারতের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল নিয়ে সুন্দরবনের বিস্তৃত অঞ্চল গঠিত।

উভয় দেশের সরকারি নথিপত্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর হিসেব মতে সুন্দরবনের মোট আয়তন হল এ প্রায় দশ হাজার বর্গ কিলোমিটার। যার অধিকাংশ অংশই রয়েছে বাংলাদেশের যার আয়তন প্রায় ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। অবশিষ্ট ৩ হাজার ৯৮৩ বর্গ কিলোমিটার ভারতীয় অংশে অবস্থিত।বাংলাদেশের যত বন আছে অর্থাৎ মোট  বনাঞ্চলের প্রায় ৪৭ ভাগই আছে সুন্দরবনে এবং এই সুন্দরবন হতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়।
প্রত্যেক বছর বাংলাদেশের রাজস্ব বিভাগের আয়ের অর্ধেকেরই বেশি আসে সুন্দরবন থেকে।সুন্দরবন থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণে জ্বালানি কাঠ, মধু, মাছ সংগ্রহ করে থাকি।আরো অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো এই বনে প্রচুর পরিমাণে গোলপাতা পাওয়া যায়। রীতিমতো বলা যায় গোলপাতার জন্য বিখ্যাত হলো সুন্দরবন। প্রায় প্রতিবছর ৯৭০০০ টন গোলপাতা, ২২০ টন মধু এবং প্রায় ৫০ টন মোম সংগ্রহ করা হয় সুন্দরবন থেকে।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ অর্গানাইজেশন ১৯৯৭ সালের ৬ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে সুন্দরবনকে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশ সুন্দরবনের দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে পরিচিতি পেয়ে গেছে। সুন্দরবন হল পৃথিবীর যত লোনা পানির ম্যানগ্রোভ বন আছে তার মধ্যে সবথেকে বৃহত্তম।

সুন্দরবন সাধারণত সুন্দরী গাছের  জন্য বিখ্যাত। সুন্দরী গাছ অত্যাধিক থাকার কারণে এর নামানুসারে সুন্দরবনের নামকরণ করা হয়েছে। সুন্দরবনের সব থেকে বড় আকর্ষণ হল আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বাংলাদেশ ও ভারত মিলে সুন্দরবনের যে বিস্তৃত অংশ তাতে রয়েছে কয়েক হাজার রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

পৃথিবীর বিখ্যাত এই রয়েল বেঙ্গল টাইগার শুধুমাত্র বাংলাদেশের সুন্দরবন এই দেখা যায় এবং অন্য কোন দেশে সাধারণত দেখা যায় না। বাংলাদেশের সুন্দরবনের যতগুলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে তাদেরকে নিয়ে ২০০৪ সালে সর্বশেষ প্রতিবেদন জরিপ করা হয়। জরিপ অনুসারে সুন্দরবনের মোট বাঘ আছে ৪৪০ টি। এর ভিতরে পুরুষ বাঘ রয়েছে ১২১ টি এবং মহিলা রয়েছে ২৯৮ টি। আর বাকি ২১ টি হল বাঘের বাচ্চা রয়েছে।
এছাড়াও সুন্দরবনে আরও বিভিন্ন রকমের পশু এবং পাখি রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো চিত্রা হরিণ, গলদাহ হরিণ, বানর, মেছো, বাঘ ,কুমির ,কচ্ছপ ,ডলফিন , শুশুক, বনবিড়াল ,শেয়াল ,গিরগিটি ইত্যাদি। পশু পাখির মধ্যে সুন্দরবনের সব থেকে বেশি হরিণকেই বিচরণ করতে দেখা যায়। চিত্রা হরিণ,  মায়া হরিণ,  বলগাঁ হরিণ, আরো বিভিন্ন জাতের হরিণ রয়েছে এই বনে।

আর পৃথিবীতে শুধুমাত্র ম্যানগ্রোভবন গুলোতে যে হরিণ বিচরণ করে সে হরিণের নাম হল প্যারা হরিন। এই জাতের হরিণ শুধু ম্যানগ্রোভ বনেই দেখা যায়। সুন্দরবনে রয়েছে অসংখ্য সুস্বাদু মাছ। সুন্দরবনের আশেপাশে যে এলাকাগুলো সেগুলোর বেশিরভাগ মানুষ এই সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।এমন অনেক মাছ আছে যার নাম কখনো আগে শুনিনি আমরা। চলুন মাছের নাম গুলো জেনে নিইঃ

