ইসলামী বিবাহ রীতি - বিবাহের দোয়া

মুসলিম হিসাবে সকলের ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। ইসলামী বিবাহ রীতি অনুযায়ী কোণে ও বরের দুই পরিবারের সম্মতি এবং ছেলে ও মেয়ের উভয়ের সম্মতি প্রয়োজন হয়। মহান আল্লাহতালা ইসলামে বিয়ে করা কে ফরজ করেছেন। তবে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে ইসলামে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়।
ইসলামী বিবাহ রীতি - বিবাহের ১০টি উপকারিতা
ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখা সকল মুসলমানের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কেননা মুসলিম হিসাবে প্রতিটি মানুষের উপর বিয়ে করা ফরজ করা হয়েছে। বিয়ে একটি মুসলিম পুরুষের জীবনে বা নারীর জীবনে সুখ শান্তি সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসে। প্রিয় পাঠক আজ আমরা বিবাহের দশটি উপকারিতা এবং ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে আলোচনা করব। 

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আজকে আলোচনা করা হবে  ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে। একজন মুসলিম হিসেবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই প্রয়োজন কারণ মহান আল্লাহতালা প্রতিটি মানুষের উপর বিয়েকে ফরজ করেছেন। আর বিয়ে করা ইসলামের একটি বড় কার্য সম্পাদনের মধ্যে পড়ে।

আজকে এই পুরো আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করা হবে ইসলামী বিবাহ রীতি , বিবাহের ১০টি উপকারিতা, বিবাহের শর্ত কয়টি , বিবাহের দোয়া এবং  দাম্পত্য জীবন সুখী করার ইসলামিক উপায় ইত্যাদি সকল বিষয় এ।

বিবাহের প্রকৃত বয়স কত জেনে নিন - ইসলামী বিবাহ রীতি

আমাদের পাঠকরা অনেকেই জানতে চান বিবাহের প্রকৃতি বয়স কত? এ বিষয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে ২৮ থেকে ৩২ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে করা সর্বোত্তম কারণ এই সময়ের মধ্যে বিয়ে করলে বিবাহিত জীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়। অপরদিকে ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী যৌবনে পদার্পণ করার পরে নারী ও পুরুষ উভয়কে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ। 
বাংলাদেশে আইন অনুযায়ী মেয়েরা ১৮ বছর এবং ছেলেরা ২২ বছর বয়সে বিয়ে করতে পারবে। বিশেষজ্ঞদের মতে ২০ বছরের পর বিবাহের বিচ্ছেদ কমতে থাকে আবার এই আশঙ্কা বাড়তে থাকে ৩০ বছরএর পর থেকে। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী বিয়ে করতে হলে বর , কনে , কনের অভিভাবক এর সম্মতির প্রয়োজন হয়ে থাকে। 

ইসলামিক বৈবাহিক চুক্তি হয়ে থাকে কনের পরিবার এবং বরের মধ্যে। ইসলামী শরীয়তে কনের বাবাকে ওয়ালী হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে যদি বাবা না থাকে বা মারা গিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে নিকটস্থ পুরুষকে কনের ওয়ালী হিসাবে গণ্য করা হবে।

বিবাহের শর্ত কয়টি - বিবাহের ১০টি উপকারিতা

বিবাহের শর্ত অনেকগুলো রয়েছে তবে বিবাহর ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কনের অভিভাবক। কনের অভিভাবক হওয়ার শর্তগুলো হলঃ
  • মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে
  • বয়সে ভারত্ব থাকতে হবে বা প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে
  • কোন মনিবের দাস হওয়া যাবেনা
  • কনে যে ধর্মের অনুসারী অভিভাবককে সেই ধর্মের অনুসারী হতে হবে।
বিবাহের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। বিবাহের ১০টি উপকারিতা হলোঃ
  • সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকা
  • একে অপরের পরিপূরক হিসেবে জীবন যাপন করা
  • দুইজনার সম্মিলিতভাবে সন্তানের সঠিক যত্ন নেওয়া
  • বাইরের খারাপ খাদ্যভ্যাস পরিত্যাগ করা
  • আর্থিকভাবে সমৃদ্ধি লাভ করা
  • স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হওয়া
  • একে অপরের সাহায্যে ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া
  • বিবাহের মাধ্যমে যৌনজীবনে রোগের ঝুঁকি কমে
  • একে অপরের নিঃস্বার্থভাবে দেখাশোনা করার একজন মানুষ তৈরি হওয়া
  • দীর্ঘস্থায়ী জীবন যাপন করা

