ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় - কোন পিল সবচেয়ে ভালো
আপনি কি ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় এর বিষয় জানতে
চান? অনেকেই আছেন যারা প্রথমবার পিল খাবেন তাদের পিল সম্পর্কে কিছু
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার প্রয়োজন। এছাড়া কোন পিল সবচেয়ে ভালো এবং পিল খাওয়ার
নিয়ম কি ইত্যাদি বিষয়ে জানতে শেষ পর্যন্ত সাথে থাকুন। হঠাৎ পিল খাওয়া ছেড়ে
দিলে দেখা যায় নারীর ওজন কিছুটা কমে যায়।
আপনি যদি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে থাকেন এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের
আর্টিকেলটি পড়েন সে ক্ষেত্রে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোন পিল ভালো
, পিল খাওয়ার নিয়ম সহ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান
অর্জন করতে পারবেন।
ভূমিকা
বৈবাহ জীবনের শুরুর দিকে বিশেষ মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করার ক্ষেত্রে প্রেগনেন্সি
বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রেগন্যান্সি জনিত সমস্যা এড়ানোর জন্য বাজারে বিভিন্ন
ধরনের পিল পাওয়া যায়। যা জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তবে পিল
ব্যবহারের প্রথম দিকে পিল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে রাখা উচিত। আজকের
আর্টিকেলের মাধ্যমে পিল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং কোন পিল কখন খেতে
হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় - কোন পিল সবচেয়ে ভালো
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে যদি ইমারজেন্সি পিল খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে পিরিয়ড
বা মাসিকের সময় এর পরিবর্তন ঘটে। সর্বপ্রথম আপনাকে মাসিক শুরু হওয়ার দিন
পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে এরপরে যদি সঠিক সময় মাসিক না হয় সেক্ষেত্রে
সর্বোচ্চ 10 থেকে 12 দিন অপেক্ষা করে দেখতে পারেন।
তবে এর বেশি অপেক্ষা করা যাবে না। এর পরে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে হবে। যে সকল সময়ে একটি নারীকে পিল খাওয়ার আগে
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে সেগুলো হলোঃ
- ৪০ বছর বয়সের বেশি হলে
- যোনিপথের রক্তক্ষরণ হলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে
- রক্ত জমাট বাঁধা জনিত রোগে আক্রান্ত থাকলে
- রক্তে যদি অধিক কোলেস্টেরল থাকে
- হাই ব্লাড প্রেসার থাকলে
- ব্রেস্ট ক্যান্সার থাকলে
- লিভারের জটিল রোগ থাকলে
- আগে স্ট্রোক হয়ে থাকলে
- হাটের সমস্যা থাকলে
বর্তমান সময়ে বাজারে বিশেষ ধরনের থার্ড জেনারেশন এবং ফোর্থ জেনারেশন এর পিল
পাওয়া যায় যা প্রেগনেন্সি রোধের পাশাপাশি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ
ভূমিকা রাখে। মাসিকের সময় সঠিক করতে বর্তমান সময় পীর ব্যবহার করা হয়ে থাকে
এছাড়া মিনি পিল প্রোজেস্টেরন হরমোন হরমোন নিঃসরণ করে থাকে অপরদিকে ওসিপিল এর
তুলনায় এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেকটা কম।
ইমারজেন্সি পিল ইস্ট্রোজেন হরমোনের উপর নির্ভরশীল এক ধরনের পিন। খালি যৌন মিলন,
কনডম ফেটে যাওয়া, ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীদের জন্য কার্যকর এক ধরনের বিশেষ পিল
এটি। এই পিন সাধারণত যৌন মিলনের পাঁচ দিনের মধ্যে ব্যবহার করতে হয়।
পিল খাওয়ার নিয়ম - ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম
পিল খাওয়ার নিয়ম হল প্রতিদিন একটি করে লিখে দিতে হবে ২১ দিন পর্যন্ত। ২১ দিন
সম্পূর্ণ হয়ে গেলে সাত দিন পিল খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। এই সাত দিনে আপনার মাসিক
পুনরায় চালু হতে পারে। সাত দিন শেষ হয়ে গেলে অষ্টম দিন থেকে পুনরায় নতুন পাতা
থেকে পেট খাওয়া শুরু করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় খেতে হবে।
অপরদিকে ইমার্জেন্সি পিল যৌন মিলনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খেতে হয়। এখন আমরা জানবো
ইমারজেন্সি জন্ম নিয়ন্ত্রক পিল নিরাপদ কি না এবং এই ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার কিছু
নিয়মঃ
- ইমারজেন্সি পিল সঙ্গমের পরে যত দ্রুত সম্ভব খেতে হবে কারণ এটি দ্রুত ভালো কাজ করে।
- ইমারজেন্সি পিল গর্ভপাত করায় না তবে গর্ভধারণের ঝুঁকি হ্রাস করে
- অনেকেই মনে করেন ইমারজেন্সি পিল ছেলে ওজন বেড়ে যায় তবে বলে রাখা ভালো এই ওষুধের সঙ্গে ওজন বারা বা কমার কোন সম্পর্ক নেই।
তবে বলে রাখা ভালো পিন নিয়মিত খেতে খেতে যদি ছেড়ে দেওয়া যায় তবে হঠাৎ ওজন
কমতে পারে। পিল খাওয়া অবস্থায় যদি খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন হয় শরীরে পানি
