শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় - শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

বর্তমান সময়ে অনেকেই শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় সঠিক তথ্য খোঁজা খুঁজি করছেন। শীতে যদি সঠিক ভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়া না হয় সে ক্ষেত্রে ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। অন্যান্য ঋতুর চেয়ে শীতকালে ত্বকের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন পড়ে এছাড়া প্রয়োজন পড়ে ত্বককে ময়েশ্চারাইজিং করার। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে চলেছি শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় এবং পরিচর্যা নিয়ে।
শীতে_ত্বকের_উজ্জ্বলতা_বৃদ্ধির_উপায়__শীতে_ত্বকের_যত্নে_ঘরোয়া_উপায়
শীত ত্বক কে করে তোলে রুক্ষ। শুধুমাত্র ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি বিভিন্ন প্রসাধনী বা অর্গানিক জিনিসপত্র ত্বকে ব্যবহারের ফলে হয় না। আমাদের স্কিনকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন পুষ্টিকর বিভিন্ন ধরনের খাদ্য খেতে হবে। যেমনঃ কলা, কমলা, পেঁপে, আম ইত্যাদি। 

ভূমিকা

আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা শীত কালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় সহ নানান টিপস নিয়ে আলোচনা করব। বলে রাখা ভালো কালে অন্যান্য মৌসুমের থেকে ত্বকের প্রয়োজন হয় একটু এক্সট্রা কেয়ার সঠিক পদ্ধতি না জানা থাকলে ত্বক রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যায় এবং পরিনাম হয় ত্বক ফাটা। প্রিয় পাঠক শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন এবং শীতকালে ত্বকের যত্ন সকল তথ্য বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন।

শীতে নবজাতকের যত্ন করণীয় ও পরিচর্যা - শীতে ত্বকের যত্নে ক্রিম

স্কিন ভালো রাখার ক্ষেত্রে শীতের সময় প্রতিদিন গোসল না করে একদিন পরপর গোসল করা ভালো আমাদের শরীরের জন্য। শীতের সময় সাধারণত পুরোপুরি ঠান্ডা পানিতে গোসল না করে কুসুম গরম পানিতে গোসল করা উত্তম। এছাড়া নবজাতকের স্কিন খুব সংবেদনশীল হয়ে থাকে এজন্য শীতকালে শিশুদের ত্বকে বায়টিক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে।

বড়দের ক্ষেত্রে শীতকালে নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এতে ত্বকের রুক্ষ তাকে দূর করার ক্ষমতা রয়েছে। অর্গানিক নাইট ক্রিমে এমন কিছু উপাদান থাকে যা ত্বকের জরুরী ভিটামিন যোগান দেয়। নাইট ক্রিম ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল করে তোলে এছাড়া সকল নাইট ক্রিম সকলের ত্বকের জন্য উপকারী নয়।
নাইট ক্রিম যেগুলো অর্গানিক সেগুলো ত্বকের জন্য ভালো কেমিক্যাল যুক্ত নাইট ক্রিম ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত। নাইট ক্রিম এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কোলাজেন ভিটামিন এবং এমাইনো এসিড যা ত্বকের কোষের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

শীতে চুলের যত্ন - শীতে মুখের ত্বকের যত্ন - শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

শীতের সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষের ত্বক ও চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল এবং বাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন। এই সকল তেলে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ভিটামিন ই যা ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী হিসেবে বিবেচিত। চুলের গোড়া মোটা ও শক্ত করতে এবং উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা শীতের মধ্যে ধরে রাখতে সপ্তাহে অন্তত একদিন এই তেল ব্যবহার করতে পারেন চুলে।