  • পারশে
  • বাটা ভাঙ্গন 
  • খড়শোলা বা খল্লা 
  • কাইক্কা 
  • তপসে 
  • গুটিদাতি না
  • নোনা টেংরা  
  • শিলং 
  • কাজরি

সুন্দরবনে আছে অসংখ্য গাছপালা। সুন্দরবনের প্রধান গাছ হচ্ছে সুন্দরী গাছ। এছাড়াও সুন্দরবনে রয়েছে কেউরা,গেওয়া, গরান,প্রভৃতি গাছ।নল খাগড়া,শন, গোলপাতার মত ঘাস জাতীয় গাছ ও প্রচুর জন্মে সুন্দরবনে। তবে এখন পর্যন্ত সুন্দরবনে কত প্রজাতির গাছ আছে তার উপরে কোন বর্তমানে জরিপ করা হয়নি। তাই নির্দিষ্ট করে বলা যায় না যে কত প্রজাতির গাছ সুন্দরবনে রয়েছে।

সর্বশেষ ১৯০৩ সালে প্রকাশ করা হয়েছিল যে সুন্দরবনের কত প্রজাতির গাছ ছিল। সেই সময়ে সুন্দরবনে প্রায় ৩৩৪ প্রজাতির গাছ ছিল। সুন্দরবনে রয়েছে হাজারো রকমের পশু পাখি। চলুন নিচে একটি তালিকা থেকে কত রকমের পশু পাখি রয়েছে সেগুলো জেনে নিনঃ

  • মাছ                            -১২০ প্রজাতি 
  • পাখি                           - ২৭০ প্রজাতি 
  • স্তন্যপায়ী পশু              - ৪২ প্রজাতির 
  • সরীসৃপ প্রজাতির পশু - ৩৫ প্রজাতি 
  • উভচর প্রাণী                 - ০৮প্রজাতির 

সুন্দরবনকে বলা হয় পশু পাখির অভয়ারণ্য। আপনি যেখানে পশুপাখি প্রাণী কোন ভয় নেই নিরাপদে তারা বিচরণ করতে পারে এবং তারা নিরাপদে প্রজনন করতে পারে। এত বড় ম্যানগ্রোভ বন আর সারা পৃথিবীতে কোথাও নেই। তবে বর্তমানে সব পশু পাখি যে সুন্দরবনে আবাদ বিচরণ করতে পারে তা এমনটা নয়। সমুদ্রের আগ্রাসনে সুন্দরবন দিন দিন ছোট আকার ধারণ করছে। তার সঙ্গে আছে জলদস্যুদের অত্যাচার।

কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বনের গাছপালা কেটে ব্যবসা করছে। যার ফলে দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সুন্দরবন এবং সুন্দরবনে থাকা পশু, পাখি, প্রাণী সকলেই।এভাবে যদি সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে তাহলে কিছু কিছু প্রাণী আছে যাদের অস্তিত্ব আর কোনদিন খুঁজেই পাওয়া যাবে না। এদের ভিতর উভচর প্রজাতি প্রাণী আছে ২ রকমের, ১৪ রকমের আছে সরীসৃপ  প্রজাতির প্রাণী এবং ২৫ প্রজাতির আছে বিভিন্ন ধরনের পাখি আর ৫ প্রজাতির রয়েছে স্তন্যপায়ী প্রানী।
উপরের সবিস্তার আলোচনা থেকে আপনি অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন সুন্দরবন কেন বিখ্যাত। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সুন্দরী গাছ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, প্রাণীর জন্যই সুন্দরবন মানুষের কাছে বিখ্যাত। একবার সুন্দরবনে বেড়াতে গেলে বারবার ইচ্ছা করবে সুন্দরবনে যেতে। সুন্দরবনের মধু খুবই বিখ্যাত। 

বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর তালিকা

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বলা হয় বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের রয়েছে  অপরূপ সৌন্দর্য। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতে রয়েছে অনেক আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় পর্যটন স্থান। প্রত্যেকটি জেলা বহন করে নিজস্ব ঐতিহ্য নিজস্ব ইতিহাস। এই সমস্ত ঐতিহাসিক জায়গা ঘুরে জানা যায় বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত এবং তার সাথে বাংলাদেশের মনমুগ্ধকর ও অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। 

বাংলাদেশের কোন কোন জেলা একদম সমুদ্রের সঙ্গে মিলে গেছে। আবার কোন কোন জেলাতে রয়েছে পাহাড় পর্বত। কোথাও কোথাও রয়েছে গাছপালা সবুজে ঘেরা। রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন। চলুন  আপনাকে নিয়ে যাই বাংলাদেশের কিছু আকর্ষণীয় স্থানগুলোতেঃ

  • লালবাগ কেল্লা 
  • মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর 
  • শিশু পার্ক ও জাতীয় চিড়িয়াখানা 
  • আহসান মঞ্জিল 
  • রমনা উদ্যান, বলধা গার্ডেন
  • ফরিদপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
  • রাসেল শিশু পার্ক 
  • পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বাসভবন 
  • পদ্মা নদীর বাঁধ
  • নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট  
  • গাজীপুর  জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
  • বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক 
  • সুহাস পল্লী 
  • ন্যাশনাল পার্ক 
  • ১৯৭১ এর বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ 
  • জাতীয় স্মৃতিসৌধ
  • আওরঙ্গজেব মসজিদ  
  • জগদীশচন্দ্র বসুর জন্মস্থান 
  • ধলেশ্বরী নদী 
  • অতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থান
  • বিবি মরিয়ম মসজিদ 
  • পানাম নগর, সোনারগাঁ 
  • বাংলার তাজমহল 
  • বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্মৃতি জাদুঘর 
  • লালদিয়া সমুদ্র সৈকত 
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও দবদবিয়া ব্রিজ 
  • মনপুরা দ্বীপ 
  • চর কুকড়ি মুড়ি 
  • কীর্তি পাশা জমিদার বাড়ি 
  • কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত 
  • কুয়াকাটা পানি জাদুঘর 
  • পায়রা বন্দর 
  • কুয়াকাটা রাখাইন পল্লী 
  • পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • কবি আহসান হাবীবের বাড়ি 
  • নীলাচল বান্দরবান 
  • তাজিংডং 
  • ডামটুয়া  ঝরনা 
  • রিজুক জলপ্রপাত।
  • শৈলপ্রপাত 
  • নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র 
  • চাঁদপুর ইলিশ চত্বর 
  • পতেঙ্গা 
  • শেখ রাসেল পক্ষীশালা ও ইকোপার্ক 
  • প্রজাপতি পার্ক বাংলাদেশ 
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ 
  • কক্সবাজার 
  • সোনা দিয়ে দ্বীপ
  •  বরই চলি ঝরনা 
  • মাতিনকোব ইনানী সমুদ্র সৈকত 
  • টেকনাফ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য 
  • নাফ নদী ও ছেড়া দ্বীপ
  • রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ 
  • কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান 
  • কর্ণফুলী পেপার মিল 
  • পাকশি পেপার মিল 
  • সুন্দরবন
  •  মংলা বন্দর
  •  সাত গম্বুজ মসজিদ
  •  বাগেরহাট জাদুঘর 
  • যশোরে ঝিকরগাছা ফুলের গ্রাম 
  • জাতিসংঘ শিশু পার্ক 
  • রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি 
  • চিত্রা নদী 
  • গারো পাহাড় 
  • মধুপুর শালবন 
  • ময়নামতি 
  • মহাস্থানগড়
  • নাটোরের চলনবিল 
  • গ্রিন ভ্যালি পার্ক 
  • আত্রাই নদী 
  • ছোট সোনা মসজিদ পার্ক 
  • নাচলের জমিদার বাড়ি 
  • মহানন্দা নদী 
  • সোনামসজিদ বর্ডার 
  • পাবনা রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র 
  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 
  • বুয়েট 
  • পুঠিয়া রাজবাড়ী 
  • বাংলাদেশের প্রথম বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর 
  • শহীদ এ  এইচ এম কামরুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা 
  • সিরাজগঞ্জ চলনবিল 
  • আটঘরিয়া জমিদার বাড়ি 
  • ইলিয়ট ব্রিজ 
  • বঙ্গবন্ধু সেতু 
  • আল আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ 
  • ইকোপার্ক 
  • তিস্তা ব্যারেজ 
  • বুড়িমারী স্থলবন্দর ও জিরো পয়েন্ট 
  • কুষ্টিয়া দর্শনা স্থল বন্দর 
  • তিনবিঘা করিডোর 
  • চা বাগান 
  • সুনামগঞ্জ হাউর 
  • হাইল হাওর 
  • সিতাকুণ্ড জলপ্রপাত 

