এইডস কি কারনে হয় - এইডস কিভাবে ছড়ায়

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা এইডস কি কারনে হয় এবং এইডস এর ভাইরাসের নাম কি এসকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। এইডস সাধারণত এইচআইভি ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। মানব প্রতিরক্ষা অভাব সৃষ্টিকারী ভাইরাস নামে পরিচিত। এইচআইভি ভাইরাস মানুষের শরীরের টি-সহায়ক কোষগুলোকে আক্রমণ করে। এখন আমরা এইডস কি কারনে হয় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
আপনি যদি এইডস কি কারনে হয় এবং এইডস এর ভাইরাসের নাম কি এসকল বিষয় জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন এইডস এর ঔষধের নাম কি সকল বিষয় জেনে নেওয়া যাক। 

এইডস কি

এইডস এর পূর্ণ নাম হল "Acquired Immuno Deficiency Syndrome" হচ্ছে এইচআইভি ভাইরাস তথা মানব প্রতিরক্ষা অভাব সৃষ্টিকারী ভাইরাস নামক ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট একটি রোগের লক্ষণ সমষ্টি। মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এর জন্য একজন এইডস রোগী যে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু ঘটাতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট কি - ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচআইভি ভাইরাসের আক্রমণের সাথে সাথে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে থাকে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত সংক্রামক ব্যাধি যেমন যক্ষা আক্রান্ত হতে পারে এছাড়াও বিভিন্ন রকম রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এইচআইভি সংক্রমণে পর্যায় টিকে এইডস বলা হয়।

এইডস কি কারনে হয় | এইডস রোগের কারণ | এইডস কেন হয়

এইচআইভি এইডস কে মরণব্যাধি রোগ বলা হয়। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অনেক মানুষ। কিন্তু এই ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা এখনও বের করতে পারেনি গবেষকরা। এখনো এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে রোগ থেকে বাঁচতে এইডস কি কারনে হয় তা জানা প্রয়োজন। তাহলে চলুন এইডস রোগের কারণ, এইডস কেন হয় এ বিষয়ে জেনে নেই।

  • এইডস রোগের জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাস। ভাইরাস মানুষের রক্তে ও অন্যান্য দেহ রসে বেঁচে থাকে।
  • শারীরিক সম্পর্ক এর কারণে এইডস রোগ বেশি ছড়িয়ে থাকে।
  • প্রতিবার ইনজেকশন নেওয়ার সময় পুরাতন সুচ ব্যবহার করার কারণে এইডস রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
  • এইডস আক্রান্ত রোগীর শরীরের ফোঁড়ানো থেকেও এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে।
  • সাধারণকে ঝুঁকিপূর্ণ যৌনজীবন রয়েছে এমন পেশাদারদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • এইডস আক্রান্ত রোগীর রক্ত অন্য কারো শরীরে দিলে তার এইডস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • মায়ের দ্বারা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যদি জন্ম দেওয়ার সময় এইচআইভি ভাইরাস মায়ের দেহে থাকে তাহলে সে ভাইরাস বাচ্চা শরীরেও আসতে পারে।

এইডস কিভাবে ছড়ায়

এইডস সাধারণত বায়ু, পানি, খাদ্য অথবা এটি ছোঁয়াচে বা স্পর্শ এর কারণে ছড়ায় না। এইচআইভি মানবদেহের কয়েকটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থের বেশি থাকে যেমন রক্ত বীর্য, বুকের দুধ ইত্যাদি। এইডস ছড়ানোর মূল কারণ হচ্ছে মানবদেহের উপরোক্ত তরল পদার্থ গুলো আদান-প্রদানের মাধ্যমে এইচআইভি ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাহলে চলুন এইডস কিভাবে ছড়ায় সেগুলো জেনে নেই।