ত্বক কে মোলায়েম রাখার জন্য ত্বকে প্রতিদিন গোসলের পরে ব্যবহার করতে পারেন এই তেল। আমরা অনেক সময় দেখছি স্কাল্পে খুশকি র‍্যাশ বা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। টি ট্রি ব্যবহার করলে স্কাল্পের এই সকল সমস্যা খুব সহজে সমাধান করা সম্ভব। তবে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে এটি একটি অ্যাসেনসিয়াল ওয়েল যার কারণে এটি ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে না কিন্তু নারকেল তেল বা অন্যান্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এটি ব্যবহার করা যাবে ত্বকে।
তবে মনে রাখতে হবে টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে সেটি হল চার টেবিল চামচ নারিকেল তেল বা অন্য যেকোনো অয়েল এর সাথে ৬ থেকে ৮ ফোঁটা টি ট্রি এসেন্সিয়াল অয়েল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যাবে। নারিকেল তেল থেকে পাওয়া অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ এবং টি ট্রি এসেন্সিয়াল অয়েল এর উপাদান একসঙ্গে মিশে চুলকে করে তুলে ঘন মজবুত।

শীতে তত্ত্বের সজীবতা বজায় রাখতে অবশ্যই খাঁটি নারিকেল তেল ব্যবহার করা উত্তম। এছাড়া ঠোঁট ও ত্বক শীতে নরম রাখতে অবশ্যই বাড়িতে তৈরিকৃত মুখে ব্যবহার্য ক্রিমের জুড়ি মেলা ভার। এটি তৈরি করতে সর্বপ্রথম ওটমিল এবং দুধের একসঙ্গে মেশাতে হবে এবং মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে। পাঁচ মিনিট রাখার পরে আলতোভাবে ঘষে শুকিয়ে ফেলতে হবে ত্বকে।

এটি আপনার মুখের মৃত চামড়া দূর করবে পাশাপাশি ত্বককে করবে উজ্জ্বল সুন্দর ও লাবণ্য ময়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে শরীরের ভিতর থেকে ত্বককে সুন্দর করতে হলে শীতের সময় বা অন্যান্য মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে হবে মূলত হলুদ জাতীয় ফল।

শীতে ছেলেদের জন্য কোন ক্রিম সবচেয়ে ভালো -  শীতে ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল

যেকোনো পরিবেশে বাইরে চলাফেরা করলে অবশ্যই ধুলোবালি ত্বকে লাগবে এই ধুলোবালিতে কিছু জীবাণু থাকে যার ফলে ত্বকে ব্রণ কালো দাগ মেছতা সহ নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সকল সমস্যা থেকে দূরে থাকতে হলে ফ্রেশওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ব্যবহৃত অর্গানিক ফেসওয়াস ব্রান্ড হলো হিমালায়া নিম ফেসওয়াশ।

এ ছাড়া শীতে যেহেতু ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় এজন্য ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে মশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। শীতের জন্য ঠান্ডা বাতাসে এমনিতেই ত্বক শুষ্ক ও মলিন হয়ে যেতে শুরু করে এইজন্য অর্গানিক কিছু ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তবে ছেলেদের ত্বকের ক্ষেত্রে বিশেষ করে দুইটি সমস্যা দেখা দেয় সেটা হল তৈলাক্ততা বা শুষ্কতা।

অপরদিকে ত্বক তৈলাক্তত থাকার কারণে মুখের ব্রণ কিংবা ব্ল্যাকহেডের মত সমস্যার সৃষ্টি হয়। শীতকালে ছেলেদের ত্বক ভালো রাখতে এবং উজ্জ্বল করতে অর্গানিক কিছু প্রোডাক্ট রয়েছে যার ব্যবহার করা যেতে পারে। সেগুলোর মধ্যে একটি হল অলিভ অয়েল। এটি ত্বককে করে তোলে সুস্থ সুন্দর ও লাবণ্যময়। ছাড়া এটি ত্বক কোমল ও নরম রাখে কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড।
অপরদিকে মেকাপ রিমুভার হিসাবে খুব ভালো কাজ করে এই অয়েল। ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতেন তার শরীরে দাড়িতে। তিনি বলতেন অলিভ অয়েল নিয়মিত শরীরে ব্যবহার করলে শরীরের নানা ধরনের সমস্যা দূর হয় চুলের পেকে যাওয়া রোধ হয় ত্বক থাকে সুন্দর।