বর্ণনাঃ
সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকা

ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী কারো সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জীবনযাপন করা একটি মহৎগুণ। বর্তমান সময়ের উপর ভিত্তি করে কোন মানুষের কাছ থেকে যত্ন বিপদে সাহায্য পাওয়া পুরস্কার পাওয়ার মতই বিরল একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী বিয়ে করার মাধ্যমে মানুষ সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সুখী পরিবার প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও অনেক প্রশংসা পেয়ে থাকেন।

অপরের পরিপূরক হিসেবে জীবন যাপন করা

মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন বিবাহের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের উভয়ের রিজিকের দরজা খুলে দিয় আমি নিজে। বিবাহর মাধ্যমে যেহেতু বিভিন্ন ভাবে আর্থিক স্বচ্ছলতা সৃষ্টি হয়। সে ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে থাকে। বাড়ি থেকে শুরু করে শিক্ষাব্যবস্থা খাবার সবকিছুতেই মহান আল্লাহতালা বিবাহিতদের বরকত দিয়েছেন।

দুইজনার সম্মিলিতভাবে সন্তানের সঠিক যত্ন নেওয়া

শিশুর জন্মের পর থেকে বাচ্চাকে লালন পালন থেকে শুরু করে শিশুদের যত্ন নেওয়া কখনোই একজনের পক্ষে করা সম্ভব হয় না। যে পরিবারে মা-বাবা দুইজন ভাগাভাগি করে নিয়ে শিশুর যত্ন করে খেয়াল রাখে সেই পরিবারের সন্তান দের বড় হওয়ার এবং যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক উদাহরণ রাখে বাবা-মা।

যখন স্বামী-স্ত্রী দুইজনে সম্মিলিতভাবে শিশুর দেখাশোনা করে তখন অনেক ধরনের কঠিন কাজও সহজ হয়ে ওঠে।

বাইরের খারাপ খাদ্য অভ্যাস পরিত্যাগ করা

বেশিরভাগ বিবাহিত পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায় বিবাহের পর দায়িত্ববোধ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে মদ্যপান ড্রাগ সহ বিভিন্ন ধরনের খারাপ নেশা থেকে সহজেই পরিত্রাণ পেয়ে থাকে। অনেক পুরুষ আছে যারা দাম্পত্য জীবন ও সন্তানের কথা চিন্তা করে ধূমপান ও মারাত্মক বিভিন্ন অভ্যাস ছেড়ে দিয়েছেন।

আর্থিকভাবে সমৃদ্ধি লাভ করা

একটি রিসার্চে দেখা গেছে বিবাহিত দম্পতিদের তুলনায় অবিবাহিত ব্যক্তিরা কম টাকা খরচ করে। তবে দম্পতিরা একত্রে অর্থ উপার্জন করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমৃদ্ধি লাভ করে। আর্থিক উন্নতির জন্য হলেও পুরুষ ও মহিলা সকলেরই বিবাহ করা উচিত। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী বিবাহের মধ্যে এক বিশেষ প্রশান্তি রয়েছে।

যদিও অবিবাহিতরা কম অর্থ দিয়ে তাদের জীবনধারণ করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অবিবাহিতদের মধ্যে ভালো কাজ ও বেশি উপার্জন করার লক্ষ্য অনেকটা কম থাকে। অন্যদিকে বিবাহিতরা স্ত্রী সন্তানের জন্য ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আর্থিকভাবে উন্নতি করার চেষ্টা করেন। মহান আল্লাহতালা বলেছেন যারা চেষ্টা করবে তারা একদিন না একদিন সফলতা পাবে।

স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হওয়া

বিবাহিত নারী পুরুষ উভয়ই মানসিক আবেগগতভাবে ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে থাকে। কারণ তারা একে অপরের পছন্দ প্রয়োজন এবং একে অপরের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে যত্ন নিতে পারেন। জীবন যাপনের জন্য একজন পুরুষ ও নারীর উভয়েরই এই যত্ন খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে এই যত্নের মাধ্যমে পুরুষের হৃদপিন্ডের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে থাকে।

গবেষকদের মতে এই সকল কারণেই বিবাহিতদের তুলনায় অবিবাহিতদের হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোক ও বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি বেশি হয়ে থাকে।

একে অপরের সাহায্যে ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া

বিবাহের কারণে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন দম্পতিরা। বিশেষজ্ঞদের মতে স্বাস্থ্যগত বিষয়ে নারীরা বেশি সুবিধা ভোগ করে থাকেন। বিবাহের মাধ্যমে মেয়েরা যৌন জীবনে তাদের সন্তুষ্টি ও সুখের একটি সম্পূর্ণ অনুভূতি অনুভব করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই অনুভূতিগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

মেয়েদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ তৃপ্তি পাওয়ার মাধ্যমে তারা দাম্পত্য জীবনের চরম সুখ অনুভব করে।