  • এইডস আক্রান্ত রোগীর রক্ত অন্য কোনো ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করানোর কারণে।
  • এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সুচ অন্য কোন ব্যক্তি ব্যবহার করলে।
  • এইডস রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির কোন অঙ্গ অন্য ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে।
  • এইডস আক্রান্ত মায়ের দুধ বাচ্চাদের খাওয়ানো বাচ্চাকে এইডস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অনৈতিক ও অনিরাপদ যৌন মিলন করলে। যদি যৌন মিলন করার সময় কনডম ব্যবহার করা হয় তাহলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
  • স্বামী বা স্ত্রী যেকোনো একজন যদি এইডস রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে অন্য জনের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এইডস এর ভাইরাসের নাম কি

এইডস এর পূর্ণরূপ হল (Acquired Immuno Deficiency Syndrome)। এ রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের নাম হল এইচআইভি (Human Immunodeficiency Virus) এই ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট একটি রোগ লক্ষণ সমষ্টি মানব দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এ ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার কারণে একজন রোগী খুব সহজেই যে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ ঘটায়।

এইচআইভি সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে এইডস হয়না শুরুতে ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় উপসর্গ দেখা যেতে পারে। এরপর অনেকদিন যাবত কোন উপসর্গ দেখা যায় না। এইচআইভি ভাইরাসে আক্রমণ বৃদ্ধির সাথে সাথে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত বিভিন্ন রকম সংক্রামক ব্যাধি তে আক্রান্ত হতে পারে।

শরীরে এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত করলে এটি পুরোপুরি দূর করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। তাই এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত হলে তার এইডস অনিবার্য। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে প্রায় ৩ কটি ৬৭ লক্ষ মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল এবং একই বছর ১০ লক্ষ্য মানুষ মৃত্যুবরণ করেন এইডস এর কারণে।

বেশিরভাগ এইডস রোগী নিম্ন আফ্রিকাতে বাস করে। বর্তমানে এই ব্যাধি কে একটি মহামারী ব্যাধি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যা বিশ্বের বিশাল এক জনসংখ্যার মধ্যে ছড়িয়ে আছে। তাহলে আমরা জানলাম যে এইডস এর ভাইরাসের নাম এইচআইভি।

এইডস এর ঔষধের নাম কি

এইডস সাধারণত এইচআইভি ভাইরাসের কারণে আক্রান্ত হয়। এই রোগের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। গবেষকরা এখনো এই রোগকে নিয়ে গবেষণা করে আসছে। এইডস আক্রান্ত রোগীর জীবন কিভাবে বাঁচানো যায় সেই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চলছে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় যার ফলে যে কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এইডস এর ওষুধের নাম কি তা জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - আনারস এর পুষ্টিগুন

এইচআইভি মানব শরীরে একবার ঢুকলে তাকে পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়। তাই এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এইডস প্রায়ই অনিবার্য। তবে বিনা চিকিৎসায় এইডস পর্যায়ে পৌঁছাতে ১০ বছর লেগে যায়। তবে চিকিৎসার দ্বারা তাকে আরো কিছু বছর পিছিয়ে আনা সম্ভব। "হার্ট" নামে এইডস এর সমন্বিত ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। যদিও এটা অনেক খরচ সাপেক্ষ। মধ্যবিত্তরা এই চিকিৎসা করার সামর্থ্য রাখে না।

এইচআইভিতে আক্রান্ত রোগীদের এই মরণ ব্যাধি থেকে মুক্তি দিতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোন শেষ নেই। মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে গবেষণা চলছে। এইচআইভি প্রতিরোধে ভারতের বাজারে এসেছে একটি ওষুধ। এইডস প্রতিরোধক ট্যাবলেট "প্রি এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস"। অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক আগে যে কেউ বাজারে থেকে এ ওষুধ কিনতে পারবেন। পরীক্ষামূলক ভাবে ভারতে এই ঔষধ প্রথম ব্যবহার হয়েছে।

শেষ কথাঃ এইডস কি | এইডস কি কারনে হয় | এইডস এর ভাইরাসের নাম কি

এইডস সাধারণত এইচআইভি ভাইরাসের কারণে আক্রান্ত হয়। মানবদেহের তরল পদার্থ গুলোর কারণে ছড়িয়ে থাকে। এরকম পোস্ট আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url