অতিরিক্ত ধারণ করা এবং বাড়ন্ত বয়সে পিল সেবন শুরু করা হয় সেক্ষেত্রে
শরীরের ওজন কিছুটা বাড়তে পারে। অপরদিকে পিল সেগুন করতে করতে যদি বন্ধ করা হয় সে
ক্ষেত্রে শরীরে পানি ধারণের পরিমাণ কিছুটা কমে যার ফলে ওজন ও কমে যায়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন ইমার্জেন্সি অবস্থা না আসলে পিল খাওয়া উচিত নয়। প্রতিটি
ঔষধ এর কম বেশি সাইড ইফেক্ট থাকে। শারীরিক মিলনের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব প্রটেকশন
ব্যবহার করা শ্রেয় তবে ভুলবশত প্রটেকশন ফেটে গেলে পিল খাওয়া যেতে পারে। নিয়মিত
পিল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এটি শরীরের ক্ষতি করতে পারে এবং মাসিকের সময়
পরিবর্তন করে দিতে পারে।
৭২ ঘন্টার পিল এর নাম - নোরিক্স পিল খাওয়ার নিয়ম
আনওয়ান্টেড ৭২ ট্যাবলেট পিল ইমারজেন্সি গর্ভনিয়ন্ত্রক পিল হওয়া সত্ত্বেও এটি
দীর্ঘমেয়াদী গর্ভ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখে থাকে।
Norix পিল অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেগনেন্সি যদি বিশেষ কার্যকারী ভূমিকা পালন করে
থাকে অপরদিকে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞরা কনডম ছাড়া মিলনে গর্ভে বেবি যেন না আসে এই
জন্য Norix পিল খাওয়ার পরামর্শ দেন। কনডম ছাড়া সহবাসের পরে 1.5 মিলিগ্রাম
Norix পিল খেতে হয়।
তবে মনে রাখতে হবে এই ঔষধ সহবাসের 72 ঘন্টা পর নারী শরীরে আর কাজ করবে না।
Norix কে ইমারজেন্সি পিল বলা হয়ে থাকে। Norix পিল খাওয়ার ৭২ ঘণ্টার ভিতরে
একাধিকবার সহবাস করতে পারবেন এতে কোন সমস্যা হবে না তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে
৭২ ঘন্টার পর এর কার্যকারিতা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়।
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় - ফেমিকন পিল খাওয়ার নিয়ম
প্রতিবার যৌন মিলনের পর যদি ইমারজেন্সি পিল খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে গর্ভধারণ থেকে
প্রতিবার রক্ষা করবে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার ফলে
অনেক সময় দেখা যায় মাসিক ৩ থেকে ১০ দিন পিছিয়ে যায়। যদি শারীরিক সমস্যা থাকে
রক্তশূন্যতার মতো সংসদ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে পিল খাওয়ার পরেও মাসিক হতে নাও
পারে।
ফেমিকন পিল যদি সেবন করতে চান সে ক্ষেত্রে মাসিক হওয়ার আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে
হবে। এই পিলের পাতাতে 28 টি ট্যাবলেট বিদ্যমান থাকে তার মধ্যে ২১ টি সাদা এবং
বাকি সাতটি লাল বর্ণ হয়ে থাকে। মেয়েদের পিওর শুরু হওয়ার দিন থেকে ২১তম দিন
পর্যন্ত সাদা রঙের ট্যাবলেট গুলো খেতে হয় ২২ দিন থেকে লাল রঙের ট্যাবলেট খাওয়া
শুরু করতে হয়। একই নিয়ম অনুসারে যতদিন পর্যন্ত বাচ্চা নিতে না চান ততদিন
পর্যন্ত পিল খেতে হবে।
প্রথমবার পিল খাওয়ার নিয়ম - পিল খাওয়া বন্ধ করার কতদিন পর মাসিক হয়
পিল খাওয়ার পরে সাধারণত এই ঔষধ ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের হয়ে জরায়ুতে আসতে
দেরি করায়। অপরদিকে এই সময়ের মধ্যে জরায়ুতে প্রবেশ করা শুক্রাণু নষ্ট হয়ে
যায়। যার ফলে মহিলা প্রেগন্যান্ট হতে পারেনা। তবে কিছু ক্ষেত্রে শুক্রাণু বেশ
কিছুক্ষণ কর্মক্ষম অবস্থায় শরীরের মধ্যে অবস্থান করে। সেই সকল ক্ষেত্রে পিল
খাওয়ার পরেও গর্ভধারণ করতে পারেন নারী।
একটি রিসার্চে দেখা গেছে প্রতি 100 জনে দুজন নারী শারীরিক মিলনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে
পিল খাওয়ার পরেও গর্ভধারণ করেছেন। অধিকাংশ মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় একবার
যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ ঔষধ খাওয়া বন্ধ করা হয় সেক্ষেত্রে তিন মাসের মধ্যে মাসিক
চক্র স্বাভাবিক হয়ে যায়। এর জন্য মাসিক চক্র নিয়ে চিহ্নিত হওয়ার কোন বিষয়
নেই এখানে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য কিনে আনা পিল এর পুরো ডোজ শেষ না করে
ছাড়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে প্রেগনেন্ট হওয়ার চান্স থেকে যায়। এছাড়া রক্তস্রাব
এর মত সমস্যা দেখা দিতে পারে শরীরে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি কোন পিল সবচেয়ে ভালো এ সম্পর্কে ধারনা দিতে পেরেছি।
ইমারজেন্সি পিল সম্পর্কে কোন মতামত প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন। উপরে লিখিত
আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনার প্রিয়জনদের সঙ্গে শেয়ার করুন
এবং জন সচেতনতা বৃদ্ধি করুন। শেষ পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url