এছাড়াও বাংলাদেশ আরও বিভিন্ন দর্শনের স্থান রয়েছে যেগুলোতে বাংলাদেশের পর্যটক এবং বিদেশি পর্যটক ঘুরতে এসে খুব আনন্দ পান। 

সুন্দরবন কয়টি জেলা নিয়ে গঠিত 

সুন্দরবন অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। যে ব্যক্তি একবার সুন্দরবনের বেড়াতে যায় সে বারবারই যেতে চায় ওখানে।  ছায়া আলো আবহাওয়া আর সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য মানুষের মন কেড়ে নেয়। চারিদিকে যেখানে তাকানো যায় সেখানে সবুজ আর সবুজ। পৃথিবীর সব থেকে বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হল সুন্দরবন।

পশুপাখি এদের অবাধ বিচরণ আর বিভিন্ন নানা প্রজাতির মাছ, গাছ, প্রকৃতি দেখে মানুষের মন ভরে যায়। তাইতো জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ইনস্টিটিউট সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। গ্রিনিস ওয়ার্ল্ড বুকে নাম উঠেছে সুন্দরবনের। বাংলাদেশের পাঁচটি জেলা নিয়ে সুন্দরবন গঠিত। জেলাগুলোর নাম নিচে দেওয়া হলঃ

  • খুলনা
  • বাগেরহাট
  • সাতক্ষীরা
  • পটুয়াখালী
  • বরগুনা 

সুন্দরবন বাংলাদেশের কোথায় অবস্থিত বাংলাদেশের গর্ব, বাংলাদেশের অহংকার, বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ হলো সুন্দরবন। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও ভারতের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের সুন্দরবন অবস্থিত।পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র  নদীর এলাকার সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে সুন্দরবন। বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূল নির্ধারণ করে ২১-২২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯ ডিগ্রি থেকে ৮৯.৫৫ ডিগ্রি   দাঘ্রিমার  মধ্যে এই বন অবস্থিত।

সুন্দরবনে রয়েছে ৪০০ নদী নালা খালসহ প্রায় ২০০ টি ছোট বড় ছেঁড়া দ্বীপ। আজ থেকেপ্রায় ২০০ বছর আগেও যে সুন্দরবনের এলাকা ছিল ১৬৭০০২ কিলোমিটার সেখানে বর্তমানে কমতে কমতে সুন্দরবনের আয়তন পৌঁছেছে এক তৃতীয়াংশে।প্রায় ৩২ হাজার ৪০০ হেক্টর এলাকার সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার ১৯৯৯ সাল থেকে  সুন্দরবনকে পৃথিবীতে জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেন। 

সুন্দরবন সম্পর্কে তথ্য 

সুন্দরবন হল পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। সুন্দরবন  বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের অবস্থিত। সুন্দরবনের রয়েছে বিশাল জলভূমি।অনেক চাকরির ইন্টারভিউ বা যে কোন কম্পিটিটিভ পরীক্ষায় আপনাদেরকে বলা হয়ে থাকে যে সুন্দরবন সম্পর্কে দশটি বাক্য বলুন। চলুন আমরা সুন্দরবন সম্পর্কে দশটি বাক্য জেনে নিনঃ

  • পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হচ্ছে সুন্দরবন যা অতুলনীয় সৌন্দর্যের অধিকারী 
  • ভারতের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে সুন্দরবনের বিস্তৃত অঞ্চল গঠিত
  • সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার  
  • বাংলাদেশী সুন্দরবনের প্রায় 6517 বেলুন কিলোমিটার অবস্থিত এবং বাদবাকি যতোটুকু সব ভারতে অবস্থিত 
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রাকৃতিক এবং বনজ সম্পদ 
  • সুন্দরবন প্রধানত সুন্দরী গাছের নাম অনুসারে গঠিত হয়েছে। সুন্দরবনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী গাছ। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গুল্মলতা গেওরা, কেওরা, হিজল, গরান ইত্যাদি গাছ।
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের অত্যন্ত সুন্দর এবং প্রাকৃতিক সভামণ্ডিত গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র যেখানে প্রতিনিয়ত বিদেশি এবং দেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  •  সুন্দরবনে রয়েছে প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য যা বন্যপ্রাণীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেখানে বন্যপ্রাণীরা পশু-পাখিরা নিরাপদে বিতরণ করতে পারে তাদের কোন ভয় নেই। 
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং সুন্দরবন রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী যার মধ্যেই রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার,  সিংহ, কুমির, গিরগিটি ইত্যাদি প্রাণী। 
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশাল বড় ভূমিকা রাখে যাকে বলা হয় বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্গ। তাই সুন্দরবনকে সংরক্ষণ করা আমাদের সকলেরই নৈতিকতা এবং দায়িত্ব। 

এছাড়াও আরো কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে সুন্দরবনের যা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বৈশিষ্ট্য গুলো বর্ণনা করা হলোঃ

  • বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশাল গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বা মর্যাদাপূর্ণ স্থান দেওয়া হয়েছে। 
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের সমস্ত উপকূলীয় অঞ্চলকে সমুদ্রের ঢেউ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে 
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা পালন করে 
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে 
  • সুন্দরবন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রে যা মানুষের খুবই নিষ্ক্রিয় এবং মানুষ একবার গেলে সেখানে বারবার যেতে চায়। 

উপরের আলোচনা থেকে আশা করি পাঠক বুঝতে পেরেছেন আপনি যে সুন্দরবন আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং সুন্দরবন কতটা বৈচিত্র্যময়।

শেষ কথাঃ সুন্দরবন কেন বিখ্যাত সুন্দরবন কয়টি জেলা নিয়ে গঠিত 

সবশেষে বলতে হবে সুন্দরবন আমাদের বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত, অর্থনৈতিক গত, এবং সামাজিকগত সম্পদ। সুন্দরবন বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্য মন্ডিত একটি পর্যটন কেন্দ্র। যেখানে প্রতিদিন বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটন পর্যটকেরা ঘুরতে আসে। সুন্দরবনের সৌন্দর্য বিমোহিত করে মানুষকে।
সুন্দরবন হল প্রাণীদের, বন্যপ্রাণীদের জন্য নিরাপদ বাসস্থান। যাকে বলা হয় নিরাপদ অভয়ারণ্য। যেখানে পশুপাখিরা আমাদের বিচরণ করতে পারে এবং নিজেদের প্রজনন করতে পারে।সুন্দরবন অর্থনৈতিক গত দিক থেকেও বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধরনের বর্ণ যে সম্পদ লুকিয়ে আছে সুন্দরবন এ যেমন মধু,কাঠ সালগন পাতা, গোলপাতা প্রভৃতি। এসব বনসম্পদ সংগ্রহ করে অর্থনীতি সচল রাখা যায়।

সুন্দরবন বাংলাদেশের  প্রাকৃতিক দূর্গ হিসেবে কাজ করে।বিভিন্ন  ধরনের প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস  থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে সুন্দরবন। তাইতো জাতিসংঘ বাংলাদেশকে কত বড় সম্মান দিয়েছেন সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে। সুন্দরবনের বদলোতে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছে এবং তুলে ধরতে পেরেছে নিজেদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি ও নিজেদের পরিচয়কে।

তাই আসুন আমরা সবাই মিলে সুন্দরবনকে রক্ষা করি। নিজেদের সম্পদ,  নিজেদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করি। আশা করি পাঠক আপনি সুন্দরবন সম্পর্কে নানা-অজানা প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। যদি আপনার সুন্দরবন সম্পর্কিত বা অন্য কোন মতবাদ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটে কমেন্ট বক্সে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ সঙ্গে থাকার জন্য। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url