ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি
আজকের এই আর্টিকেলে থাকছে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি এই সম্পর্কে। মুসলমান হিসেবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল সবারই জানা উচিত। এছাড়াও আজকের এই আর্টিকেলে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল নিয়ে আলোচনা করবো। তাই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি এই সম্পর্কে জানতে পোস্টটি টেনে টেনে না পড়ে সম্পূর্ন পড়ুন।
আপনারা যদি আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকেন তাহলে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল -
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন কথা না
বাড়িয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি তা জেনে
নিই।
পেইজ সূচিপত্রঃঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি
ঈদে মিলাদুন্নবী নামাজ - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল
১২ই রবিউল আউয়াল আমাদের শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর জন্মদিন উপলক্ষে ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হয়। যখন আরবে আইয়ামে
জাহেলিয়া যুগ চলছিল, অসভ্যতা, বর্বরতা, নিসংসতা চলছিল ঠিক সেই সময়ে আমাদের
হযরত মোহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম হয়।
সেই অসভ্যতা বর্বরতা অশ্লীলতার যুগকে দূর করতে, মানুষদের সঠিক পথে পরিচালনা
করতে আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করেন।
এই খুশিতে নবীজির জন্মদিন উপলক্ষে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা হয়ে থাকে।
ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন নামাজ পড়তে হবে এটা আল্লাহ তাআলা ফরজ করে দেননি।
যেহেতু এই দিনে আমাদের হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেটি একটি
উত্তম ও পবিত্র দিন। এই দিনে নামাজ পড়লে, আমল করলে আল্লাহ তাআলা খুশি হয়ে
নামাজ, আমল কবুল করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সেই কারণে এই দিনে বেশি বেশি নফল নামাজ ও নফল ইবাদত করা উত্তম। এই দিনে আপনি
দুই রাকাত করে যত পারেন ততো নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। নবীর প্রতি দরুদ ও
সালাম পাঠ করতে পারেন। বেশী বেশী দরুদ ও দোয়া পাঠ করতে পারেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল হচ্ছে ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন বেশি বেশি নফল
নামাজের সাথে দরুদ ও দোয়া, সালাম পাঠ করতে পারেন এবং বেশি বেশি কুরআন
তেলাওয়াত করতে পারেন। যেহেতু এটি একটি পবিত্র ও উত্তম দিন কারণ এই দিনে
আল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেহেতু আপনার ইবাদতগুলো কবুল
হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
এই জন্য এই দিনে বেশি বেশি নামাজ পড়ুন এবং আমল করতে থাকুন। এতে আপনার ইহকালে
শান্তি পরকালে জান্নাত লাভের সহায়তা করবে। তাই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার
আমলগুলো অবশ্যই পালন করবেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল হচ্ছে ঐদিন হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জন্মদিন
উপলক্ষে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন তাতে করে আল্লাহ তা আলা আপনার
উপর খুশি হবেন। এছাড়াও বেশী বেশী দরুদ পাঠ করবেন, নবীজির প্রতি বেশি বেশি
সালাম পাঠ করবেন।
আশা করি এই সেকশনটি পাঠ করার পরে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল এবং ঈদে
মিলাদুন্নবী নামাজ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল তো
জানলেন এবার চলুন ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে
উক্তি দেখে নিই।
ঈদে মিলাদ্দুনবী নিয়ে উক্তি - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মের পর আরব ছিল অন্ধকার
যুগে। সেখানে শুধু বর্বরতা নিসংসতা খুনাখুনি অশালীনতা চলত।মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্মের পর আরবকে অন্ধকার যুগ থেকে বের করে
নিয়ে আসে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এসব
কৃতিত্বের জন্য অনেকে অনেক উক্তি রেখে গেছেন।
- আরবের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন তা নয় বরং এযাবৎ মানব ইতিহাসের যত মানুষের জন্ম হয়েছে তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মানব একমাত্র তিনি ছিলেন। (এ জি লিওনার্দ)
- চরিত্র গঠন ও সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম যে সাফল্য লাভ করেছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মানবতার মহা দরদী বলে বিশ্বাস করতে হয় । (অ্যাডওয়ার্ড মুদন্ট)
- হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চিন্তাধারা ছিল অতি পবিত্র এবং চরিত্র ছিল অসম্ভব উন্নত । তিনি ছিলেন কর্ম তৎপর সংস্কারক । যাকে মহান আল্লাহ মানুষকে হেদায়েতের জন্য নিযুক্ত করেছেন । তার বাণী তো আল্লাহ তাআলারই বাণী ।তিনি অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সত্যের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন । (স কার্লাইল)
- মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানবজাতির পথ প্রদর্শক ও মুক্তিদাতা । বিশ্বের শাসন ও একনায়ত্ব যদি আজ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মত কামেল পুরুষের হাতে সোপর্দ করা হয় । তবে এই পৃথিবী যাবতীয় সমস্যার সমাধান থেকে মুক্তি পেয়ে যেত । এবং গোটা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা দোলনায় পরিণত হতো । (জর্জ বার্নার্ড শ)