শীতে ত্বকের যত্নে মধু - শীতে শিশুর যত্ন - শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

শীতে তাদের যত্ন নিতে হলে বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে যেমনঃ এক চা চামচ মধুর সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট মুখে মেসেজ করার পর ধুয়ে ফেলতে পারেন। অবশ্যই কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই রেমেডি শীতকালে ব্যবহারে তক হবে লাবণ্যময় এবং মসৃণ।

শীতকালে পরিবেশ শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়  এজন্য তরল জাতীয় খাদ্য এই সময় বেশি খেতে হবে। তরল জাতীয় খাবারের মধ্যে কুসুম গরম দুধ পানি স্যুপফলের রস রাখতে পারেন। এগুলো নিয়মিত খেলে শিশুর ঠান্ডা জনিত যে কোন সমস্যা দূর হবে পাশাপাশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিভিন্ন ধরনের ফল শিশুকে এ সময় বেশি খাওয়াতে হবে তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে শিশুর। শিশুর ত্বকের যত্ন নিতে হলে অর্গানিক খাদ্য খাওয়াতে হবে সেগুলো হলোঃ
  • নারকেল
  • পাকা পেতে
  • এভাকাডো
  • জলপাই ইত্যাদি
ত্বকের জন্য শিশুর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে যেই উপকরণগুলো সেগুলো হলোঃ
  • অ্যালোভেরা 
  • জলপাই তেল 
  • নারিকেল তেল 
  • দুধের সর ইত্যাদি
শিশুদের ক্ষেত্রে বলেন বিশেষজ্ঞরা খাদ্যের মাধ্যমে এমন কিছু পুষ্টি শিশুর শরীরে প্রবেশ করাতে হবে যার মাধ্যমে শিশু ভেতর থেকে সতেজ হয়ে ওঠে এবং তার স্কিন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ।

শীতে গর্ভবতী মায়ের যত্ন - শীতে শুষ্ক ত্বকের যত্ন

শীতকালে গর্ভবতী মায়ের যত্নের ক্ষেত্রে কিছু কিছু খাবার রয়েছে সে খাবারগুলো খাওয়ানোর ফলে ত্বক যেমন সুন্দর হয়ে ওঠে তেমনি মায়ের ইমিউন সিস্টেম সচল থাকে। এমএন সিস্টেম সচল রাখতে অর্গানিক খাদ্য সবচেয়ে বেশি খেতে হবে যেমন শাকসবজি আদা টমেটো আমন্ড  দই রসুন দুধ কালো গোলমরিচ ব্রকলি মাছ ইত্যাদি।

মনে রাখতে হবে খাদ্যের মাধ্যমে অর্জন করা পুষ্টি উপাদান শরীরকে সবচেয়ে বেশি গ্লো করতে সাহায্য করে। এছাড়া শীতের দিনে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে তরল জাতীয় খাদ্য অতিরিক্ত পরিমাণে খেতে হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ফলের রস সুপ ইত্যাদি। শীতকালে ত্বকের যত রাখতে হলে অবশ্যই ময়শ্চারাইজার ইউজ করতে হবে অতিরিক্ত ত্বক শুষ্ক যদি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে বডি লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে ছেলেদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ দেখা যায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে পড়ে এক্ষেত্রে ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে কেমিক্যাল বিহীন ক্রিম মশ্চারাইজার বা বডি লোশন ব্যবহার করার কথা।

শেষ কথাঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় - শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শীতকালে কিভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হয় এ সম্পর্কে বিস্তার আলোচনা করা হয়েছে। সুস্থ রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে তবে সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ হলো খাদ্যের মাধ্যমে তথ্যের সুস্থ রাখা। মনে রাখতে হবে ত্বককে ভেতর থেকে সুস্থ করতে খাদ্যের বিকল্প নেই। আজকে আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুবান্ধব এবং প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন । এছাড়া আরো নতুন নতুন তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url