বিবাহর মাধ্যমে যৌনজীবনে রোগের ঝুঁকি কমে
বিবাহিত দম্পতিদের ক্ষেত্রে একে অপরের প্রতি ভালবাসা ও বিশ্বাসের জন্য তারা যৌন সুখ উপভোগ করতে সক্ষম হন। যার কারণে তাদের নতুন করে যৌনসঙ্গী খুঁজে বের করার প্রয়োজন পড়ে না এবং এর ফলে যৌনজীবনে বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি থাকে না।

তবে এই নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে যে সকল দম্পতিরা যৌনকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে বা একাধিক মানুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় তাদের যৌন সম্পর্কিত বিভিন্ন মারাত্মক রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

একে অপরের নিঃস্বার্থভাবে দেখাশোনা করার একজন মানুষ তৈরি হওয়া

বিশেষজ্ঞদের একটি পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে বিবাহিত নারী ও পুরুষ সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যবান। দম্পতিরা তাদের পরিবারের প্রতি দায়িত্ব অনুভব করে সকল খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে এবং নিজের ও নিজের প্রিয়তমার ও সন্তানদের যত্ন নেওয়া শুরু করে। যার ফলে সকলের স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে এবং দীর্ঘজীবী হয় সকলে।
অপরদিকে একটি রিসার্চ দেখা গেছে নিজের সঙ্গির সাথে সম্পূর্ণ তৃপ্তি যুক্ত শারীরিক মিলন একদিনের পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যায়াম করার সমান।

দীর্ঘস্থায়ী জীবন যাপন করা

একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে বিবাহিত দের তুলনায় অবিবাহিতদের অল্প বয়সে মৃত্যুর হার প্রায় দ্বিগুণ। কারণ একজন দম্পতি প্রয়োজনে একে অপরের যত্ন নিয়ে ভালো জীবনযাপন করতে সহায়তা করতে পারে। কিন্তু অবিবাহিত পুরুষ বা মহিলারা সেই যত্ন পান না। এইজন্য বিবাহিতরা নিজের যত্ন সম্পূর্ণরূপে নেওয়ার জন্য দম্পতির প্রতি দায়িত্ববোধ এবং বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন।

বিবাহের দোয়া - ইসলামী বিবাহ রীতি

যে সকল যুবক-যুবতীদের বিবাহের সময় অতিক্রম হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না সে সকল যুবকরা ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি এবং যুবতীরা বাম হাত দিয়ে ডান হাতের কব্জি  চেপে ধরে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে এবং সূর্য উদয়ের আগে ৪০ বার করে ইয়া ফাত্তাহু করবে। এইভাবে 40 দিন পর্যন্ত নিয়ম মেনে দোয়াটি পাঠ করতে হবে।

অবশ্যই মনে রাখতে হবে এই দোয়া একদিন বাদ পড়লে পুনরায় প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। এই দোয়াটির অর্থ হলো হে উন্মুক্তকারী। বিশিষ্ট আলেমদের মতে নিয়মিত নামাজ পড়ার পরে তাজবিহে ফাতেমি পড়লে দ্রুত বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তবে তাজবি হে ফাতেমি পড়ার পূর্বে কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত ও দরুদ শরীফ পাঠ করে নেওয়া সর্বোত্তম।

এক্ষেত্রে আপনি যেকোনো দুরুদ শরীফ পাঠ করতে পারেন। যেমনঃ আলহামদুলিল্লাহ। সুরার ক্ষেত্রে তেলাওয়াত করতে পারেন সূরা তাওবার নিচে উল্লেখিত আয়াতটিঃ 

فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ 

উচ্চারণঃ ফাইং তাওয়াল্লাও ফাকুল হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম। 

যাদের বিয়ে হয়ে গেছে তারা বৈবাহিক জীবন বরকতময় করে তোলার জন্য পড়বেন 

بَارَكَ اللهُ لَكَ وَ بَارَكَ عَلَيْكَ وَ جَمَعَ بَيْنَكُمَا فِيْ خَيْرٍ 

উচ্চারণঃ বারাকাল্লাহু লাকা, ওয়া বারাকা আলাইকা, ওয়া জামাআ বাইনাকুমা ফি খাইরিন অর্থঃ হে মহান আল্লাহতালা আমাদের বরকত দান করুন আমাদের উভয়ের প্রতি বরকত নাযিল করুন এবং আমাদের কল্যাণের সঙ্গে একত্রে রাখুন পুরো জীবন।
ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী বিবাহের জন্য বর কনে এবং কনের অভিভাবক এর সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। ইসলামী বিবাহের চুক্তি হবে কনের অভিভাবক এবং বরের মধ্যে।