- ইসলামের সেই উম্মি নবীর ইতিবৃত্ত বড় আশ্চর্যজনক । বর্তমানে তিনি কবরের অবস্থান করেও কোটি কোটি মানুষকে ইসলামের কালেমার উপর অটল রেখেছেন । (ড. গেসটাউলি)
- বস্তুত পক্ষে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আনীত শরীয়ত সর্বলোকের জন্য প্রযোজ্য । এই শরীয়ত এমন বুদ্ধিবৃত্তিক মূলনীতি ও এ ধরনের আইনগত ভিত্তিতে রচিত যে সমগ্র বিশ্বের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না । ( ড. গিবন)
ঈদে মিলাদুন্নবী কি ও কেন - ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদাত
হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলিহি ওয়া সাল্লাম যখন জন্ম গ্রহণ করেন তখন আরবের
অবস্থা ছিল করুন। আরব বাসীরা ছিল তখন বর্বর অসভ্য জাতি, পাপ কাযে লিপ্ত থাকতো
সবসময়। কন্যা সন্তান হলে তারা জীবিত মেরে ফেলত। ঐ যুগকে বলা হত আইয়ামে
জাহেলিয়া যুগ অর্থাৎ অন্ধকারের যুগ।
আল্লাহ তাআলা সেইসময়ে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
প্রেরণ করেন যেন আরবের অন্ধকার দূর করতে পারে। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণের পর তার ওপর ইসলাম ধর্ম মনোনীত করেন।
তখন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলাম ধর্মের বাণী প্রচার
করতে শুরু করে এবং আরবের সেই অন্ধকার যুগ কে আলোর পথে নিয়ে আসেন। এজন্য
মুসলিম ইতিহাসে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা
রয়েছে।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম মানবজাতির রহমত
স্বরূপ। মুসলমানদের কাছে এই দিনটি খুশির দিন। এইজন্য মুসলমানরা নবিজীর এই
জন্মদিনকে স্মরন করে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে এবং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন
করার আমলগুলো মেনে চলে।
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২২ কত তারিখ - ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে আলোচনা
প্রতিবছর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মদিন স্মরণ
করে মুসলমানরা আনন্দে খুশিতে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে থাকেন। কারণ
মুসলমানদের নয়নের মনি ও ভালবাসার কান্ডারী হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
জন্মদিনে মুসলমানরা অত্যন্ত খুশি হয়ে এই দিনটি পালন করে থাকেন।
প্রতিবছরের ন্যায় ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২২ সালেও পালিত হবে। ঈদে মিলাদুন্নবী
আসলে আমাদের সবার একটি কমন প্রশ্ন থাকে সেটি হচ্ছে ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২২ কত
তারিখ এ। ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর পালিত হবে। অর্থাৎ ২০২২ সালে
ঈদে মিলাদুন্নবী হচ্ছে অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে।
ঈদে মিলাদুন্নবী দলিল - ঈদে মিলাদুন্নবীর ফজিলত
ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে অনেকে অনেক মতামত দেয়। কোন কোন মাওলানা বলেন ঈদে
মিলাদুন্নবী পালন বিদাত আবার এখনো কেন মাওলানা বলেন ঈদে
মিলাদুন্নবী পালন জায়েজ। যদি ঈদে মিলাদুন্নবী জায়েজ হয়ে থাকে তাহলে এর
কিছু দলিল দেখে নিন-
আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দিয়েছেন “আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত প্রাপ্তিতে খুশি পালন কর
যা তোমাদের সমস্ত ধন দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়। - (সূরা ইউনুস-৫৮)
এবং সূরা বাকারার একটি আয়াত হচ্ছে “স্মরণ কর আল্লাহর নিয়ামতকে যা তোমাদের
উপর অবতীর্ণ হয়েছে” -(সূরা বাক্বারা-২৩১)।
নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জন্ম মানব জাতির উপর আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত।
সেজন্য তার জন্মদিন উপলক্ষে মুসলিম জাতির খুশি হয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করবে
এটাই স্বাভাবিক। তারপরেও অনেকে অনেক মতবাদ দিয়ে থাকেন এক্ষেত্রে আমার মতামত
হচ্ছে আপনি যদি নিজে কুরআন পড়া জানে তাহলে সেখান থেকে নিজ জ্ঞানে বুঝে নিবেন
কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক মুসলিম মুসলিমের সাথে দ্বন্দ্ব বিতর্ক মারামারি জানানো
হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবীর অবশ্যই অনেক অনেক ফজিলত রয়েছে। এই দিনে আমাদের প্রিয় নবী হযরত
মুহাম্মদ সাঃ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেহেতু এই দিনে যদি বেশি বেশি আমল করা যায়
তাহলে আল্লাহ তায়ালা অনেক খুশি হয়ে আমলগুলো কবুল করে নিতে পারেন এবং সেই আমলের
উসিলায় আপনাকে জান্নাত দিয়ে দিতে পারেন।তাই বলা যায় ঈদে মিলাদুন্নবীর অনেক অনেক
ফজিলত রয়েছে।
শেষ কথা,
এই পোস্টটি পড়ে আপনি ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার আমল এবং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন
করা কি, ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে উক্তিসহ ঈদে মিলাদুন্নবীর ফজিলত সম্পর্কে
জানতে পেরেছেন।আশা করি এই তথ্যগুলো আপনাকে অনেক সহায়তা করবে এবং জ্ঞান
দিবে। এ ধরনের তথ্য বহুল পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি অবশ্যই ফলো করবেন
,ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url