বিবাহের শর্ত কয়টি - বিবাহ সম্পর্কে ইসলামিক উক্তি

ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী বিবাহ বিশুদ্ধ হওয়ার বিভিন্ন ধরনের শর্ত রয়েছে শর্তগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ বিবাহের সর্বপ্রথম শর্ত হলো বর ও কনের একে অপরকে পছন্দ করা। ইসলামী শরীয়ত বলে বিবাহের আগে অবশ্যই বর ও কোণের দুইজন দুইজনার এমন কিছু আচরণ কথা বা হাসির উপর মুগ্ধ হতে হবে যা পরবর্তীতে বাকিটা জীবন পথ চলাতে সাহায্য করবে।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন স্বামী হীনা নারীকে কখনোই তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বিবাহে বসানো যাবে না। অপরদিকে কুমারী মেয়েদের কেউ তার সঠিক সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না। বিশ্ব নবীকে অনেক মহিলা জিজ্ঞাসা করলেন তাহলে কিভাবে আমরা সম্মতি প্রকাশ করব বিশ্ব নবী এর উত্তরে বলেন চুপ থাকা সম্মতির লক্ষণ।বুখারী মুসলিম এর হাদিস নম্বর ৪৭৪১।

বিবাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মৌলিক বিষয় হল কাবিননামা যা প্রতিটি মুসলিম পুরুষের দেওয়া বাধ্যতামূলক। বিবাহের পর কাবিননামা স্ত্রীকে পরিশোধ না করা পর্যন্ত কখনোই স্ত্রীকে স্পর্শ করা যাবে না। কাবিননামা সম্পূর্ণরূপে পরিষদ না করে যদি স্ত্রীকে স্পর্শ করা যায় তাহলে এটি হারাম হিসেবে গণ্য হবে।

এই জন্য মুসলিমরা বিবাহ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কাবিননামার দিকে লক্ষ্য রাখবেন। অনেকেই আছেন যারা অনেক বেশি টাকা কাবিননামা রেখে বিয়ের প্রথম রাতেই স্ত্রীর কাছে কাবিননামার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেয় ইসলাম এটি স্বীকৃতি দেয় না। প্রতিটি মুসলমানের উচিত ইসলামের নিয়ম যথাযথ পালন করা তাহলে দাম্পত্য জীবন সুখময় হবে। কাবিননামা হল স্ত্রীর হক যা প্রতিটি বিবাহিত পুরুষের আদায় করা উচিত। কাবিন নামার উপর শুধুমাত্র অধিকার থাকে একজন স্ত্রীর।

জীবনসঙ্গী নিয়ে ইসলামিক উক্তি - দাম্পত্য জীবন সুখী করার ইসলামিক উপায়

মানব জীবনের একটি অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বিয়ে। বিয়ে মানব জীবনের সুরক্ষা সুষ্ঠু জীবন যাপন পরিবার গঠন ও সামাজিক জীবন যাপনের শান্তি সুশৃঙ্খলতা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সমাজ গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পরিবার। এছাড়া বিয়ে এর মাধ্যমে পরিবারের ভিত্তি স্থাপন হয়।

অপরদিকে জীবনের শৃঙ্খলা ব্যক্তির মানসিক দৈহিক সুস্বাস্থ্য ধৈর্য সহনশীলতা সুস্বাস্থ্য তৈরি করতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে বিয়ে। ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী সামাজিক ও ইসলামিক বিধানগুলোর অন্যতম বিধান হলো বিয়ে। ইসলামে বিয়েকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক নিয়মের কারণে নারীদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বিয়ের জন্য।
একটি সুস্পষ্ট হাদিস থেকে এসেছে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত প্রতিটি মানুষের প্রকৃতি পছন্দ রুচি এবং ব্যবহার আলাদা আলাদা হয়ে থাকে একজন স্ত্রী জানেন তার স্বামীকে কিভাবে সম্পূর্ণ তৃপ্ত ও সন্তুষ্ট করতে হয়। তাই তিনি ঠিক করেন কিভাবে তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করবেন বা ভালবাসবেন। এটা কোন ধরনের জ্ঞানী মনীষীদের জানা সম্ভব নয়।

শেষ কথাঃ ইসলামী বিবাহ রীতি - বিবাহের ১০ টি উপকারিতা

আশা করি ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে যথাযথ ধারণা প্রদর্শন করতে পেরেছি। আপনারা যারা ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য উপরের পোস্ট টি লেখা হয়েছে। এছাড়া  ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

ইসলামী বিবাহ রীতি সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে সেই প্রশ্ন করতে পারেন।আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন এবং নতুন আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url